মন্ট্রিয়েলে এসেছি প্রায় তিনবছর। এখানকার আবহাওয়া, শীতের তীব্রতা, অবিরামধারায় তুষারপাতের মাঝে নিজেকে মানিয়ে নিতে এখনো পেরে উঠেনি। তবুও জীবন যাচ্ছে কেটে জীবনের নিয়মে।
গত তিনবছরে এখানকার অনেককিছুই ভাল লেগেছে। বিশেষতঃ যোগাযোগ ব্যবস্থা। বলা হয়ে থাকে কানাডার সবচেয়ে সুশৃঙ্খল যোগাযোগ ব্যবস্থা মন্ট্রিয়েলে। এখানে আসার পর হতে কোথাও কোনো ট্রাফিক পুলিশ চোখে পড়েনি। কিন্তু তাই বলে কোন গাড়িচালক ট্রাফিক আইন অমান্য করে গাড়ি চালায় তাও শুনিনি,দেখিনি ।
যাহোক লেখা শুরু করেছিলাম ট্রাফিক পুলিশ নিয়ে। বাস্তবে এখানে কোন ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াই শহর চলে। আমি কৌতূহলী হয়েছিলাম স্কুল বাচ্চাদের পথ পারাপারে সাহায্যকারী স্কুলগার্ডদের নিয়ে। গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আমার ক্লাস শুরু হলে খুব ভোরে ছুটতে হতো ক্লাসে। রয়েল মনট মেট্রো স্টেশনে নেমে ৭/৮ মিনিট হেঁটে ক্লাসে যেতাম। আসা যাওয়ার সময় school crossing বা children crossing লেখা কোনো চার রাস্তার মোড়ে চোখে পড়তো লেমন কালারের ভেস্ট পরা তরুণী বা মধ্যবয়স্ক মহিলাদের। যাদের হাতে stop / arret লেখা প্ল্যাকার্ড ধরা থাকে। তাদের কাজ হচ্ছে স্কুল শুরুর সময় থেকে ছুটির পর বাচ্চাদের রাস্তা পারাপারে সাহায্য ও তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
‘যারা এসব ভেস্ট পরে রাস্তা পারাপারে সহায়তা করে তারা আসলে বিভিন্ন লঘু অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত আসামী, যাদের কমিউনিটির সহায়তায় এমন দায়িত্ব দেয়া হয় এবং এই দায়িত্ব পালনটা হয় আওয়ার বেসিস, এটা তাদের জন্য মেন্ডেটরি । অবশ্যই এভাবে কমিউনিটির সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করে ক্রমশ তারা হয়ে ওঠেন আরো অনেক বেশি দায়িত্ববান এবং সমাজ সচেতন ।’
লেখকঃ কলামিস্ট, ভ্রমণগদ্য লেখক ও প্রবাসী বাংলাদেশী,ডিলিপি, মন্ট্রিয়েল