Ads

আপনার সন্তানকে বন্ধু বানান

(প্রিয় বন্ধু এটি চতুর্দশতম পর্ব)
— নুরে আলম মুকতা
এর আগে আমরা STD বা Sex Transmitted Diseases  আলোচনায় এনেছিলাম বন্ধু। এখন তো ওরা ধীরে ধীরে বড় হয়ে যাচ্ছে তাই খেয়াল করে দেখবেন ওরা কিন্তু আগের মতো আর কাছে ঘেষতে চাইছে না। আমরাও একই রকম করতাম।  বয়ঃসন্ধি কাল টি এত ভয়ানক যে কোন শাসনই আপনার আর ওদের নিয়ন্ত্রন করতে পারবে না। তাহলে কি আমরা ব্যর্থ হয়ে যাবো? কখনই না। আমরা ব্যর্থ হয়ে হাল ছেড়ে দিলে আর কে ওদের মঙ্গল কামনা করবে ?  কেহ না। আমি একটি অপ্রিয় সত্য বলি, তাহলো একান্ত নিজের কাউকেও দয়া করে নিজ সন্তানের দায়িত্ব দিবেন না। যদি আপনার কিছু ক্ষতিও স্বীকার করতে হয়। আমি মনে হয় ইনিয়ে বিনিয়ে বার বার একই কথা বলছি। দয়া করে ক্ষমা করবেন। মানুষকে মানুষ বানানোর বিষয়টি এরকমই। বার বার প্রাণপণ চেষ্টায় তবেই মানুষ মানুষ হয়ে ওঠে। একজন সফল ছাত্র বা ছাত্রীর জীবন প্রবাহ ঘেটে দেখুন। কি বিস্ময়কর ত্যাগ আছে ! হয় মা নয়তো বাবার। সারাক্ষণ লেগে থাকা বা পরিশ্রমের ফলে ওরা ভালো আর নিরাপদ জায়গায় আরোহন করে। একটু  বা সামান্যই ভুলের খেসারত গুনতে হয় বিশাল মাসুলের মাধ্যমে। আমরা তো সবাই একমত যে, আমি যা ই হই, আমার আর সম্ভাবনা নেই। প্রাণপনে হলেও সমস্ত কিছু উৎসর্গ করে ছেলেমেয়ে মানুষ করে যাবো। তাহলে তো ওদের সামনের জঞ্জাল আমাদের পরিস্কার করতে হবে। ওরা তো আর জানে না ভাই কোনটি কুসুমাস্তীর্ণ আর কোনটি জঞ্জালময় পথ ? তবে কথা না বাড়িয়ে আজকের মুল আলোচনায় যাই। বলছিলাম সেক্স ট্রান্সমিটেড ডিজিজেস। বয়ঃসন্ধি কালে আমাদের ছেলে মেয়েরা ওদের গোপনাঙ্গের প্রতি আকৃষ্ট হতে শুরু করে। লোম গজায়। নিজেকে গুটিয়ে নেয়। বড় মানুষ মনে করে নিজেকে। অহেতুক লজ্জায় ফেলবেন কেন? আগেই কৌশল করুন কিভাবে আপনি এটি আলোচনা করবেন। আমি বলেছি বাবা মা একসাথে সমন্বয় করতে পারলে ভালো হয়। সুবিধা পাবেন। কেউ কি চায় যে আমাদের প্রিয় সন্তান সন্ততি অসম্পূর্ণ হয়ে থাকবে।
মানুষের ত্বকের ওপর গনোরিয়ার সংক্রমণ

আমরা চাই ওরা পুর্নাঙ্গ মানব নয়তো মানবী হোক। আমার এক বান্ধবীর জীবনে ঋতুচক্র নেই। ও ভালো একটি পদে আছে। সব জেনে ওর আর দ্বার পরিগ্রহ করা হয়নি। আমরা খুব কাছের কয়েকজন জানি। কিন্তু কি অসহায় দেখুন! সৃষ্টি কর্তার কাছে আমাদের অসহায় আত্মসমর্পণ করা ছাড়া কোন পথ নেই। আমরা বা চিকিৎসকেরা বলবেন হরমোনাল গ্রোথ যথাযথ হয়নি। কিন্তু সমাধানটি জটিল সমীকরণে গিয়েছে। এখানে ব্যালান্স আর দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা শরীরে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করবে। তাই আমাদের প্রার্থনা সকল ছেলেমেয়ে পূর্নতা পেয়ে মানুষ হোক। বয়ঃসন্ধিতে আমাদের সন্তান সন্ততি যেন কোনক্রমেই বিপথে না যায় তার জন্য আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে ওদের বন্ধু হয়ে কাছে রাখতে হবে। কিভাবে এটি সম্ভব? এ প্রশ্নের উত্তর কারো জানা নেই। এটি উদ্ভাবন আর প্রয়োগের দায় আমাদের নিতে হবে। মা বাবা ছাড়া এ দায় কেউ নেবে না। কয়েকটি যৌন রোগ আমরা আলোচনা আগেই করে রাখবো। বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ শুরু হবার আগেই এ কাজটি এগিয়ে রাখতে হবে। যৌনবাহিত রোগগুলো আবেগের মাত্রায় ধাক্কা মারে। এমন ধাক্কা দেয় যে ফেলেই দেয় আছড়ে। তাই আসুন এগুলোর ভয়াবহতা আমরা আমাদের সন্তান সন্ততিদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। STD এর মধ্যে একটি রোগ ভীতিকর। গনোরিয়ার প্রকোপ ইদানীং ভয়ানক। এটি একটি ব্যাকটিরিয়া বাহিত রোগ। ব্যাকটিরিয়াটির নাম Neisseria gonorrhea. বাংলায় নিশেরিয়া গনোরি বলতে পারি। ২৫ বছরের নীচে এটি সংক্রমনের হার বেশি। এটি মেলামেশার দুই থেকে দশ দিন পর স্পষ্ট আচরন প্রদর্শন করা শুরু করে। প্রচন্ড চুলকাতে পারে। যৌনাঙ্গ ও এর চারপাশ ক্ষতিগ্রস্ত করে। ডিসচার্জ দেখা দিতে পারে পুরুষ নারী উভয়ের ক্ষেত্রে। রোগটি নিরাময় যোগ্য। কিন্তু বিস্তৃতি ভয়ানক। পুরুষের ক্ষেত্রে শুক্রাশয় ও ভাস ডিফারেন্স যুক্ত নালী ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে আর নারী শরীরে যোনীপথ চরম ক্ষতিগ্রস্ত করে। শরীরের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে। চর্মরোগ সহ হৃদপিণ্ডও আক্রমন করে। আমরা এগুলো খালি চোখে দেখতে পাই না। সবচেয়ে ভীতিকর বিষয়টি হলো এ রোগগুলো মানসিক প্রতিক্রিয়া ফেলতে পারে একটি চমৎকার চঞ্চল বয়ঃসন্ধি কালের ছেলে মেয়ের মনোজগতে। যা পরবর্তিতে বিভিন্ন জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে। অবৈধ সংসর্গ থেকে বাঁচার জন্য আমরা আগে প্রস্তুতি নিই। আমি আগে বলেছি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা আর ধর্মীয় জীবন ব্যবস্থা এগুলো থেকে আমাদের সন্তান সন্ততিদের রক্ষা করবে শতভাগ । যৌন রোগগুলো জানা থাকলে অবৈধ সংসর্গ করার আগে যে কেউ দশবার ভেবে দেখবে, পাত্র অথবা পাত্রীটি নিরাপদ কি না। আমরা কি এ দায়িত্ব এড়িয়ে যাবো ?

(চলমান)
লেখকঃ সাহিত্যিক,শিক্ষক ও সহ-সম্পাদক,মহিয়সী।
আরও পড়ুন