মোহাম্মদ জামাল উদ্দীন
ছবিতে দেখা যাচ্ছে এক প্রবাসী ভাই কর্মস্থলে খাবার খাচ্ছে। এমন ছবি দেখতে যে কারো খারাপ লাগবে। প্রবাসীর জন্য মায়া লাগবে। আমাদের দেশের অর্থমন্ত্রী একবার বলেছিলেন, প্রবাসীদের জন্য একটি জায়গা দরকার যেখানে বসে তারা কাদঁতে পারে। অপ্রিয় হলেও সত্য যে প্রবাসীরা এখনো কাঁদার জন্য সকোরের পক্ষ থেকে কোন জায়গা পায়নি।
২০০৩ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রবাসে কাটিয়েছি। ব্যাচেলার বাসায় খাবার নিজেরা রান্না করে খাবার খেয়েছি। বাসায় রান্না না হলে হোটেলে খেয়েছি। বাসা থেকে অফিস কাছে ছিল বলে কর্মস্থলে খাবার নিয়ে যেতে হয়নি। কিছু কিছু রুমমেটকে কর্মস্থলে খাবার নিয়ে যেতে দেখেছি। তারা রাতে খাবার খেয়ে দুপুরের জন্য পলিথিনে ভাত ও তরকারী রেখে ফ্রিজে রেখে দিত। দুপুরে খাবার কর্মস্থলে ঠান্ডা অথবা গরম করে খেয়ে নিত। তবে সব জায়গায় গরম করার সুযোগ থাকে না। আরাম করে বসে খাবার খাওয়ার পরিবেশও থাকে না। প্রবাস জীবনের এমন দৃশ্য হয়ত প্রবাসী পরিবারের কোন সদস্য দেখেনি অথবা তারা দেখতেও চায় না। প্রবাসে কী করে, না করে প্রবাসীর পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি জানার আগ্রহও কম দেখায়। তারা মনে করে
প্রবাস মানে প্রবাস।
প্রবাস মানে টাকা।
মাস শেষে টাকা পেলেই হল।
প্রবাসী
প্রবাসে কী করে,
কী খায়,
কীভাবে থাকে,
সুস্থ নাকি অসুস্থ
জানার কী দরকার আছে?
প্রবাসীরা দুর প্রবাসে পরিবারের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে বেশি বেশি টাকা পাঠাতে ব্যস্ত থাকে। প্রবাসীরা নিজেদের সুখ-শান্তিকে বিসর্জন দেয়। অশান্তিতে থাকলেও পরিবারকে বুঝতে দেয় না। প্রিয়জন ছেড়ে দুর প্রবাসে বসবাস করে দুঃখে-কষ্টে নিরবে চোখের পানি ফেলে। কাউকে বুঝতে দেয় না। সুখ বলতে বছর শেষে অথবা দুই বছর শেষে অথবা তিন বছর শেষে অথবা বহু বছর পরে কিছু দিনের জন্য দেশে এসে পরিবারের সদস্যদের সাথে সময় কাটানো। অনেকের কপালে তাও জুটে না। বিভিন্ন টেনশন ও রোগে প্রবাসেই মরতে হয়। হায়রে প্রবাস জীবন।
লেখকঃ কলামিস্ট ও সাবেক আরব আমিরাত প্রবাসী