Ads

মসজিদপ্রেমী আতিকা বিনতে যায়েদ (রা:)

।। মারজিয়া তাবাসসুম ।।

“আমি প্রতিজ্ঞা করছি যে আমার চোখ আপনার জন্য কাঁদতে ছাড়বে না এবং আমার ত্বক ধুলোয় ঢাকা থাকবে।” হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আবু বকর (রা) এর মৃত্যুতে শোকাভিভূত হয়ে এই শোকগাথা রচনা করেন তার স্ত্রী আতিকা বিনতে যায়েদ।

আতিকা বিনতে যায়েদ নামটি শুনলেই প্রথমে মনে পরে যায় তার কবিত্ব,সৌন্দর্য্য এবং শহীদদের পত্নী এছাড়াও মসজিদপ্রেমী হিসেবে তার গুন ও উপমার কথা। আতিকা বিনতে যায়েদ মক্কার বিখ্যাত কুরাইশ বংশের বনু আদি গোত্রের কন্যা ছিলেন।তার পিতার নাম যায়েদ ইবনে আমর ও মাতার নাম উম্মে কুরজ সাফিয়া। এবং তার ভাই ছিলেন সাইদ ইবনে যায়েদ যিনি আশারায়ে মুবাশশিরা ছিলেন।এছাড়াও আতিকার সবচেয়ে বড় পরিচয় ছিলো তিনি খুলাফায়ে রাশেদিনের দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর (রা) এর স্ত্রী।

১৪০০ বছর আগেও যে নারীরা কলম নিয়ে তার কবিত্ব প্রকাশ করেছে।তা কেবল ইসলামের ইতিহাসে চোখ বুলালে দেখা যায়।রাসূল (সা) এর মৃত্যুতে শোকগাথা রচনা করছিলেন তিনি এবং তার স্বামীদের মৃত্যুতেও শোকগাথা রচনা করতেন।ইসলামের ইতিহাসে মসজিদপ্রেমী নারী হিসেবে সমাধিক পরিচিতি ছিলো তার।এছাড়াও তিনি পাচঁটি বিয়ে করে ইসলামে নারীর মর্যাদাকে উচ্চ আসীনে বসিয়েছেন।যেখানে নারীদের তালাক কিংবা বিধবা হলে সমাজে নিচু চোখে দেখা হতো হেয় প্রতিপন্ন করা হতো সেখানে আতিকা বিনতে যায়েদ বিভিন্ন সময়ে স্বামী শহীদ কিংবা ইদ্ধত পালন করে বিয়ের পিড়িতে বসেছেন।আর এভাবেই বর্তমান সমাজের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন-

উপকারী জ্ঞানার্জনে মায়েদের ভূমিকা

 

ইতিহাসবিদ কেউ কেউ বলেছেন, “কেউ যদি শহীদ হতে চায় তাহলে সে যেনো আতিকাকেই বিয়ে করেন।”

অত:এব যেসব মুসলিম শহীদের তামান্না বুকে লালিত করে সে যেনো আতিকা বিনতে যায়েদ (রা) কে বিয়ে করেন।এমন মন্তব্যের কারন হচ্ছে তার সকল স্বামীই শহীদ হয়েছিলেন।

তিনি মসজিদে ইবাদত পালন করতে পছন্দ করতেন।এবং তিনি তার স্বামীদের অনুমতি নিয়েই মসজিদে ইবাদত করতেন।যদিও কারো কারো মতে তার স্বামীদের মসজিদে ইবাদত পালন পছন্দ করতেন না কিন্তু রাসূল (সা) এর সময় নারীরা মসজিদে ইবাদত করতেন এবং তিনি বাধা প্রদান করেন নি তাই তার স্বামী কেউ-ই আতিকা (রা) কে মসজিদে ইবাদত নিয়ে বাধাগ্রস্ত করেন নি।

হযরত ওমর (রা) যখন মসজিদে শাহাদাত বরন করেন সেইদিনও মসজিদে ইবাদতের জন্য আতিকা বিনতে যায়েদ মসজিদে অবস্থান করেছিলেন। ৬৭২ সালের প্রথম মুয়াবিয়ার শাসন আমলে শোকগাথা ও মারসিয়ার কবি আতিকা বিনতে যায়েদ (রা) ইন্তেকাল করেন।

লেখকঃ প্রাবন্ধিক ও শিক্ষার্থী, ইসলামিক স্টাডিজ, ইডেন মহিলা কলেজ, ঢাকা

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল, আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ গল্প ও কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেইজ মহীয়সী/Mohioshi-তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হ্যাঁ, মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল-

[email protected] ও [email protected] -এ; মনে রাখবেন, “ধন দৌলত খরচ করলে কমে যায়, কিন্তু জ্ঞান বিতরণ করলে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়”। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনি জ্ঞান দান করেন।” (সহিহ বুখারী- ৭১, ৩১১৬, ৩৬৪১, ৭৩১২, ৭৪৬০; মুসলিম- ১০৩৭; ইবনে মাজাহ- ২২১) ।

মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম; আজই আপনি যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে।  আসুন, ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ, সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি। আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমীন।

আরও পড়ুন