Ads

বঙ্গবন্ধু ‘র ছয় দফাঃ বাংলার ম্যাগনাকার্টা

এম আর রাসেল

“সাঁকো দিলাম, স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতায় উন্নীত হওয়ার জন্য”- বঙ্গবন্ধু ‘র দেয়া এই সাঁকো পেরিয়েই আমরা পেয়েছি লাল সবুজের পতাকা। এই অর্জনের দীর্ঘ পথে ৭ জুন কালের ডাইরিতে লেখা দিনলিপির লাল তারিখ।

বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফার রূপকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে গ্রেফতার মরা হলে ৭ জুন দেশব্যাপী হরতাল পালিত হয়। দাবি ছিল মাত্র দুটি- এক. শেখ মুজিবের মুক্তি খ. ছয় দফা বাস্তবায়ন। এই দিন মনুমিয়া সহ ১১ জন নিহত হয়। এর ফলে ছয়দফা জনগনের প্রাণের দাবিতে পরিণত হয়ে যায়।
৭ জুন হরতাল সম্পর্কে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ডায়েরিতে লিখেছেন: ‘১২টার পরে খবর পাকাপাকি পাওয়া গেল যে, হরতাল হয়েছে। জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে হরতাল পালন করেছেন। তারা ৬ দফা সমর্থন করে আর মুক্তি চায়। বাঁচতে চায়, খেতে চায়, ব্যক্তি স্বাধীনতা চায়, শ্রমিকের ন্যায্য দাবি, কৃষকদের বাঁচার দাবি তারা চায়, এর প্রমাণ এই হরতালের মধ্যে হয়েই গেল’ (কারাগারের রোজনামচা পৃ: ৬৯)।

এভাবেই ছয় দফা বাঙালির মুক্তির সনদ রূপে আবির্ভূত হয়। এই এক কর্মসূচিই শেখ মুজিবকে অবিসংবাদিত নেতা বানিয়ে দেয়। ব্রিটেনের গণতন্ত্রের ইতিহাসে যেমন ম্যাগনাকার্টা, ফরাসি বিপ্লবের মৌল ভিত্তি যেমন ছিল Bill Of Rights, আমেরিকার স্বাধীনতার ক্ষেত্রে যেমন Individual freedom এর অবদান, রুশ বিপ্লবের ভিত্তিতে যেমন ছিল Classless Society -র ধারণা। তেমনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার মৌল ভিত্তি ছিল এই ছয় দফা।
এই ছয় দফাকে শেখ মুজিব আখ্যায়িত করেছিলেন ‘নূতন দিগন্তের নূতন মুক্তি সনদ’ হিসেবে। আর পাকিস্তানি শাসক শ্রেণী বলেছিলেন ‘বিপজ্জনক’। পাকিস্তানি জান্তাদের জন্য এটা বিপজ্জনকই ছিল বটে। এই দফার গণজাগরণে ভীত হয়ে শেখ মুজিবকে গ্রেফতার করা হলে গর্ভনর মোনায়েম খা দম্ভভরে বলেছিলেন, “শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্তির আলোক দেখার সুযোগ দেয়া হবে না। ”

সুযোগ তিনি পেয়েছিলেন, হয়েছেন বাংলার বন্ধু – বঙ্গবন্ধু। বাংলার ইতিহাসে স্মরণীয় এক অধ্যায় রচনায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর যাপিত জীবনের ৫৫ বছরের মধ্যে ১৩ বছরই কারাগারে কেটেছে। মহান এই নেতার ভাবনার ফসল ছয় দফা বাংলার ইতিহাসে অন্যতম মাইলফলক হিসেবে রয়ে যাবে চিরকাল…এই ছয় দফায় বাংলার মানুষের জন্য মুক্তির পথ তৈরি করেছে ।

লেখকঃ কলাম লেখক ও কৃষিবিদ 

লেখকের প্রকাশিত আরও লেখা পড়ুন-

প্যালেস্টাইন সংকটঃ মিঠেকড়া আলাপ

গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন ও বাইডেনের ইসরাইল প্রীতি

ইরান-ইসরাইল সংঘাতঃ মধপ্রাচ্যের প্রধান ইস্যু হবে

আরও পড়ুন