।। ড. মোহাঃ ইয়ামিন হোসেন ।।
দেশ-প্রেমিক, ঈমানদার এবং বিশ্বমানের গবেষকেরাই হোক আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভিভাবক তথা ভিসি এবং প্রো-ভিসি! যাঁরা এ প্রজন্মকে লিডার বানাবে গবেষণা, প্রশাসন, উন্নয়নসহ সকল ক্ষেত্রে! কারণ একজন লিডারই পারে পরিবর্তন করতে!
বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি জাতির ভবিষ্যৎ গঠনের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র। এটি শুধুমাত্র জ্ঞান বিতরণের স্থান নয়, বরং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি এবং জাতিকে সমৃদ্ধ করার ক্ষেত্র। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভিসি (উপাচার্য) এবং প্রো-ভিসি (উপ-উপাচার্য) হিসেবে এমন ব্যক্তিদেরই দরকার যারা সত্যিকারের দেশপ্রেমিক, ঈমানদার এবং গবেষণায় বিশ্বমানের অবদান রাখতে সক্ষম।
১. দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব:
ভিসি এবং প্রো-ভিসি হিসেবে এমন নেতাদের নির্বাচন করা উচিত যারা দেশপ্রেমের আদর্শে উজ্জীবিত এবং দেশের কল্যাণে নিবেদিত। তারা কেবলমাত্র নিজস্ব স্বার্থ নয়, বরং দেশের উন্নতি, শিক্ষার্থীদের কল্যাণ এবং সমাজের অগ্রগতির জন্য কাজ করবেন।
২. ঈমানদারতা ও নৈতিকতা:
নেতৃত্বের ক্ষেত্রে নৈতিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভিসি এবং প্রো-ভিসি হিসেবে এমন ব্যক্তিদের প্রয়োজন যারা নিজেরা নৈতিকভাবে শক্তিশালী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি সিদ্ধান্তে ঈমানদারতা বজায় রাখবেন। তারা যেন স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং ন্যায়বিচারকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেন।
৩. গবেষণায় উৎকর্ষ:
গবেষণা হলো জ্ঞানের সৃজন এবং নতুন উদ্ভাবনের মূল ভিত্তি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং প্রো-ভিসি হিসেবে এমন ব্যক্তিদের প্রয়োজন যারা গবেষণায় বিশ্বমানের উদাহরণ স্থাপন করতে পারেন এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণায় উদ্বুদ্ধ করতে পারেন। তারা যেন দেশের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী গবেষণার ক্ষেত্রগুলোকে অগ্রাধিকার দেন এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় সুবিধা এবং উৎসাহ প্রদান করেন।
আরও পড়ুন-
৪. প্রশাসনিক দক্ষতা:
বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনার জন্য প্রশাসনিক দক্ষতা অপরিহার্য। ভিসি এবং প্রো-ভিসি হিসেবে এমন ব্যক্তিদের নির্বাচন করা উচিত যারা প্রশাসনের জটিলতা ও চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবেলা করতে সক্ষম। তারা যেন শিক্ষকদের, শিক্ষার্থীদের, এবং অন্যান্য স্টাফদের মধ্যে সুষ্ঠু সমন্বয় রক্ষা করতে পারেন এবং প্রতিটি ক্ষেত্রে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করেন।
৫. উন্নয়ন ও অগ্রগতি:
বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন এবং অগ্রগতির জন্য ভিসি এবং প্রো-ভিসির দৃষ্টিভঙ্গি এবং কর্মপরিকল্পনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা যেন বিশ্ববিদ্যালয়কে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও প্রযুক্তির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তুলতে সক্ষম হন এবং শিক্ষার মান বৃদ্ধির জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালান।
৬. নেতৃত্বের পরিবর্তনশীল ভূমিকা:
একজন সত্যিকারের লিডারই পারে পরিবর্তন আনতে। ভিসি এবং প্রো-ভিসি হিসেবে যদি যথার্থ নেতৃত্ব পাওয়া যায়, তবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হবেন। এ পরিবর্তন শুধুমাত্র শিক্ষার্থীদের নয়, পুরো সমাজকে প্রভাবিত করবে।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে এই নেতৃত্বের ওপর। দেশপ্রেমিক, ঈমানদার, এবং বিশ্বমানের গবেষকরা যদি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভিভাবক হন, তবে নিশ্চিতভাবেই আমরা জাতি হিসেবে আরও শক্তিশালী, জ্ঞানবৃদ্ধ, এবং উন্নত হতে পারবো। মহান আল্লাহ দয়া করে ভালমানুষকে ভিসি, প্রো-ভিসি হিসেবে কবুল করুন। আমিন
লেখকঃ প্রাবন্ধিক এবং অধ্যাপক, ফিশারীজ বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
…………………………………………………………………………………………………………………………
মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প ও কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে- [email protected] ও [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে । আসুন ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।