Ads

কালাম-এ-ইকবাল

অনুবাদ : আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু
“গুলামি মে না কাম আ’তি হ্যায় শমশিরেঁ, না তদবীরেঁ,
জো হো জওক-এ-ইয়াকিন পয়দা, তো কাট জাতি হ্যায় জঞ্জীরেঁ।”
[দাসত্বের মাঝে তরবারি বা কোনো উপায় কাজে লাগে না,
পরীক্ষার দৃঢ়তা সৃষ্টি হলে খান খান ভেঙে পড়বে শেকল]
“হাাঁসি আ’তি হ্যায় মুঝে ‘হাসরত-এ-ইনসান’ পর,
গুনাহ করতা হ্যায় খুদ, লানত ভেজতা হ্যায় শয়তান পর।”
[যখন কোনো অনুশোচনাকারীকে দেখি তখন আমি হাসি,
কারণ সে নিজে পাপ করে, আর অভিশাপ দেয় শয়তানকে]
“সিরফ ‘এহসাস-এ-নিদামত’ এক ‘সাজদা-অর-চশম’ তর,
এ্যয় খুদা কিতনা আসান হ্যায় মানানা তুঝ কো।”
[শুধু অনুতাপের অনুভূতি, সিজদা বা চোখের পানি!
হে খোদা, তোমাকে বোঝানো কতই না সহজ]
“খুদী কো বূলন্দ ইতনা, ইতনা কে হর তক্বদীর সে পেহলে
খুদা বান্দে সে খুদ পুঁছে, বা’তা তেরি রেজা ক্যয়া হয়।”
[নিজের সত্তাকে এতটাই শক্তিশালী করো,
যাতে আল্লাহ স্বয়ং বান্দা প্রশ্ন করেন, ‘বলো তুমি কী চাও]
“তেরি দুয়া সে ক্বাজা তো বদল নেহি সাকতি,
মগর হ্যায় ইস সে ইয়ে মুমকিন তু বদল জায়ে।”
[তোমার প্রার্থনায় তো অদৃষ্টের পরিবর্তন হবে না,
কিন্তু এর ফলে তোমার মাঝে পরিবর্তন আসতে পারে]
“তেরে আজাদ বান্দো কি না ইয়ে দুনিয়া না ও দুনিয়া,
ইয়াহা মরনে কে পাবন্দি, ওয়াহা জিনে কা পাবন্দি।”
[তোমার স্বাধীন বান্দার জন্য এ পৃথিবী বা অন্য পৃথিবী একই,
এখানে দাসত্ব মৃত্যুর জন্য, আর ওখানে বাঁচার জন্য দাসত্ব]
“মসজিদ তো বানা দি শব ভর মে ইমান-কে-হারারাত ওয়ালো নে,
মন আপনা পুরানা পাপি হ্যায় বরসোঁ মে নামাজি বন না সাকা।”
[ঈমানের দাবীদাররা তো রাতারাতি মসজিদ বানিয়ে ফেলেছে,
পুরনো পাপির মন নিযে বহু বছরেও নামাজি হতে পারিনি]
“নেহি সাজদে কিয়ে হাম নে কভি গায়রো কি চৌকাঠ পর,
হামে জিস কি জরুরাত হো খুদা সে মাঙ লেতে হ্যায়।”
[কখনও আমি অন্যের দরজায় গিয়ে সিজদায় অবনত হইনি,
কোনোকিছুর প্রয়োজন হলে আমি আল্লাহর কাছে চেয়ে নেই]
“ফানা কর আপনি জিন্দেগি কো রাহ-এ-জুনুন মে এ্যয় জওয়ান,
তব কারে গা ইবাদত জব গুনাহ করনে কে তাকত না হোগি।”
[যে যুবকগণ, যৌবনের উন্মাদনায় নিজেকে নি:শেষ করছো,
যখন পাপ করার শক্তি থাকবে না ইবাদত তখন করবে!]
“খুদা কি আশিক তো হ্যায় হাজারোঁ, বান্নু মে ফিরতে হ্যায় মারে মারে,
ম্যায় উস কা বান্দা বনুন গা জিস কো খুদা কে বান্দো সে প্যায়ার হ্যায়।”
[হাজারো আল্লাহ-ভক্ত মরুপ্রান্তরে দিশেহারার মত ঘুরছে,
আমি তাঁর বান্দা হতে চাই, যে আল্লাহর সৃষ্টিকে ভালোবাসে]
কবি মোহাম্মদ ইকবাল (জন্ম: নভেম্বর ৯, ১৮৭৭, মৃত্যু: এপ্রিল ২১, ১৯৩৮)। পাঞ্জাবের পাকিস্তান অংশের শিয়ালকোটে উন্মগ্রহণ করেন। তিনি শিয়ালকোট, লাহোর, ইংল্যান্ড ও জার্মানিতে পড়াশোনা করেন। তিনি কবি-লেখক, দার্শনিক, আইনজীবী, রাজনীতিবিদ ও আইনপ্রনেতা ছিলেন। ১৯২৮ সালে তিনি পাঞ্জাব আইনসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৩০ সালে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগের এলাহাবাদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯৩১ ও ১৯৩২ সালে ব্রিটিশ সরকারের আয়োজনে লন্ডনে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। তিনি উর্দু ভাষার অন্যতম সেরা কবি। তাঁকে পাকিস্তানের স্বপ্নদ্রষ্টা কবি বলা হয়। পাকিস্তানের স্বাধীনতার ১০ বছর আগে তিনি মারা যান। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান স্বাধীন হলে তাঁকে পাকিস্তানের জাতীয় কবির মর্যাদা প্রদান করা হয়। তাঁকে পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতা বলে অনেকেই ভুল করেন। পাকিস্তানের জাতীয় সঙ্গীতের রচয়িতার নাম হাফিজ জলন্ধরী (জন্ম : জানুয়ারী ১৪, ১৯০০, মৃত্যু : ডিসেম্বর : ২১, ১৯৮২)
আরও পড়ুন