বড় ক্লান্ত দেহে একটু অবসরে বসে
ভাবছে সুভাষিনী এ কেমন জীবন
এ কোন ধরনী যার পায়না কোন অর্থ খুঁজে
একটা উদার হৃদয়, একটুখানি না’হয় মানবিক প্রণয়
এনে দেয়না যে ধরনী, তার সাথে কেমনে দেবো
এই অনিশ্চিত স্বপ্নলোকের দূর্গম পথ পাড়ি!
নিরালায় বসে বার বার মনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে
জানতে চায় সুভাষিনী “কোথায় আছি আমি?”
“এ কোন জগতে আমায় দিয়েছে নিবাস,”
বিধাতার কৌশলের একি অদ্ভুত পরিহাস!
শিরোচ্চ করে পারিনা কোথাও চলতে,
মনের জোরে না পারি কিছু বলতে,
অন্যায়ের তরে সঞ্চিত রাখা শত শত ক্ষোভ
হৃদয়টাতে যে বড় বেশি ধরেছে এবার ঘুন।
পারেনা রুখতে ঘরের অবিচার, না পারে থামাতে
বহির্জগতের যালিমী অত্যাচার,
সইতে ও পারেনা অন্যায় অবিচার, তাই
অন্তরে বইছে তার অসহ্য হাহাকার,
বজ্রাহতের মত জ্বালাতন বুকে নিয়ে
সিংহের কণ্ঠে করছে সে চিৎকার।
তবু পাথরের দেয়ালে হোঁচট খেয়ে সেই আওয়াজ
বিধছে যে বক্ষ মাঝে প্রতিধ্বনি হয়ে বারবার,
কখনো নিরব নিস্তেজ হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে আনমনে
খোলা বাতায়নের গ্রীলগুলি ধরে কি যেন সে ভাবে।
কখনো চেয়ে থাকে নির্বাক নয়নে
মনে মনে বলে কি আর হবে বেঁচে?
ফাঁসির মঞ্চটি নাকি নেব আপন করে?
না’হয় হবে কিছু ধিক্কার নয়ত হতে পারে সামান্য
একটু সমাচার পত্রিকার পাতা ভরে,
কিংবা টিভির পর্দায়-হবে হয়ত দুটি একটি
ক্লান্তিকর অমার্জিত টকশোয়ের কিছু বাজি
কিইবা আসে যায় তাতে, ফাঁসিতো একটাই হবে।
তারপর কে পারবে তারে আরেকটি মৃত্যুদন্ড দিতে ?
আজ কালতো তার ফাঁসি হচ্ছে ক্ষণে প্রতি ক্ষনে
তা’ ই যদি সে পারবে সহিতে অকাতরে
তবে কেনই’বা মাত্র একটি দন্ডকে
পরবেনা সে নির্ভয়ে মেনে নিতে !
যদি কভূ পারে প্রচণ্ড আঘাতের কম্পনে
বাসুধাটির বুকে এতটুকু মানবতার নিশান উড়াতে
এই একটি মৃত্যুদন্ড যদি ভেঙ্গে দিতে পারে
যালিম পিচাশদের সীমালংঘনি রক্ত লোলুপ বাহূ- দুটিকে।
রওশন চৌধুরী – কবিও সাহিত্যিক।