Ads

কেমন ছিলেন মুসলিমদের শাসকরা?।। ১ম পর্ব

।। রাইন আমিন ।।

পঞ্চম খুলাফায়ে রাশিদা, উমাইয়্যা খলীফা উমর বিন আব্দুল আযীয, যিনি ২য় উমর নামে পরিচিত, যখন ইন্তেকাল করলেন, রাষ্ট্রের উলেমারা তার স্ত্রীর নিকট সমবেদনা প্রকাশ করতে এলেন। তারা তার কছে উমর বিন আব্দুল আযীয সম্পর্কে কিছু বলার অনুরোধ জানালেন। তারা বললেন,

“উনার সম্পর্কে আমাদেরকে কিছু বলুন। একজন স্বামী সম্পর্কে তার স্ত্রীই সবচেয়ে ভালভাবে জ্ঞাত।”

তার স্ত্রী বললেন,

“আপনাদের কারও থেকেই তার সালাত এবং সাওম বেশি ছিল না। কিন্তু আল্লাহর কোনও বান্দাকেই আমি তার মত তাক্বওয়া সম্পন্ন দেখিনি। তার দেহ এবং আত্মাকে তিনি যেন তার জনগণের জন্য উৎসর্গ করে গেছেন। সারাদিন তিন তাদের বিষয়াদি দেখাশোনা করতেন। আর রাত হলে নিজের কাজ করতেন।

একদিন সন্ধ্যায় সব কাজ শেষ হওয়ার পর তিনি নিজের কুপি চাইলেন যার তেলের খরচ তিনি নিজে বহন করতেন (উমার বিন আব্দুল আযীয রহ. ব্যক্তিগত কাজের জন্য সরকারি কোষাগারের বাতি ব্যাবহার করতেননা)। এরপর আল্লাহর নিকট সিজদা দিলেন, এরপর সারারাত বসে বসে কাঁদলেন, ভোর হওয়া পর্যন্ত। আবার পরদিন রোজা রাখলেন।

আরও পড়ুন-

ইমাম বুখারী, এক চোর এবং এক হাজার স্বর্ণমুদ্রা

আমি উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম, “ও আমীরুল মুমিনীন! এমন কিছু কি হয়েছে, যে কারণে আপনি এতটা পেরেশান হয়ে পড়েছেন?”

তিনি বললেন, “আমি সারাদিন ভাল-মন্দ, পরিচিত-অপরিচিত, ভিক্ষুক, উচ্ছন্নে যাওয়া লোকজন, ফকীর-মিসকীন, কয়েদী আসামী, এবং তাদের মত যত লোক আছে এই রাষ্ট্রে, সবার ব্যাপারগুলো সমাধা করতে ব্যাস্ত ছিলাম। আমি জানি, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এদের সবার ব্যাপারে আমাকে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন, এবং মুহাম্মদ সা. তাদের ব্যাপারে স্বাক্ষ্য দিবেন। আমার ভয় হয়, আল্লাহর সামনে যখন আমি দাঁড়াব, তখন আমার কোন অযুহাত থাকবেনা, এবং মুহাম্মদ সা. এর সামনে আমার কোন সাফাই থাকবেনা।”

তার স্ত্রী আরও বলেন,

“উমার যখন আমার সাথে শয্যা গ্রহণ করতেন, যেখানে একজন স্বামী তার স্ত্রীর নিকট প্রশান্তি খুঁজে নেয়, এর মাঝেও জনগণের কোন বিষয় যদি তার মনে পড়ত, তিনি খুবই বিমর্ষ হয়ে পড়তেন, যেন কোন পাখি পানির মধ্যে পড়ে গেছে। তারপর তিনি গুমরিয়ে গুমরিয়ে কাঁদতে থাকতেন, যতক্ষণ না আমি তার শরীরে চাদর পেঁচিয়ে দিতাম। তিনি বলতেন,

” আল্লাহর কসম! কতই না উত্তম হত, যদি পূর্ব আর পশ্চিমের মাঝে যেই দূরত্ব, জনগণের দায়িত্ব এবং আমার মাঝেও ঐ পরিমাণ দূরত্ব হত!”

আরও পড়ুন-

ইতিহাসের অজ্ঞতা গোলামী ডেকে আনতে পারে ।। ১ম পর্ব

উমার ইবন আব্দুল আযীয, তিনি ছিলেন ইসলামের প্রথম মুজাদ্দিদ, যিনি বাইয়াত ব্যাবস্থাকে সঠিকভাবে প্রণয়ন করেন এবং উমাইয়্যা খলীফাদের বিচ্যুতিকে সংশোধন করে খিলাফাহ রাশিদার যুগ ফিরিয়ে আনেন।

চলবে…

লেখকঃ প্রাবন্ধিক

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি  ।  আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে লেখক রাইন আমিন 

আরও পড়ুন