Ads

মহীয়সীর কলাম

মহীয়সীর কলাম

-নুরে আলম মুকতা

ছোট্ট মামনি আমাকে প্রশ্নবাণে জর্জরিত করে দেয়। কখনও কখনও খেই হারিয়ে ফেলি। নিজের ভান্ডারে না থাকলে তো অনুসন্ধান ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না। যতিচিহ্ন পড়াতে গিয়ে মহাযন্ত্রণায় পতিত হলাম। ও নাছোড়বান্দা। ওর কথা হলো তুমি আমাকে বলেছো আমাদের বাংলা ভাষার যত সৌন্দর্য তার সবকিছুই বিশ্বকবির লেখায় আছে। তিনি ভাষার গুরু সাহিত্যেরও গুরু। ঠিক আছে। কিন্তু চর্যাপদ আমাদের প্রথম আবিস্কৃত বাংলা ভাষার রত্ন ভান্ডার। বাংলা বিবর্তিত হয়েছে আমাদের মহাপন্ডিতদের হাত ধরে। যতিচিহ্ন বসালেন প্রথম ড.উইলিয়াম কেরী। এজন্যই সব যতিচিহ্নই ইংরেজির সাথে মিলে গেলো!
ভাষা চলমান বিশ্বকোষ অতিক্রম করে মন ও প্রাণের মধ্যে প্রবেশ করে ঠিকই। কিন্তু এটিকে লেখ্য রূপ দিতে গিয়ে একটি বিধিবিধান লাগবেই। না হলে এটির অপব্যবহার হতে পারে। মনের ভাব সম্পূর্ণ প্রকাশ করার জন্য ভাষা হলো মা। মা শব্দটি কোন লিঙ্গের এ বিষয়ে যেমন তর্ক কেউ করেনি। তেমনি স্থান কাল পাত্র ভেদে ভাব পুরো প্রকাশের ক্ষেত্রে বিজ্ঞ পন্ডিতগন একমত হয়ে একটি বিধান অনুসরণ করেছেন। ড.মুহম্মদ শহীদুল্লাহ!  যাকে চলিষ্ণু বিদ্যাকল্পদ্রুম বা চলন্ত বিশ্বকোষ বলা হয়েছিলো,  তিনি ভাষার সঠিকতা যাঁচাই করার ক্ষেত্রে লিঙ্গের প্রতি গুরুত্ব দেননি। তিনি বার বার উচ্চারন করেছেন ভাষার সৌন্দর্য আর প্রকাশ ভঙ্গীর সরলতার বিষয়ে। আমরা ইদানীং বেশ কিছু সার্বজনীন ব্যাকরণ যা স্ত্রী বা পুরুষের সঙ্গে যুক্ত তা নিয়ে টানাটানি করি। ভাব প্রকাশের ক্ষেত্রে যেখানে যেটি শালীন তা ঠিক ঠিক স্থানে সন্নিবিষ্ট রেখে সামনে এগুলে দারুন হয়ে উঠবে আমাদের বাংলা মায়ের আঁচল। এখানে কাউকে খাটো করা হয়নি।  প্রথমে শুরু করেছিলাম মায়ের প্রশ্নের উত্তর খুঁজে। আমরা হৃদয়বান বন্ধুদের সবিনয়ে অনুরোধ করি একটু পেছনে যাবেন। মহাজ্ঞানী মহাজনেরা যে পথে গিয়েছেন আমরা তাঁদের অনুসরণ করি। আমার পরম শ্রদ্ধেয় ড.হুমায়ুন আজাদের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে আজ বিদায় নেবো, তিনি বলেছেন, ” ভাষাচর্চা একটি সুকোমল আর নিস্পাপ বুদ্ধিবৃত্বিক কলা। এখানে ভুল বোঝাবুঝির কোন অবকাশ নেই। নিজের গতিতে চলমান আন্তরিক উচ্ছাস । “

০৯.০১.২০২১

নুরে আলম মুকতা,কবি,সাহিত্যিক,অনুবাদক ও সহ-সম্পাদক,মহীয়সী।

আরও পড়ুন