রত্না আফরোজ
বড় বাড়ির বড় মেয়ে বড় ছেলের বউ,
কান্দে বসে পুকুর ঘাটে দেখে না যে কেউ।
শান্ বাধাঁনো ঘাটের জলে,
আষাঢ় মাসের মেঘের ঢলে।
দিঘির জলে পা ডুবিয়ে,
কাঁখের কলসী দেয় ভাসিয়ে।
গভীর স্নেহে হাত বাড়িয়ে,
চুপটি করে সে দাঁড়িয়ে
পেছন হতে হাতটি ধরে
চোখ চেঁপে যায় চুপটি করে।
কত দিনের মধুর স্মৃতি
হাড়িয়ে যাওয়া প্রেমের প্রীতি।
মনের মাঝে ভেসে ভেসে
কাঁদিয়ে যায় ওরা এসে
গেলো বছর ভাটির দেশে
সেই গেলো যে ম্লান হেসে।
আর আসেনা ঘরে ফিরে
দিন চলে যায় ধীরে ধীরে।
কত চিঠি একটি বছর
কেউ দিলো না তাহার খবর।
কত কথা প্রাণে প্রাণে
বলা হয়না কানে কানে।
চোখের পানি মেঘের ঢলে,
এক হয়ে যায় পুকুর জলে।
বড় বাড়ির বড় মেয়ে
কেউ দেখেনা একটু চেয়ে।
দিন কেটে যায় পথের পানে
প্রার্থনা তার তাহার ধ্যানে।
ভেজা বসন এলো চুল
পড়া হয়না খোঁপায় ফুল।
আষাঢ় মেঘের ঠিক দুপুরে
নির্জনা সেই পুকুর ধারে।
ঢল বৃষ্টি মাথার উপর
কেউ নিলো না মনের খবর।
লোক এসেছে নায়র নিতে
প্রাণ সরেনা সেথায় যেতে।
বললো এসে অবশেষে,
যাবনা আর বাপের দেশে।
এখন আমার সবাই পর
আপন শুধুই স্বামীর ঘর।
শাওন গেলো ভাদ্রের শেষে
আইলো না সে আপন দেশে।
শীর্ণ দেহ মলিন মুখ
অপয়া কয় পাড়ার লোক।
লোকের কথা মনে লয়না
এত দুঃখ আর সয়না।
রাত্রি এলে শয়ন কালে,
দুচোখ ভাসে চোখের জলে।
অপেক্ষা তার তাহার তরে
দিন চলে যায় ধীরে ধীরে।
রত্না আফরোজ কবি।