Ads

আমরা বাঙালিরা কি মানসিক রোগী ?

।। তারিক হক ।।

 

আমার ছেলের বৌ শিশু মনোবিদ । জার্মানির ডুসেলডর্ফ শহরে বিরাট চেম্বার । সবসময়ই ভীড় । আমি যেহেতু “হিউমান সাইকোলজি ” নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকি , ও মাঝে মাঝে ওর চমকপ্রদ অভিজ্ঞতা আমাকে বলে ।আজকে যেটা বললো তা অবিশ্বাস্য । 

 

বাবা-মা আর ছোট ছেলে এসেছে ওর চেম্বারে । মা বললেন , আমার ছেলে বাবাকে খুব ভয় পায়, সেইজন্যে এসেছি ।
আমার পুত্রবধূ জিজ্ঞেস করলো , এটা কি অনেকদিন আগে থেকে হয়েছে, না সম্প্রতি ? বাবা কাঁচুমাঁচু মুখে বসে আছেন ।
মা বললেন , আমার স্বামী যখন থেকে নিজেকে মহিলা ভাবতে শুরু করেছে ,মেয়েলি অন্তর্বাস পরছে আর ছেলেকে জড়িয়ে ধরে বলছে, “আমি তোমার মা “, তখন থেকেই ।
জার্মানদের অনেক বিকৃত রুচির কথা শুনেছি কিন্তু এটা সবকিছুকে হার মানিয়ে দিলো । আমি আমার ছেলের বৌকে জিজ্ঞেস করলাম , তুমি এখন কি করবে ?
– আগে ছেলের বাবার চিকিৎসা করবো ।
একটুু হেসে আমি ইন্টারনেটে বাংলা পত্রিকা পড়া শুরু করলাম । “চলন্ত বাসে তরুণীকে ধর্ষণ ” ।
যে আমি কিছুক্ষণ আগে জার্মানদের “বিকৃত মস্তিষ্ক ” বলে গালি দিচ্ছিলাম, সেটা বুমেরাং হয়ে নিজের উপর পড়লো ।
কি হলো আমাদের বাঙালিদের ? আমরা কি সত্যি মানসিক রোগী ?

 

কানে বাজলো তনুর দীর্ঘশ্বাস, খাদিজার আর্তচিৎকার আর রূপার বাঙালি সমাজের প্রতি অভিশাপ ; যে সমাজ তার মা-বোনকে রক্ষা করতে পারেনা হিংস্র সরীসৃপের ছোবল থেকে ।
যারা ক্রিকেটে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জিতে ফেইসবুকে স্ট্যাটাস দেন তাদের তো লজ্জা হওয়া উচিত । আপনারাতো নিজের মা-বোনকেও বাঁচাতে পারেন না হায়েনার হাত থেকে ।
সবচেয়ে লজ্জার কথা হলো দেশের দুইজন নেত্রী , দুজনেই নারী !!!

 

স্বাধীনতার সময় আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থ বিজ্ঞানে পড়তাম । তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো নাম ছিল যে বিদেশ থেকে ছাত্র-ছাত্রীরা পড়তে আসতো ।
দেশের এতো উন্নতি হয়েছে যে , যে সিঙ্গাপুরিরা আমাদের এখানে মুচির কাজ করতো, চিকিৎসার জন্যে তাদের ওখানে আমরা যাই । যে মালয়শিয়ানরা আমাদের এখানে কাজ খুঁজতো , তাদের কাছে আমরা কাজ খুঁজি ।

 

শুনেছি কোন এক বিশ্ববিদ্যালয়ে এক ছেলে “রেপ” এর শততম মহোৎসব পালন করেছে , তার বন্ধুবান্ধবরা তা ফলাও করে প্রচার করেছে , এটা কি মানসিক বিকৃতির পরিচয় নয় ?
কেন আমরা মানববন্ধন না করে এদেরকে সাথে সাথে ফাঁসিতে ঝুলাই না ?
টিভিতে বাংলাদেশের তথাকথিত “বুদ্ধিমান” ব্যক্তিদের আলোচনা দেখে আমি হাসি ।
কথার ফাঁকে ফাঁকে ইংরেজি কপচান , আপনারা তো ঠিক মতো বাংলাও বলতে পারেন না , এতো বড়ো বড়ো কথা বলার দুঃসাহস কোথা থেকে আসে দেশে যখন আইন নীরবে নিভৃতে কাঁদে ।
“রেপ” মানে কি সমাজ তখনি বুঝবে, যখন নিজের কিশোরী মেয়ে রক্তাত্ত অবস্থায় বাসায় এসে বলবে, “বাবা, আজকে আমাকে বাসে গ্যাংরেইপ করেছে ” ।

 

আমার মা-বোনদের আমি বলবো নিজের রক্ষার ভার নিজের হাতে তুলে নিন । আত্মরক্ষার সরঞ্জাম যেন আপনার নিত্য সঙ্গী হয় । সমাজ থেকে নির্মূল করে দিন এই জানোয়ারদের ।
ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড ।

 

লেখকঃ প্রবাসী মোটিভেশনাল লেখক, জার্মানি

 

( বই পোকায় পূর্ব প্রকাশিত )

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সমাজ,পরিবার ও আত্মউন্নয়ন মূলক অসাধারণ লেখা ও আর্টিকেল পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi এ লাইক দিন।

এবং প্রিয় লেখক ! আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected]

প্রিয় লেখক ও পাঠক আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম এ যুক্ত হয়ে আমাদের সাথেই থাকুন ।

 

আরও পড়ুন