।। শহীদ সিরাজী ।।
জার্মানির আজ জুমাবার। মসজিদে গিয়ে জুমার নামাজ আদায় করবো, ভাবতেই মনের অলিগলিটা খুশিতে ভেনিশ হয়ে উঠলো। একটু বেশিই হাসিখুশির আবহ। জার্মানিতে এসেছি, সৌভাগ্য বটে; তবে দুর্ভাগ্য যে মসজিদে নামাজ পড়তে পারিনি। না, ঈমানের দুর্বলতার কারণে নয়। থাকছি মসজিদ থেকে বেশ দূরে! অনেকটা ঢাকা থেকে রংপুরে। এ দেশটা তো আমাদের দেশের মত নয় যে দূর বলে পাবো তিন চাক্কার হেলিকপ্টার। যাবো রিক্সা বা ভ্যান চড়ে । এসবের ছিটেফোঁটাও নেই। বাসে যাওয়ার ঝামেলাও একাকিনী রমনীর মত। সাথী ছাড়া পা ফেলা লাঠি ছাড়া অন্ধের আগস্ত যাত্রার চেয়ে কোন অংশে কম নয়। এসব নিয়ে নিজের সাথে দ্বন্দ্বের মধ্যে আছি। তা বলে কোন মগের মুল্লুকও নয় যে বিপদাপদের ডর করছি। আল্লাহর উপর ভরসা আছে ষোলআনা; তবে পথ চলার ব্যাকরণ বুঝে উঠতে একটু সময় লাগছে বলেই এতো কথকতা।
অবশ্য জার্মানির পথঘাট যেমন অচেনা তেমন এখানকার মুসলিম কমিউনিটি সম্পর্কে ধারণাও অজানা। এ কারণেই তো এখানে আসা, ঘোরাফেরা! ‘সিরু ফিল আরদ’। জার্মানিতে আসলাম, এখানকার মুসলমান ও ইসলাম সম্পর্কে জানবো না তা তো হয় না। এসব নিয়ে জানবার বিস্তর প্রয়োজন রয়েছে।
জার্মানিতে প্রথম মসজিদ
জার্মানির মসজিদ নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখলাম জার্মানির প্রথম মসজিদ নির্মাণ হয়েছিল প্রায় ১০৪ বছর আগে। বার্লিন থেকে ৪০ কিলোমিটার দক্ষিণে উইনসফোর্ড অঞ্চলে। করা হয়েছিল ১৯১৫ সালের জুলাই মাসে। মুসলিম বন্দি যোদ্ধাদের জন্যেই নির্মাণ করা হয়েছিল এটি। তা বললে এটা তাদের কোন বদান্যতা ছিল না।
নির্মাণের ইতিহাস
মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনাটিও ছিল বেশ আকর্ষণীয়। উদ্দেশ্য যুদ্ধে মুসলমানদের ব্যবহার করা। বলা যায় গিনিপিগ। আর বাই প্রোডাক্ট হিসাবে তাদের এটি নির্মাণ করতে হয়েছিল। ঘটনার বিবরণে প্রকাশ; যুদ্ধাপরাধীদের জন্য সেখানে ক্যাম্প করেছিল তারা। পরে এসেছিল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা।
তখন জানা গিয়েছিল, তুরস্কের পঞ্চম সুলতান মুহাম্মাদ জার্মানিতে মুসলিম বন্দীদের জন্য মসজিদ নির্মাণ করতে প্রস্তুত আছেন। তো হাতছাড়া করার মত ওরা বেকুফ ছিল না।প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর ভারত, উত্তর আফ্রিকা ও সিরিয়ার প্রায় ৪ হাজার বন্দি এবং ফরাসি ঔপনিবেশিক দেশগুলো থেকে ১২ হাজার বন্দিকে ওয়েসেনডর্ফ ক্যাম্পে রাখা হয়েছিল। তাদের কিভাবে কাজে লাগানো যায়?
জার্মানরা চেয়েছিল মুসলিম সৈন্যদের মিত্রশক্তির (ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং রাশিয়া) বিরুদ্ধে কাজে লাগাতে। এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে তারা তখন মুসলমানদের জন্য ক্যাম্প ও মসজিদ নির্মাণ করেছিল। কোন বদন্যতা নয় বরং ‘নিজের নাক কেটে পরে যাত্রা ভঙ্গ করা’র মতো ব্যাপার। দেশের সামরিক মন্ত্রণালয় ১৯১৫ সালে এ মসজিদ নির্মাণের আদেশ দেয়। ৫ সপ্তাহের মধ্যে ১৫০০ ‘রিচ মার্ক’ ব্যয়ে (তৎকালীন জার্মান মুদ্রা) সেটি নির্মাণ করা হয়। মসজিদের কেন্দ্রীয় ভবনে চারদিক থেকেই যাতায়াত করা যেতো। গম্বুজবিশিষ্ট এই ভবনে নামাজের জন্য বিশেষ একটি কক্ষও নির্মাণ করা হয়।
এছাড়াও ভবনের দক্ষিণে প্রবেশদ্বার রাখা হয়। উত্তরে খতিবের জন্য আলাদা কক্ষ এবং মৃতদের রাখার জন্য পৃথক কক্ষ নির্মাণ করা হয়। ভবনের উত্তর দিকে বর্গাকারে একটি প্রাঙ্গণ নির্মাণ করা হয়। সেখানে একটি জলাধারও তৈরি করা হয়। মসজিদের বাইরের ও অভ্যন্তরের প্রাচীরে তেল রং ব্যবহার করা হয়। দেয়ালের রং ছিল ধূসর। উপরে লাল এবং ধূসর ফিতা আঁকা ছিল। নামাজঘরের মেঝের জন্য পাথর ব্যবহার করা হয় এবং মাদুর দিয়ে মেঝে ঢেকে দেওয়া হয়।
মসজিদের মিনার ছিল ২৩ মিটার উচ্চ। গম্বুজের ব্যাস ছিল ১২ মিটার। নির্মাণের জন্য স্পেনের ‘কুব্বাতুলস্ সাখরা’, অটোমান মসজিদ এবং তাজমহলসহ বিভিন্ন মুসলিম স্থাপত্যশৈলী ব্যবহার করা হয়েছিল। পরে ১৯১৫ সালের ১৩ই জুলাই (রমজান মাসে) তুরস্কের কূটনীতিক মাহমুদ মোখতার পাশার উপস্থিতিতে মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।
তবে দুর্ভাগ্য যে এ মসজিদটি আবার ধ্বংস করা হয়েছিল। যে উদ্দেশ্যে নির্মাণ করা হয়েছিল তা না হাওয়ায় এটা ভেঙে ফেলেছিল। মসজিদ নির্মাণ করে মুসলমানদের মন জয় করার যে এজেন্ডা ছিল তাদের তাতে তারা সফলও হয়েছিল। দুই হাজার মুসলিম জার্মানির পক্ষে যুদ্ধ করতে সম্মত হয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর এসব মুসলমান ধীরে ধীরে নিজেদের দেশে ফিরেও গিয়েছিল। পরে শুধু ৯০ জন মুসলিম জার্মানিতে থেকে ভিলমারসার্দাফে বসবাস করতে থাকে।
এর পরের ঘটনা ভিন্ন রকম। ১৯২৪ সালে তারা ভিলমারসার্দাফে মসজিদ নির্মাণ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তারা তো কোন ধর্ম পুত্র যুধিষ্ঠির ছিল না যে মসজিদ নির্মাণ করেছি এটা সংরক্ষণ করব; তাই তখন আগের মসজিদটি ১০ হাজার রিচ মার্কে বিক্রি করে ভিলমারসার্দাফ মসজিদ নির্মাণের কাজে ব্যবহার করেছিল। ১৯২৭ সালে ভিলমারসার্দাফ মসজিদ নির্মাণের কাজ শেষ হলে উইনসফোর্ডে জার্মানির প্রথম মসজিদটি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিল। এভাবে নির্মাণের ১৫ বছর পর ১৯৩০ সালে সে মসজিদ ভেঙে ফেলা হয়।
আরও পড়ুন-
বর্তমান জার্মানে মুসলিম-
জার্মানিতে ৫০ লাখের বেশি মুসলমানের বসবাস, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৬.৫ %। জার্মানি সুউচ্চ ডোম ক্যাথিড্রালের জন্য বিখ্যাত হলেও ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় এখানে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে বিতর্ক কম। তবে বিপরীতমুখিতাও কম নয়। বিভিন্ন কারণে ফ্রান্সে ২৪টি মসজিদ বন্ধ করেছে দেশটির সরকার এবং প্রায় এক শ মসজিদ নজরদারির মধ্যে রেখেছে।
এখানে মুসলিমদের কিছু ভালো চালচিত্র
১. কোলন মসজিদ
এ মসজিদ ইউরোপের অন্যতম বড় এবং জার্মানির সবচেয়ে বড় মসজিদ৷ আয়তন ৪৫০০ বর্গমিটার। একসঙ্গে দুই থেকে চার হাজার মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা রয়েছে৷ চমৎকার স্থাপত্যের এ মসজিদ জার্মানিতে তুর্কি মুসলিমদের সংগঠন ডিটিব নির্মাণ করেছে। ফুলের কুঁড়ির আকৃতিতে তৈরি মসজিদটি কাচ দিয়ে আবৃত। রয়েছে প্রাকৃতিক আলো-বাতাস। দর্শকরা মসজিদের পাশাপাশি ভিন্নরকম স্থাপনা দেখে চোখ ও মন প্রশান্তিতে ভরিয়ে তোলে। নামাজের পাশাপাশি সেখানে বিভিন্ন ধর্মের সংলাপ, খেলাধুলা আয়োজনের ব্যবস্থা এবং দোকান ও লাইব্রেরি রয়েছে।
‘নন-অটোমান’ ডিজাইন অনুসরন করে তৈরি মসজিদে যেমন কংক্রিট এবং কাঁচের দেয়াল ও গম্বুজ রয়েছে কেমন রয়েছে দু’টি মিনার। উচ্চতা ৫৫ মিটার করে। আর মসজিদের ভেতরে দেয়ালে বিভিন্ন ক্যালিগ্রাফি রয়েছেই। তুরস্কভিত্তিক সংগঠন তার্কিশ ইসলামিক ইউনিয়ন ফর রিলিজিয়াস অ্যাফেয়ার্স (ডিআইটিআইবি) মসজিদটি পরিচালনা করে। ২০১৮ সালে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোয়ান এর উদ্বোধন করেন।তবে এখানে আযান বন্ধ ছিল। কেবল মসজিদের ভেতর আজানের শব্দ শোনা যেত। ২০২২ সালের ১৬ই অক্টোবর জার্মানির এই বৃহৎ মসজিদ থেকে প্রথম প্রকাশে আজান শোনা গেছে। এ আজানকে কেন্দ্র করে কোলন শহরের মেয়র হেনরিয়েট রেকার বলেছেন, “আজান দেওয়ার অনুমোদনের মাধ্যমে এই শহরের বৈচিত্র্যময়তা প্রকাশিত হয়েছে এবং স্থানীয় মুসলিমদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। এ উদ্যোগ মুসলিম জনগোষ্ঠীকে আইনের ন্যায্যতা দিয়েছে।”
রেল স্টেশনকে মসজিদের রূপান্তর
আরও একটা সুখবর যে জার্মানির লুশু শহরের একটি রেলস্টেশনকে মসজিদে রূপান্তর করা হয়েছে। জার্মানির কিছু দাতব্য এবং স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠানের সহযোগিতায় লুশু (Lüchow) শহরের মুসলিম নাগরিকরা সেদেশের পরিত্যক্ত ঐতিহাসিক একটি রেল স্টেশনকে মসজিদে রূপান্তর করেছে। এছাড়াও জার্মানির বিভিন্ন শহরে সরকারের মসজিদ রয়েছে উল্লেখযোগ্য হলো-ব্যাডেন-ওয়াটেম্বার্গ, বাটারিয়া, বার্লিন, হামবুর্গ, হেসেন, লোয়ার সাস্কনি, নর্থরাইন-ওয়েস্ট ফালিয়া, রাইনল্যান্ড-প্যালাটিনেট, সাক্সানি, স্লেশউইগ-হোস্টেইন, তুরিংঙ্গিয়া।
নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও হাসি কান্না নিয়ে এই মসজিদ গুলো টিকে আছে জার্মানিতে। যে শহরে আমরা আছি সেটি ফ্রাইবার্গ সিটি। যেখানে মিটিমিটি করে জ্বলছে কেবল একটাই মসজিদ। অবশ্য তাকে মসজিদে বলা যায় কিনা তা গবেষণার বিষয়। যেখানে নামাজ পড়া হচ্ছে সেখানে নাই কোন মিনার, সাইনবোর্ডও নাই। অনেকটা দো’চালার একটা পরিসর। মসজিদ বলবেন কি করে? বড়জোর বলা যায় নামাজ ঘর। অবশ্য তাতে কিছু যায় আসে না। এটাই আল্লাহর ঘর।
এমন হওয়ার কারণ কি? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে যাওয়া একজন সচেতন মুসলিমের অবশ্যই উচিত। ততটা সচেতন নই আমি তবে নন্দলালও নই যে বসে বসে খই ভাজবো। শুনেছি জার্মানিতে প্রকাশ্যে অ্যান্টিসেমেটিক অনুভূতি ব্যক্ত করা নিষিদ্ধ তবে ইসলামোফোবিয়ার মাধ্যমে মুসলিমদের দোষারোপ করা নিষিদ্ধ নয়। এ ব্যাপারে দার্শনিক মোশে জুকারম্যান বলেছেন, ‘ইসলামোফোবিয়া হলো একটি অকথিত ইহুদিবিরোধিতার প্রকাশ।’ তারা ইসলামের ক্ষেত্রে এই তীরটা ভালোভাবেই ছুড়ে থাকে।
মুসলমানরা সহনশীল হোক কিংবা হোক উদার; তাতে কি? অবস্থা এমন যে ‘যাকে দেখতে নারি তার চলন বাঁকা’। এসব আবহ যারা তৈরি করেছে সেসব মহান গুরুরাই তো ইসলামোফবিয়া তৈরি করেছে। এটা দিয়েই তো মুসলমানদের সন্দেহ করা বা টেরোরিস্ট বলার সুযোগ তৈরি করেছে। আবার এই কারণে জার্মানির রাজ্য এবং ফেডারেল স্তরেও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানও এমন ধারণা ধারণ করেছে। তৈরি করেছে ‘ডি-র্যাডিক্যালাইজেশন’ কার্যক্রম। এই কার্যক্রমের একমাত্র লক্ষ্য মুসলমানরা।সুতরাং এখানে মসজিদকে টিকিয়ে রাখা অবশ্যই একটা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ বটে। কোন দুর্বল ঈমানদারদের কাজ নয়। তাছাড়া যে দেশে দুই দুইবার বিশ্বযুদ্ধ হয়েছিল সেখানে এমন হওয়া স্বাভাবিক।
আরো ভয়াবহ খবর হচ্ছে, জার্মানিতে একটা গ্রুপ বসে নাই তারা ইসলামের বিরোধীতা করেই চলছে। এখানে মুসলমানদের আজান, বোরকা ও মসজিদের মিনার নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানিয়ে দলীয় মেনিফেস্টো তৈরি করেছে। দলটি ভয়ানক উগ্র ডানপন্থী। ‘অল্টারনেটিভ ফর ডয়েসল্যান্ড’ সংক্ষেপে এএফডি। তারা নির্বাচন করছে ফলাফলও ভালো করছে। ম্যানিফেস্টোতে তারা ঘোষণা করেছে, জার্মানিতে ইসলাম ধর্মের কোন স্থান নেই। এতে তারা মুসলমানদের আজান, পুরো মুখ-ঢাকা নিকাব এবং মসজিদের মিনার নির্মাণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানাচ্ছে।
এরা মূলত ইউরো-বিরোধী দল। অভিবাসন-বিরোধী’। আরো স্পষ্টভাবে বলা যায় তারা ‘ইসলাম-বিরোধী’ পার্টি হিসাবে কাজ করছে। তাদের বক্তব্য ভয়ংকর। তারা বলছে জার্মানির জন্য ইসলাম একটি বিদেশী ধর্ম। এখানে খ্রীষ্টানদের মতো সমান অধিকার মুসলিমদের থাকা উচিত নয়। এদের তৎপরতা বৃদ্ধি পেয়েছিল যখন যুদ্ধবিক্ষুব্ধ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে অভিবাসী আসা শুরু করে। তখন ১০ লাখেরও বেশি অভিবাসী জার্মানিতে এসেছিল। সে সময় থেকেই দেশে এএফডির সমর্থন বাড়তে শুরু করে। যত দিন যাচ্ছে দলটি ততো তারা উগ্রতা ছড়াচ্ছে। মুসলমানদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ পড়ছে। অনেকেই বলছেন, এএফডির ইসলাম সম্পর্কে অবস্থান বিপজ্জনক এবং বিভক্তি সৃষ্টিকারী।
অনেকের মতে, তাদের নীতি অনেকটা ইহুদিদের ব্যাপারে নাৎসীদের ভূমিকা যেমন ছিল মুসলমানদের ব্যাপারেও তেমনি ভয়ানক। মুসলিমবিদ্বেষের কিছু নমুনা- জার্মানিতে আসলাম যত কিঞ্চিত হলেও মুসলমানদের হাসি কান্নার কিছু খবর জানার চেষ্টা করেছি। প্রকাশিত নিউজে ২৫/৬/২০২৪) দেখলাম তার কিছু ভয়াবহ চিত্র। এগুলো সবই বর্ণবাদী আক্রমণ কিংবা অভিবাসী বিদ্বেষ ।
এখানে জার্মানির বখুমে একটি মসজিদে স্বস্তিকা চিহ্ন নিয়ে আগুন দেয়ার চেষ্টা হয়েছে। সাক্সনিতে একটি মুসলিম পরিবারের বাড়ির দরজায় উগ্রপন্থি প্রতিবেশীর গুলি করেছে। গত বছর জার্মানিতে এমন ঘটনা একটা দুটো নয় অন্তত ১৯২৬টি ইসলামবিদ্বেষী হামলার ঘটনা ঘটেছে৷ শুধু কী ছোট শহরে? জার্মানির রাজধানী বার্লিনেও এক মুসলিম নারীকে রেলের ট্র্যাকে ধাক্কা দিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল, সে হামাসের সদস্য কিনা?
আরও পড়ুন-
এ ব্যাপারে ইসলামবিদ্বেষ এবং মুসলিম বিরোধী ঘটনা পর্যবেক্ষণকারী এনজিও নেটওয়ার্ক ক্লেইম বলছে, ২০২৩ সালে জার্মানিতে এমন ঘটনা বেড়েছে ১১৪ শতাংশ ৷ বিশেষ করে ৭ অক্টোবর পশ্চিমা বিশ্বে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসাবে পরিচিত হামাসের নেতৃত্বে ইসরায়েলে হামলার পর এ ঘটনাগুলো আরো বেড়েছে বলেও জানিয়েছে সংগঠনটি৷ সংস্থাটির অভিযোগ, এরপরও কর্তৃপক্ষ এসব ঘটনা বন্ধে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিচ্ছে না এবং মনোযোগী হচ্ছে না ৷
আরো উদ্বেগের কারণ আগে বলা হয়েছে। জার্মান রাজনীতিতে উত্থান হয়েছে উগ্র ডানপন্থি হিসাবে পরিচিত দ্য অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) নামের যে রাজনৈতিক দলটি তারা মুসলিমদেরকে জার্মান সমাজভুক্ত নয় বলে দাবি করছে৷ শুধু তাই নয় অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিতে সরকারের উপর চাপও দিয়ে আসছে ৷
এনজিও ক্লেইম এর হানানো বলেন, ‘‘এখানে এখন যারা মুসলিম কিংবা যাদের দেখতে মুসলিমদের মতো মনে হয়, তাদের জন্য রাস্তা, বাস বা মসজিদ আর নিরাপদ নয়৷’’ ক্লেইম তাদের প্রতিবেদনে আরো বলছে, মুসলিমদের ধর্মীয় স্থান, কবরস্থান ও অন্যান্য জায়গায় মুসলিম বিদ্বেষের ঘটনাগুলো নথিভুক্ত করতেও মুসলিমরা ভয় পাচ্ছে৷ মূলত বেড়েই চলেছে মুসলিমবিদ্বেষ। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রতি দুই জার্মান নাগরিকের মধ্যে একজন ইসলামবিদ্বেষী৷ জার্মান সরকার এবং এনজিওগুলোও বলছে, ৭ অক্টোবেরর পর ইহুদিবিদ্বেষও বেড়েছে৷ সূত্র: টিএম/এডিকে (রয়টার্স)
আরো নানা বৈষম্য –
জার্মানির কৃষ্ণাঙ্গ, এশীয় ও মুসলিম মানুষেরা বলছেন, তারা তাদের ত্বকের রং, অরিজিন বা ধর্মের কারণে প্রায়ই বৈষম্যের শিকার হন৷ আর শ্বেতাঙ্গরা বলছেন, তারা ‘সেক্সিজম’ বা লিঙ্গ বৈষম্য এবং ‘এজিজম’ বা বয়স বৈষম্যের শিকার হন৷ জার্মান সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেশন অ্যান্ড মাইগ্রেশন রিসার্স’ বা ডেজিমের তৈরি রিপোর্ট, ২০২২ সালের জুন থেকে নভেম্বরের মধ্যে প্রায় ২১ হাজার মানুষের উপর জরিপ চালিয়ে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ডেজিম৷ জরিপ বলছে, ডার্ক বা গাঢ় ত্বকের মানুষ, হিজাব পরা মুসলিম নারী এবং যারা খারাপ জার্মান বলেন বা একেবারেই বলেন না, তাদের দিকে অপমানজনক চেহারা নিয়ে তাকানো বা তাদের অপমান করা প্রতিদিনের ঘটনা৷ জার্মানির অর্ধেকেরও বেশি কৃষ্ণাঙ্গ (৫৪%) অন্তত একবার বর্ণবাদের সম্মুখীন হয়েছেন৷ প্রতি পাঁচজনের মধ্যে প্রায় একজন নারী বলেছেন, তারা বছরে কয়েকবার হুমকি বা হয়রানির শিকার হয়েছেন৷ আর ১৪ % মুসলিম নারী ও ১৩% এশীয় নারী একই ধরনের সমস্যার কথা জানিয়েছেন৷
৪১ শতাংশ কৃষ্ণাঙ্গ এবং ৩৯ শতাংশ মুসলিম পুরুষ পুলিশের সঙ্গে কাজ করার সময় বর্ণবাদী বৈষম্যের সম্মুখীন হয়েছেন বলে জানিয়েছেন৷ এছাড়া তারা সরকারি অফিসগুলোতেও বর্ণবাদ ও বৈষম্যের সম্মুখীন হওয়ার কথা জানান৷ স্বাস্থ্যসেবা নিতে গিয়েও তারা বর্ণবাদের মুখোমুখি হন৷ চিকিৎসকের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে তারা বেশি সমস্যায় পড়েন৷ এসব ঘটনা প্রমাণ করছে জার্মানিতে মুসলমানরা কতটুকু ভালো আছে, কতটুকু চ্যালেঞ্জ নিয়ে তারা বসবাস করছে।
এরপরেও বলবো ইসলাম বিশ্বজয়ী। নইলে খেজুর পাতার ছাউনির নিচে ঘুমিয়ে কিভাবে মুসলমানরা রোম-পারস্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটিয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখানেও কিছুটা সম্ভবনার দিগন্ত উঁকি দিচ্ছে। জনসংখ্যার প্যারামিটারে ইসলাম তৃতীয় বৃহত্তম ধর্ম। পিউ রিচার্জ সেন্টারের অনুমান মতে, জার্মানিতে প্রায় ৪৩ লাখ থেকে ৪৬ লাখ কোন কোন হিসাবে ৫০ লাখ মুসলিম বাস করে। আরো জানার বিষয়, এখানে ইসলামের আগমন ঘটেছিল অষ্টাদশ শতাব্দীতে। তৎকালীন ওসমানীয় সাম্রাজ্য ও জার্মানির মধ্যে কূটনৈতিক সুসম্পর্কের কারণে।
বাস্তব কিছু কারণে সরকার এখানে অভিবাসনে পলিসি গ্রহণ করেছে । জার্মানিতে কাজ আছে, তবে মানুষ কম। জন্মহার নেগেটিভ। সুতরাং কর্মদক্ষ মানুষের প্রয়োজন। ঠিক এ কারণেই ১৯৬০ দশকে শুরু হয় শ্রমিক অভিবাসন। এছাড়াও ১৯৭০ দশকে রাজনৈতিক আশ্রয়ের ফলে জার্মান সমাজে ইসলাম ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে৷ এ সুযোগ থেকে মুসলমানরা এখানে এসেছে ৷ সরকারের রাজনৈতিক পলিসিও ভূমিকা রাখছে। ইসলাম গ্রহণের ব্যাপারে ২০১৪ সালে একটি একাডেমিক গবেষণা দাবি করে, প্রায় এক লাখ জার্মান ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছেন।
সঠিক সংখ্যা না জানার কারণ রয়েছে। জার্মান সংবিধানে ধর্মীয় সংগঠন গড়ে তোলার ক্ষেত্রে নিবন্ধনের কোনো শর্ত নেই। এই কারণে জার্মানিতে কয়টা মসজিদ, কয়টা মন্দির বা অন্য কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান আছে তার কোন হিসাব নেই। তবে মসজিদ সংখ্যার একটি ধারণা দিয়েছে জার্মানির ‘সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিমস’৷ তাদের হিসেবে জার্মানিতে প্রায় ২৫০০ মসজিদ আছে, যার মধ্যে পথচারীরা মাত্র নয়শ’টিকে মসজিদ হিসেবে চিনতে পারবেন৷ বাকিগুলো হয় কোনো সমিতির চত্বরে কিংবা পরিত্যক্ত কোনো কারখানায় গড়ে তোলা হয়েছে৷ গবেষকদের মতে, জার্মানিতে দৃশ্যমান মসজিদ ছাড়া বাকিগুলো কে বলা হচ্ছে মসজিদ সমিতি তার সংখ্যা ২,৩৫০ থেকে ২,৭৫০টি। এসব মসজিদ তুরস্ক, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন মুসলিমপ্রধান দেশের অর্থায়নে পরিচালিত হয়।
প্রাসঙ্গিক একটি বিষয় উল্লেখ না করলে এড়িয়ে যাওয়া হবে। জার্মানিতে মুসলমান ও মসজিদ নিয়ে যা কিছু জানলাম; এ থেকে আমাদের বাংলাদেশের কার্যক্রম কি ব্যতিক্রম কিছু। জার্মানিতো ইউরোপের দেশ। সেখানে সাকুল্যে ৬.৫% মুসলিম বসবাস করে। রাষ্ট্রযন্ত্র ও সংবিধান ইসলামের পক্ষের নয় তারপরও সেখানে ইসলাম নিয়ে যে মিতস্ক্রিয়া রয়েছে তা অনেকটা সহনশীল। আমাদের দেশে কি হচ্ছে? এখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কুরআন তেলাওয়াত বন্ধ করে দেয়া হয়নি? রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় হালাল গরুর গোশত খাওয়া পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। এখনো কি ইসলামের দিকে মানুষকে সাহসের সাথে আহবান করা যায়? বাংলাদেশ মুসলমানদের দেশ। এখানে ঘটা করে ক্রিসমাস ডে পালন করা হয়। পালন করা হচ্ছে থার্টিফার্স্ট নাইট, ভ্যালেন্টাইন ডে । সুযোগ করে দেয়া হচ্ছে আরো কত নাস্তিক্যবাদের কর্মসূচি। ৯১% মানুষ যে দেশে মুসলমান সেই দেশ ইউরোপের জার্মানি থেকে কি এগিয়ে? বাস্তবতা হচ্ছে তাদের থেকে আমরা অনেক ক্ষেত্রেই পিছিয়ে।
জুমার নামাজ আদায়-
ফ্রাইবার্গের মসজিদে নামাজ পড়লাম। এর বহিরঙ্গন বলছে এ মসজিদ তালিকাভুক্ত মসজিদ নয়। মসজিদ সমিতির মসজিদ। আরিফের সঙ্গে আলাপ করে জানলাম এগুলো মসজিদ নামে পরিচিত নয় বরং কালচারাল সেন্টারে হিসেবে পরিচিত। এ মসজিদটি তৈরি করেছে, যারা মুসলিম উদ্বাস্তু, সিরিয়ান কিংবা অন্য মুসলিম দেশ থেকে এসেছে। অবশ্যই তাদের স্যালুট দিতে হবে যে উদ্বাস্তু মুসলমানরা এখানে বসে নেই। ঈমান তাদের মেরুদন্ডকে সোজা করে রেখেছে। নিজেদের কন্ট্রিবিউশনে এখানে নামাজের ব্যবস্থা করেছে।
আরও পড়ুন-
শুনলাম ব্যতিক্রম খুতবা –
নামাজের খুতবা শুনলাম। চমৎকার ব্যতিক্রম ধর্মী। যা আর কোথাও দেখিনি। দেখলাম ইমাম সাহেব প্রথমে আরবিতে খুতবা দিয়ে পরে ইংরেজিতে ব্যাখ্যা করছেন। এমন ব্যতিক্রম খুতবা দেয়া দেখে অনেকটা অভিভূত হলাম। ইংরেজি খুৎবা থেকে বুঝতে পারলাম বিষয় বস্তু। খতিব সাহেব আমাদের অতি পরিচিত সূরা যা আমরা সবসময় পড়ে থাকি সূরা আসর তেলাওয়াত করে তার ব্যাখ্যা করতে করলে ইংরেজিতে। বুঝতে পেরে সাংঘাতিক এক্সাইটেড হলাম।
আসলে এমনই তো হওয়া উচিত। জুমার দিন মানে সাপ্তাহিক ঈদের দিন। এ দিনে মসজিদে অনেক লোকের আগমন ঘটে। এ সুযোগে যারা সচেতন ইমাম তারা খুতবায় সমাজে সব সময় ঘটে যাওয়া বিষয়গুলো যেমন অন্যায়-অবিচার, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, রাহাজানি, সুদ, ঘুষ, দুর্নীতি, মাদকাসক্তি, মজুতদারি, কালোবাজারি, মুনাফাখোরি, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, বোমাবাজি, হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য সামাজিক অবক্ষয় ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবেন। এতে মুসল্লিরা সতর্ক হতে হবেন। আল্লাহর নবি খুতবায় এমন কাজই করতেন। সকলকে সতর্ক করতেন। ঐক্যবদ্ধ থাকার ব্যাপারে উৎসাহ দিতেন। অসহায়-গরিব, অভাবগ্রস্ত পাড়া-প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজন এবং আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে বলতেন। সামর্থ্যবানদের সহযোগিতার নির্দেশনা দিতেন। ইসলামের দাওয়াত ও এর মর্মবাণী তুলে ধরতেন। এভাবে তিনি জুমার খুতবার মাধ্যমে আদর্শ জাতি গঠনে যথাযথ ভূমিকা রেখেছিলেন। নবিজির পরামর্শ এমনই।
এখানে ইমাম সাহেবের বক্তব্য চমৎকার এ হৃদয়গ্রাহী। যদিও ইংরেজিতে বলছেন সুন্দর বুঝতে পারছি। তিনি বলছেন, আজকের দিনটা আগামীকাল পাবেন না। আজকের এই খুতবা আগামীকাল আর ফিরে আসবেনা, আপনার জীবনের আজকের দিন আগামীকালকে পাবেন না। সুতরাং আজকের দিনটাকে আপনি সুন্দরভাবে কাজে লাগান। সপ্তাহে একবার জুমার দিনে আমরা এসে আমাদের ঈমানকে রিফ্রেস করি। এটা আমাদের জন্য খুবই প্রয়োজন। এই শিক্ষাটা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। আগামি দিনের জন্য আজকে কাজ করুন কারণ আগামী দিনে আজকের এই প্রাপ্তিটা আপনার কল্যাণ বয়ে আনবে। সুতরাং আজকে কাজ করার মাধ্যমে আগামী দিনের বিজয়কে সুনিশ্চিত করুন।
জার্মানি একটা ভিন্ন পরিবেশের ভিন্ন ধর্মের দেশ। যে দেশে হিটলারের জন্ম হয়েছিল এমন একটা দেশে এসে জুমার নামাজ পড়তে পারছি এবং চমৎকার খুতবা শুনলাম বেশ ভালই লাগলো। নামাজের পরে অনেক বাংলাদেশি স্টুডেন্টদের সঙ্গে পরিচয় হলো। তারা আরিফের মত এসে পড়াশোনা করছে, ডিগ্রী নিচ্ছে। দুজনের পরিচয় পেলাম তারা রাজশাহীর ছেলে। আরেকজন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর। আরেকজনের ফেনীতে। দেখলাম যশোরের ছেলেও আছে। নামাজ শেষে পরস্পর দেখা সাক্ষাৎ সালাম বিনিময়ে এটা ভিন্নরকম পরিবেশ তৈরি হলো। তাদের হৃদ্যতা পূর্ণ কথাবার্তা আমাকে মুগ্ধ করে ছাড়লো। কিছুক্ষণের জন্য মনে হলো যেন আমি বাংলাদেশের কোন মসজিদে নামাজ আদায় করে বাইরে চৌহদ্দিতে দাঁড়িয়ে জান্নাতি পরিবেশে আড্ডায় মেতে উঠেছি।
এখানে নামাজ আদায়ের সাথে সাথে যেন আমি এক অখ্যাত এশিয়ান ইতিহাস হয়ে গেলাম। বিশেষ করে সাত সমুদ্দুর তের নদী পারের ইউরোপের দেশ জার্মানিতে, যেখানে কাল মার্কস ও হিটলারের জন্মভূমি, সেখানে এসে মসজিদ খুঁজে পেয়ে নামাজ আদায় করার মত দুর্লভ ঘটনা ঘটলো। এজন্য মহান রাব্বুল আলামিনের শানে নিযুত শুকরিয়া আদায় করছি।
(ভ্রমণকাব্য: ইউরোপের পথে প্রান্তে, ভ্রমণ কাল: ২৫ অক্টোবর ২৪)
লেখকঃ কবি , সাহিত্যিক এবং সাবেক এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি
…………………………………………………………………………………………………………………………
মহীয়সীর প্রিয় পাঠক! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল, আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ গল্প ও কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেইজ মহীয়সী/Mohioshi-তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হ্যাঁ, মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল-
[email protected] ও [email protected] -এ; মনে রাখবেন, “ধন দৌলত খরচ করলে কমে যায়, কিন্তু জ্ঞান বিতরণ করলে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়”। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনি জ্ঞান দান করেন।” (সহিহ বুখারী- ৭১, ৩১১৬, ৩৬৪১, ৭৩১২, ৭৪৬০; মুসলিম- ১০৩৭; ইবনে মাজাহ- ২২১) ।
মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম; আজই আপনি যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে। আসুন, ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ, সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি। আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমীন।