Ads

সার্কঃ সূচনা, ক্রমবিকাশ ও সাফল্য-ব্যর্থতার পর্যালোচনা ।। ১ম পর্ব

।। ড. মোঃ নূরুল আমিন ।।

দক্ষিণ এশিয়ায় অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে একটি কার্যকর অর্থনৈতিক ইউনিয়ন গড়ে তোলার ধারণাগত উদ্যোগসহ ২০১৪ সালের ২৭ নভেম্বর ৩৬ দফা কাঠমান্ডু ঘোষণার মাধ্যমে ১৮তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন সমাপ্ত হয়েছিল। এই সম্মেলনে একটি জ্বালানি চুক্তিও সম্পাদিত হয়েছিল। তবে এই চুক্তিসহ সামগ্রিকভাবে ঘোষণাপত্রের ফলপ্রসূতা নিয়ে বিশ্লেষক মহলে ঐ সময় নানা গুঞ্জন শোনা যায়। এই সম্মেলন থেকে বাংলাদেশের নীট প্রাপ্তি নিয়েও কথা উঠেছিল।

দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং নিজেদের মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা (সার্ক) গঠিত হয়েছে। উন্নয়ন আঞ্চলিক কৌশলের ওপর ভিত্তি করে স্থাপিত। এটি মূলত একটি অর্থনৈতিক ও সামাজিক সহযোগিতার আঞ্চলিক সংগঠন। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতার ধারণাকে আন্তঃরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার মাধ্যমে পূর্ণতা প্রদানই এর মুখ্য উদ্দেশ্য। এই দর্শনকে সামনে রেখেই ১৯৭৯ সালে বাংলাদেশের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দক্ষিণ এশীয় অঞ্চলে একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা গঠনের উদ্যোগ নেন। ১৯৮০ সালের মে মাসে তিনি দক্ষিণ এশিয়ার ৭টি দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের কাছে এ মর্মে বাংলাদেশের একটি আনুষ্ঠিানিক প্রস্তাব পেশ করেন। জিয়াউর রহমান চেয়েছিলেন এ অঞ্চলের জনগণের মধ্যে অর্থনীতি, প্রযুক্তি, শিক্ষা, বিজ্ঞান, কারিগরি, সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহজ ও স্বাভাবিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হয়ে সামগ্রিক উন্নয়ন ও সম্ভাবনা দৃঢ় হোক। দক্ষিণ এশীয় সাতটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানরা এ প্রস্তাবে প্রাথমিক দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কাটিয়ে সাড়া দেন। ১৯৮১ সালের ২১ থেকে ২৩ এপ্রিল কলম্বোতে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ এশীয় রাষ্ট্রগুলোর প্রথম পররাষ্ট্র সচিব সম্মেলনে কাঙ্ক্ষিত সংগঠন গঠনের ব্যাপারে কিছু প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়। এরপরই ১৯৮৩ সালের আগস্ট মাসে এ অঞ্চলের সাতটি দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রীরা দিল্লীতে তাদের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠকে মিলিত হন। এ বৈঠকে মন্ত্রীবর্গ একীভূত বা যৌথ কর্মসূচি বা Integrated Programme of Action (IPA) নামে একটি প্রোগ্রাম গ্রহণ করেন। এ কর্মসূচির আওতায় সার্কভুক্ত রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যম হিসেবে বিভিন্ন কাজ সম্পাদনের জন্য নয়টি ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হয়। অতঃপর ১৯৮৫ সালের ৭-৮ ডিসেম্বর ঢাকা সম্মেলনের মাধ্যমে (SAARC- South Asian Association for Regional Cooperation) বা দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার আনুষ্ঠানিক সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদিত হয় এবং তার যাত্রা শুরু হয়।

সার্ক ৭টি রাষ্ট্র নিয়ে শুরু করলেও বর্তমানে এর সদস্য সংখ্যা ৮টা। সার্কের ১৭তম শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে মালদ্বীপের আদ্দু সিটিতে এবং সার্কের ১৮ তম তথা শেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৪ সালের নেপালে। ঐ সময় পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরানুযায়ী সম্মেলনের প্রাপ্তি শূন্যের কোঠায় এবং বেশ কিছু ঘোষণা ও সিদ্ধান্তের কথা শোনা গেলেও শীর্ষ সম্মেলনটি কার্যত শেষ হয়েছে পাকিস্তান ও ভারতের দুই প্রধানমন্ত্রীর করমর্দনের মধ্য দিয়েই। ২০১৬ সালে সার্কের ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা ছিল পাকিস্তানের ইসলামাবাদে। মূলত ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের জের ধরে সেই সম্মেলনে অংশগ্রহণ নিয়ে ভারতের অনাগ্রহের কারণে শেষ পর্যন্ত ১৯তম শীর্ষ সম্মেলন স্থগিত হয়। সার্কের সনদ অনুযায়ী, সদস্য দেশগুলোর সবাই একমত না হলে শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে পারে না। এরপর  সার্কের আর কোনও শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়নি । সার্কে পাকিস্তানের উপস্থিতিতে ভারতের গা জ্বালাভাব এবং পাকিস্তানের ব্যাপারে ভারতের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই মূলত অকার্যকর হয়ে পড়েছে সার্ক নামক অসাধারণ আঞ্চলিক সহযোগিতার সংস্থাটি ।

সার্কের সদস্য রাষ্ট্র

দক্ষিণ এশিয়ার ৭টি দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য ১৯৮৫ সালে শুরু হওয়া সার্ক ইতোমধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশের জনগোষ্ঠীর মধ্যে বিস্তৃতি লাভ করেছে। ২০০৭ সালে সার্কে আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তির ফলে বর্তমানে সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে আটে। এর সদস্য রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে : ১.বাংলাদেশ ২. ভারত ৩. পাকিস্তান ৪. নেপাল ৫. শ্রীলঙ্কা ৬. ভুটান ৭. মালদ্বীপ ৮. আফগানিস্তান।

সার্কের পর্যবেক্ষক দেশসমূহ

চীন ও জাপানের মতো উন্নত প্রযুক্তিশীল রাষ্ট্র সার্কের পর্যবেক্ষক। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া, আমেরিকা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ইরান, মায়ানমার, অস্ট্রেলিয়া ও মরিশাসকে সার্কের পর্যবেক্ষকের মর্যাদা দেয়া হয়।

সার্কের অবকাঠামো

সার্ক সনদে এ সংস্থার জন্য একটি পাঁচ স্তর বিশিষ্ট প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর বিধান রাখা হয়েছে।

এই কাঠামো হচ্ছে :

১. সদস্য দেশসমূহের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানদের শীর্ষ সম্মেলন : সার্ক সনদ অনুযায়ী প্রতি বছরই এই শীর্ষ সম্মেলন হওয়ার কথা। নিয়ম অনুযায়ী সব সদস্য রাষ্ট্র বা সরকারের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া সার্ক শীর্ষ সম্মেলন হতে পারে না। প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত সার্কের ১৮টি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২. পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলন : সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা সাধারণত বছরে দু’বার মিলিত হন। সম্ভব না হলে বছরে অন্তত একবার মিলিত হবেন। এ সম্মেলনগুলোতে বিভিন্ন এজেন্ডা ও সিদ্ধান্ত প্রণয়ন করা হয়।

৩. স্ট্যান্ডিং কমিটি : সদস্য রাষ্ট্রগুলোর পররাষ্ট্র সচিবদের সমন্বয়ে এ কমিটি গঠিত। সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোর পরিকল্পনা, অনুমোদন, তদারকি ও সমন্বয় সাধন এ কমিটির প্রধান কাজ। এ কমিটি প্রয়োজন অনুযায়ী যে কোনো সময় বৈঠকে বসবেন এবং সংস্থার কার্যাবলী সম্পর্কে স্ব স্ব দেশের মন্ত্রিপরিষদের কাছে নিয়মিত রিপোর্ট পেশ করবেন।

৪. টেকনিক্যাল কমিটি : সার্কের সব কর্মসূচি কতগুলো নির্দিষ্ট সহযোগিতার ক্ষেত্রের মাধ্যমে পরিচালিত। এসব কর্মসূচি টেকনিক্যাল কমিটির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। প্রত্যেক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধি নিয়ে এ কমিটি গঠিত হয়।

৫. সচিবালয় : সার্ক সনদের ৮ নং ধারায় সার্ক সচিবালয় সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। বাঙ্গালোরে অনুষ্ঠিত সার্কের দ্বিতীয় শীর্ষ সম্মেলনে সচিবালয়ের গঠন ও কার্যাবলী সম্পর্কে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। নেপালের কাঠমান্ডুতে সার্ক সচিবালয় স্থাপন করা হয়েছে। ১৯৮৭ সালে এর কার্যক্রম শুরু হয়। সার্কের কর্মকান্ড পরিচালনার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে কাজ করার ক্ষেত্রে সচিবালয় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে থাকে।

আরও পড়ুন-

বাংলাদেশের জাতীয় বাজেট ।। একটি পর্যালোচনা

সার্কের মূলনীতি

সার্কের মূলনীতিগুলো হলো :

১. সার্কের যে কোনো সিদ্ধান্ত সর্বসম্মত হতে হবে।

২. দ্বিপক্ষীয় বিরোধপূর্ণ বিষয়গুলো এ সংস্থায় তোলা হবে না।

৩. প্রত্যেকটি সদস্য রাষ্ট্র পরস্পরের আঞ্চলিক অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করবে এবং কেউ কারও অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করবে না। তদুপরি তারা পারস্পরিক লাভালাভের প্রতিও শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

৪. এ অঞ্চলের দেশগুলোর আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতি লক্ষ্য রেখে সার্ক ভূমিকা পালন করবে।

সার্কের সহযোগিতার ক্ষেত্র

সার্কের সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলো হচ্ছে: ১. কৃষি ২. পল্লী উন্নয়ন ৩. স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা ৪. নারী উন্নয়ন ৫. পরিবেশ ও আবহাওয়া ৬. বনায়ন ৭. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ৮. মানবসম্পদ উন্নয়ন ৯. পরিবহন ও যাতায়াত ১০. পর্যটন ১১.ডাক ও তার ১২. শিশু অধিকার সংরক্ষণ ১৩. মাদক পাচার ও ব্যবহার রোধ ১৪. শিক্ষা, ক্রীড়া ও সংস্কৃতি।

সার্ক সনদ

১৯৮৫ সালের ডিসেম্বরে ঢাকায় প্রথম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনেই অনুমোদিত হয় সার্ক সনদ। এ সনদের অন্তর্ভুক্ত বিষয়গুলো হচ্ছে-

১. দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের কল্যাণ সাধন এবং তাদের উৎকর্ষ বৃদ্ধি।

২. এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, সামাজিক অগ্রগতি  এবং সাংস্কৃতিক বিকাশ দ্রুততর করা।

৩. দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর যৌথভাবে আত্মনির্ভরশীলতার প্রসার ও শক্তিবর্ধনে সাহায্য করা।

৪. পরস্পরের সমস্যা অনুধাবন, পারস্পরিক বিশ্বাস ও বুঝাপড়ায় সাহায্য করা।

৫. অর্থনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, কারিগরি, বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে সক্রিয় সহযোগিতা এবং পারস্পরিক সাহায্যের পরিস্থিতি সৃষ্টি।

৬. অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধি।

৭. সমস্বার্থ বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক সংগঠনসমূহের  মোকাবিলায় নিজেদের মধ্যে সহযোগিতার প্রসার।

৮. অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণের জন্য অন্যান্য আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সঙ্গে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠা করা।

সার্কের সচিবদের নাম ও মেয়াদকাল

১. আবুল আহছান, ১৬ জানুয়ারি ১৯৮৭-১৫ অক্টোবর ১৯৮৯

২. কান্ট কিশোর বারগেভা, ১৭ অক্টোবর ১৯৮৯—৩১ ডিসেম্বর ১৯৯১

৩. ইবরাহিম হোসাইন জাকি, ১ জানুয়ারি ১৯৯২-৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৩

৪. যাদব কান্ট সিলওয়াল, ১ জানুয়ারি ১৯৯৪৭-৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৫

৫. নাঈম ইউ হোসাইন, ১ জানুয়ারি ১৯৯৬-৩১ ডিসেম্বর ১৯৯৮

৬. নিহাল রডরিগো, ১ জানুয়ারি ১৯৯৯-১০ জানুয়ারি ২০০২

৭. কিউ এ এম এ রহিম, ১১ জানুয়ারি ২০০২-২৮ ফেব্রুয়ারি ২০০৫

৮. চেনকিয়া দরজি, ১ মার্চ ২০০৫- ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৮

৯. শীল শর্মা, ১ মার্চ ২০০৮-২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১১

১০. ফাতিমা সাঈদ, ০১ মার্চ ২০১১ – ১১ মার্চ ২০১২

১১. আহমেদ সেলিম, ১২ মার্চ ২০১২-২ মার্চ ২০১৪

১২. অর্জুন বাহাদুর থাপা, ০৩ মার্চ ২০১৪-২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭

১৩. আমজাদ হোসেন সিয়াল, ১ মার্চ ২০১৭- ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০

১৪. এসলা উইরাকুন, ১ মার্চ ২০২০-৩ মার্চ ২০২৩

১৫. গোলাম সারওয়ার, ৪ মার্চ ২০২৩- বর্তমান

সার্কের সফলতা

দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সংস্থা সার্ক চতুর্থ দশকে পদার্পণ করেছে। সময়টা খুব দীর্ঘ না হলেও একটি আঞ্চলিক সংগঠনের পরিপক্বতার জন্য যথেষ্ট। ২০১৪ সালে সার্কের শেষ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া পর্যন্ত সার্ককে মোটামুটিভাবে সফল বলা যায় । ঐ সময় পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটি টিকে থাকার মতো যথেষ্ট সামর্থ্য দেখিয়েছে বলে মনে করা হয়। দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্প্রসারণের জন্য এটি একটি প্লাটফরম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ প্লাটফরম এ অঞ্চলে অরাজনৈতিক বিষয়ে সহযোগিতার জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করে যাচ্ছিল। সার্কের একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে উঠেছে যা আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। এর একটি আনুষ্ঠানিক সনদ রয়েছে এবং কাঠমান্ডুতে সচিবালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সার্ক এ অঞ্চলে রাজনৈতিক নেতাদের থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ পর্যন্ত সবাইকে একে অপরের কাছাকাছি আসার সুযোগ করে দিয়েছে। এর ফলে একে অন্যের সমস্যা, আশা- আকাঙ্ক্ষা সম্পর্কে জানতে পারছে। এতে অনেক ভুল বুঝাবুঝিরও অবসান ঘটানোর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

সার্কের সাফল্যগুলো নিম্নরূপ

– প্রতিষ্ঠার পর থেকে সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বড় কোনো সংঘাত হয়নি। এর কারণ সার্কের মূল্যবোধ।

– সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পেয়েছিল এবং প্রায়ই আন্তর্জাতিক ফোরামে অসংখ্য নীতি গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছে।

– সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা সহযোগিতা বৃদ্ধি

পেয়েছে।

– সার্কের আওতায় কৃষিতথ্য কেন্দ্র (Agricultural Information Centre), খাদ্য সুরক্ষণ ব্যবস্থাপনা ও দারিদ্র্য দূরীকরণের কমিশন গঠন সার্কের একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।

– সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাফ গেমস সার্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক বিষয়।

– সার্ক সদস্য দেশগুলোর সন্ত্রাস দমন সংক্রান্ত একটি কনভেনশনে স্বাক্ষর করেছে। সার্ক আবার সচল হলে এবং এটি কার্যকর হলে সদস্যভুক্ত দেশগুলোর অভ্যন্তরীণ ও সীমান্তবর্তী সন্ত্রাস হ্রাস পাবে।

– সার্ক দেশগুলোর সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে UNCTAD-এর সঙ্গে সার্কের একটি সমঝোতা স্মারক, দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য ESCAP ও UNDP এর সঙ্গে এগ্রিমেন্ট, অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য জাপানের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক, শিশুদের অধিকার নিশ্চিতকরণ ও উন্নয়নের জন্য ইউনিসেফের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। আঞ্চলিক সংস্থা হিসেবে এ ধরনের পদক্ষেপ সার্কের অন্যতম সাফল্য।

– SAFTA চুক্তি সম্পাদন সার্কের একটি বড় ধরনের সাফল্য। সার্কভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক সংযুক্তিকরণ এবং দক্ষিণ এশীয় বাণিজ্যে পারস্পরিক পক্ষপাতমূলক কাঠামো রচনার আলোকে এই চুক্তি সম্পাদিত হয়। ১৯৯৩ সালে SAFTA স্বাক্ষরিত হয় যা ১৯৯৫ সালে কার্যকর হয়। SAFTA এর আওতায় প্রতিটি পণ্যের বাণিজ্যিক সম্ভাবনা যাচাই করে শুল্কহার কমিয়ে আনার প্রচেষ্টা নেয়া হয়। চাহিদাভিত্তিক একটি উৎপাদন ব্যবস্থা পরিচালনার স্বার্থে একাধিক দেশের উৎপাদনের উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে অর্থনেতিক বিকাশের একটি নতুন পরিবেশ তৈরি এবং একটি অভিন্ন বাজার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বকে সার্ক স্বীকৃতি দিয়েছে। SAFTA এর একটি উদ্দেশ্য হলো ক্রমান্বয়ে আন্তঃআঞ্চলিক বাণিজ্যের উদারীকরণ, যার মাধ্যমে SAFTA (South Asian Free Trade Area) বা মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল গড়ে তোলার একটি স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে। ১৯৯৭ সালের ১২ থেকে ১৪ মে মালদ্বীপে অনুষ্ঠিত নবম শীর্ষ সম্মেলনে ২০১১ সালের মধ্যে এশিয়াকে একটি মুক্তবাণিজ্য অঞ্চল এবং একটি অর্থনৈতিক গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। SAFTA এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সম্পদ, সেবা, বিনিয়োগ এবং জনগণের মুক্ত যাতায়াত নিশ্চিত করবে। অবাধ বাণিজ্য অঞ্চল গঠনের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে SAFTA-এর আওতায় ২২৬ পণ্য এবং দ্বিতীয় দফায় ২০০ পণ্যের ১০% থেকে ৫০% শুল্ক কমানো হয়।

– সার্কের উদ্যোগে সার্ক টিউবারকিউলোসিস সেন্টার (SAARC Tuberculosis Centre), সার্ক ডকুমেন্টেশন সেন্টার (SAARC Documentation Centre, সার্ক আবহাওয়া গবেষণা কেন্দ্র (SAARC Meta Research), প্রভৃতির মাধ্যমে এ অঞ্চলে উল্লিখিত বিষয়ের ওপর উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।

– ২০০৭ সালে চতুর্দশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে সার্ক পাসপোর্ট প্রবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেটা বাস্তবায়িত হলে সার্কভুক্ত দেশগুলোতে অবাধ চলাচল বৃদ্ধি পাবে। বিভেদের দেয়াল অর্থহীন হয়ে পড়বে এবং রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে জনবসতি ঘনত্বের সমতা আসবে। এছাড়া সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন ‘সার্কমুদ্রা’ চালুর প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। অভিন্ন সার্ক মুদ্রা চালু হলে উন্নত দেশের মুদ্রানীতির আধিপত্য থেকে দক্ষিণ এশিয়ার জনগণ রেহাই পাবে।

আরও পড়ুন-

জেনা-ব্যভিচার ও আমাদের সমাজ ব্যবস্থার ভবিষ্যৎ

– সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ২০০৭ সালে চুর্তদশ সম্মেলনে একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী এ ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস হবে নয়াদিল্লিতে, বাংলাদেশে হবে একটি শাখা ক্যাম্পাস। এ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে সার্কভুক্ত অঞ্চলে শিক্ষার বিস্তার ঘটবে বলে সবার বিশ্বাস ছিল। পরবর্তীতে ২০১০ সালে অর্থনীতি ও কম্পিউটার সাইন্সের উপর দুটি পোস্ট গ্রাজুয়েট প্রোগ্রাম দিয়ে সার্কের প্রস্তাবিত সাউথ এশিয়ান ইউনিভার্সিটির পথচলা শুরু হয় ভারতের নয়া দিল্লিতে। ২০২২-২০২৩ সালের মধ্যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়। পরে ২০২৩ সালে ফলিত গণিত, বায়োটেকনোলজি, অর্থনীতি,কম্পিউটার সাইন্স, ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন, লিগাল স্টাডিজ এবং সমাজ বিজ্ঞানের উপর মাস্টার্স এবং পিএইচডি প্রোগ্রাম শুরু হয় । প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশে অবশ্য এ পর্যন্ত এর কোনও শাখা ক্যাম্পাস এখনও চালু হয়নি ।

– জরুরী খাদ্য সঙ্কট, খাদ্য ঘাটতি এবং দুর্যোগ মোকাবেলায় সার্ক ফুড ব্যাংক প্রতিষ্ঠার জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল । এ চুক্তি অনুযায়ী ফুড ব্যাংকে থাকবে ২ লাখ ৪১ হাজার ৫৮০ মেট্রিক টন চাল ও গম।

– দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনে পণ্য ও জনগণের অবাধ চলাচল নিশ্চিত করতে সার্ক দেশগুলোর রাজধানীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। চতুর্দশ সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু ছিল কানেক্টিভিটি বা যোগাযোগ।

– চতুর্দশ শীর্ষ সম্মেলনে সার্কের অবয়বগত পরিবর্তন ঘটেছে। কনিষ্ঠতম সদস্য হিসেবে আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তি সার্ককে দক্ষিণ এশিয়ার পরিচিতির ক্ষেত্রে পরিপূর্ণতা প্রদান করেছে। সার্ককে পূর্ণ অবয়বে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের অন্তর্ভুক্তি অত্যন্ত ইতিবাচক দিক।

– দক্ষিণ এশিয়ার সার্কভুক্ত দেশগুলোতে উৎপাদিত ও বাজারজাত করা পণ্যের অভিন্ন মান নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সার্কের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক মান নিয়ন্ত্রণ অভিন্ন মান নির্ণয় ও নিয়ন্ত্রণের জন্য সার্কের দক্ষিণ এশিয়া আঞ্চলিক মান নিয়ন্ত্রণ সংস্থা স্থাপন করা হয়েছে। এর সদর দফতর ঢাকা।

– নারী ও শিশু উন্নয়ন, শান্তি প্রতিষ্ঠা, দরিদ্রতা দূরীকরণ, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এসব ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখার জন্য ২০০৪ সাল থেকে সার্ক অ্যাওয়ার্ড দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

– সার্ক এর পঞ্চদশ থেকে অষ্টদশ শীর্ষ সম্মেলনে সদস্য দেশগুলোর উন্নয়নের লক্ষ্যে ত্রিশটিরও

বেশি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

সার্ক কার্যক্রমের একটি বিশ্লেষণ

সার্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে সার্কের ১৮ তম তথা শেষ শীর্ষ সম্মেলন ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় পর্যন্ত প্রায় তিন দশকে সার্কের আওতায় প্রায় তিন ডজন চুক্তি এবং অনেকগুলো ঘোষণা আসলেও তার অধিকাংশই বাস্তবায়নের মুখ দেখেনি। ২০০০ সালের মধ্যে এই অঞ্চলের প্রতিটি মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার জন্য সার্ক যে অঙ্গীকার করেছিল তা যেমন বাস্তবায়িত হয়নি, তেমনি ২০০২ সালের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়াকে দারিদ্র্যমুক্ত করার ঘোষণাও এখনো স্বপ্নই রয়ে গেছে।

বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে SAPTA ও SAFTA -র মতো চুক্তি করা হলেও ২০১৪ পর্যন্ত  ৩০ বছর দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বেড়েছে মাত্র ৫.৮ শতাংশ। সন্ত্রাস দমনে একযোগে কাজ করার কথা থাকলেও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিস্তার ও উৎস নিয়ে সদস্য দেশগুলোর মধ্যেও রয়েছে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও সন্দেহের বেড়াজাল। পক্ষান্তরে সদস্য দেশগুলোর সাধারণ মানুষ মনে করে যে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সার্ক নেতৃবৃন্দ যে সকল গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তা বাস্তবায়িত হলে দক্ষিণ এশিয়ার চেহারা পাল্টে যেত। অনেকে মনে করেন সদস্য দেশগুলোর পারস্পরিক অবিশ্বাস, তাদের মধ্যে সম্প্রীতির অভাব এবং ক্ষমতার দ্বন্দ্ব সার্ককে অনেকটাই অকার্যকর করে দিয়েছে।

বাংলাদেশের উদ্যোগে ১৯৮৫ সালে ঢাকায় দক্ষিণ এশিয়ার সাতটি দেশ নিয়ে সার্কের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ২০০৭ সালে দিল্লীতে অনুষ্ঠিত চতুর্দশ সার্ক শীর্ষ সম্মেলনে আফগানিস্তানকে অষ্টম সদস্য দেশ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। ২০১৪ সাল নাগাদ ৩০ বছরে সার্কের আওতায় ২৬টি চুক্তি এবং ১৮টি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা হয়েছে। সার্ক দেশগুলোর মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর জন্য ১৯৯৩ সালে ঢাকায় সার্কভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে সাপটা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পরের বছর থেকে তা কার্যকর করার কথা থাকলেও স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা নিয়ে দুই প্রভাবশালী সদস্য রাষ্ট্র ভারত ও পাকিস্তানের অনমনীয় দৃষ্টিভঙ্গির কারণে চুক্তিটির বাস্তবায়ন আটকে গেছে। এর সাথে যুক্ত হয়েছিল ভারতের বেনিয়া ও সংরক্ষণনীতি।

এছাড়াও আছে স্পর্শকাতর পণ্যের তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে সদস্য রাষ্ট্রগুলো পরস্পর পরস্পরকে ছাড় না দেয়ার প্রবণতা। ফলে আন্তঃবাণিজ্য সম্প্রসারণ কঠিন হয়ে পড়েছে। ১৯৮৫ সালে সার্ক যখন যাত্রা শুরু করেছিল তখন এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের হার ছিল ৩.২ শতাংশ। ২০১৪ সালে ৩০ বছর পর এই হার হয় মাত্র ৫.৮ শতাংশ। পক্ষান্তরে আসিয়ানের (ASEAN) ক্ষেত্রে আন্তঃবাণিজ্যের হার ২৫ শতাংশ এবং ইউরাপীয় ইউনিয়নের ক্ষেত্রে তা ৬০ শতাংশের বেশি । সার্কের আওতায় প্রথমে সাপটা ও পরে সাফটা স্বাক্ষরের পরও আন্তঃবাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আসেনি। বস্তুতঃ ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদলে দক্ষিণ এশীয় ইউনিয়ন গঠনের উদ্যোগের কথা বলা হলেও সার্ক দেশগুলোর মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক কর্মকান্ড এখনও খুব কম। এর আগের কয়েকটি শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ এশিয়ার সাধারণ মানুষের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধির অঙ্গীকার করা হলেও আশানুরূপ তেমন অগ্রগতি আসেনি। নিকট প্রতিবেশী হওয়া সত্ত্বেও সার্ক দেশগুলোর সাধারণ মানুষ পরস্পর পরস্পরের বন্ধু হতে পারেনি।

২০১৪ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া প্রায় প্রতিটি শীর্ষ সম্মেলনে সন্ত্রাস দমনে সার্ক নেতারা জোরালো অঙ্গীকার করলেও বাস্তবে এই অঙ্গীকার বাস্তবায়নে ফলপ্রসূ কেনো পদক্ষেপের অভিব্যক্তি ঘটেনি। বরং বড় একটি সদস্য দেশ প্রতিবেশী দেশগুলোতে সন্ত্রাস সৃষ্টিতে মদদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিনিয়ত । বিচ্ছিন্নবাদ এবং মাওবাদী সন্ত্রাসে জর্জরিত এই দেশটি নিজ দেশে সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ হয়ে তা অন্যদেশে রফতানি করে ভার লাঘবে এখন বদ্ধপরিকর। প্রতিবেশি দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় দেশটি সন্ত্রাসকে এখনও পুঁজি হিসেবে গ্রহণ করেছে বলে মনে হয়। সন্ত্রাসের বিস্তার ও সন্ত্রাসীদের আশ্রয় নিয়ে প্রতিবেশি দেশসমূহের মধ্যে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ চলছে।

[চলবে]

লেখকঃ প্রাবন্ধিক , গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সাবেক যুগ্ম সচিব  এবং সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, দৈনিক সংগ্রাম

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

আরও পড়ুন