বর্ষার অবিশ্রান্ত রিমঝিম গানে যখন
অলস ক্লান্তিতে বিষণ্ণ হয় মন,
তখনই শ্রাবণের শেষে স্নিগ্ধ রূপ মাধুর্যে
শ্বেত শুভ্রতা নিয়ে শরতের হয় আগমন।
বর্ষার উর্বর সতেজ মাটিতে
সোনার ফসল ফলাতে,
ঐশ্বরিক আভাসে শরৎ আসে কৃষকের
স্বপ্নকে পূর্ণতা দিতে।
বাংলা পরিণত হয় সবুজ শ্যামলীমার
অপরূপ লীলাভূমিতে।
প্রাচুর্য আর প্রশান্তির অঙ্গীকারে
শরৎ হেমন্তকে কাছে ডাকে,
আগাম ফসলের বার্তায় শরতে কৃষক
ভবিষ্যতের উজ্জ্বল স্বপ্ন ছবি আঁকে।
সকল অবসাদ অবসানের কল্পনায়
কৃষাণী বিভোর থাকে,
শারদ আকাশের নীল সাদা শুভ্রতার
ছোঁয়া শান্ত নদীর বুকে।
রূপার মতো চিকচিক করে
বালুচরি নদীর দু’কূল
মাঝখানে এঁকে বেঁকে চলে বহতা
নদীর টলটলে স্বচ্ছ জল,
দু’ধারে ফোটে থাকে গুচ্ছ গুচ্ছ কাশফুল
শরতের মৃদু-মন্দ হাওয়ায় মাথা দুলিয়ে নাচে
এ যেন রুপসী বাংলার অবয়বে
বঙ্গ ললনার হেলেদুলে চলাচল।
কৃষ্ণমেঘ শূন্য শরৎ নিশি অম্বরে
অগ্নিরূপ লক্ষ নক্ষত্রের মেলা,
মাঝে মাঝে পেঁজাতুলো মেঘের
দুরন্ত ছুটাছুটির খেলা।
মোহনীয় রূপ লাবন্যে ভরা
শারদীয়া জোৎস্না রাত,
কচি সবুজ পাতায় হালকা
শিশিরের ছোঁয়ায় ঝকঝকে রোদেলা
ঝিলিমিলি শারদ প্রভাত।
নতুন ধানের মঞ্জুরী আর ঝরা বকুলের ঘ্রাণে
আকুল উন্মনা ভাব আসে শেষ
শরতের দ্বিপ্রহর সমীরণে।
পদ্ম শাপলার রঙে সেজে শরৎ সরোবর
যেন খিলখিলিয়ে হাসে,
রৌদ্র উজ্জ্বল নীলাম্বরে গ্রাম্য কিশোর
দলবেঁধে ঘুড়ি উড়ায় শারদীয়া বাউরি বাতাসে ;
এমনই নৈসর্গিক শোভাময়ী রূপ সাথে
নিয়ে আমাদের বাংলাদেশে শরৎ আসে।
শাহনাজ পারভীন সানি- কবি