আমি এবং আমিই
জিনাত আরা জিতু
কখনও কখনও আকস্মিক আমি পশু হয়ে যাই!
বাহিরে নিপাট ভদ্র মুখটির পেছনের রূপটা বড্ড ভয়ঙ্কর হয়ে যায় কখনও কখনও;
যেই চোখ দুটিকে ভালোবেসে সে ডুবে ভেসে উঠেছে বহুবার,
সেই চোখগুলি আচমকাই জ্বলে ওঠে ভীষন অন্ধকারে;
গুহার ভেতরে বসে থাকা আদিম মানুষগুলো যেভাবে আগুনে ঝলসাতে থাকা মাংসপিন্ডের দিকে তাকিয়ে থাকে,
আমিও অমন গুহাবাসী মাংসখেঁকো মানব হয়ে যাই,চকচকে চোখে তাকিয়ে থাকি ঝলসানো পোঁড়া মাংসের দিকে।
লকলকে জিহ্বায় লোভাতুর লালা,দাঁতগুলোও হলদেটে,বড় বড় নখের আঁচর কেটে পৃথিবীকে জানান দেই আমার পশুত্বের।
কি আশ্চর্য!
মাঝে মাঝে যেন নিজেকেই নিজে চিনতে বড্ড কষ্ট হয়,
কষ্ট হয় যখন আয়নায় নিজেরই প্রতিবিম্বের বিশ্বাসঘাতকতা দেখি;
বিশ্বাসঘাতকতা দেখি নিজের অস্তিত্বের সাথে,প্রবঞ্চনা করি নিজেরই এতোদিন এতগুলো বছরে আগলে রাখা নীতির সাথে।
আহ! কি গুমোট সেইসব সময়গুলো ;
যখন বিস্ফোরিত কামনায় জর্জরিত আমি কামনার চোখ দিয়ে গিলে খাই অন্যের অধিকারস্থ শরীর,
হাতরে নেই মুঠোর মধ্যে যা কিছু পাই নাগালে।
অথচ বাকিসময়গুলোতে আমি শান্ত,খুব বেশি বিশ্বস্ত নিজের দীনতায়;
দিন,ক্ষন,মাস অথবা বছরে বেশ কিছু ভুল হয়ে যায় আমার,
সাধারনত আমি খুব প্রেমময়ী প্রেমিকের সৌজন্যে!
অথচ সেই আমিই কি প্রখর রুক্ষতায় পায়ে ঠেলি তার প্রেম,টুকরো টুকরো করে ফেলি নিমিষেই তার স্বপ্নের দেয়াল ঠুনকো কাঁচের মতো করে কঠোর নির্মমতায়।
জানি অহেতুক! জানি আপাদমস্তক সে আমার;
তবু কি ভিষন যন্ত্রনা দেই তার হৃদয়কে আঁচড়ে,কামড়ে।
মাঝে মাঝেই আমি পশু হয়ে যাই?
নাকি বেশিরভাগ সময়েই আমি মানুষ হবার ভান ধরি!