Ads

রাসুল সাঃ এর জীবনী – আমার রাসুল (সাঃ) এর কথা বলছি

।। দিল আফরোজ রিমা ।। 

রাসুল সাঃ এর জীবনী
বাল্যকাল অধ্যায়
ভূমিকাঃ
যিনি সারা জাহানের রব, পালন কর্তা, অসীম দয়ার সাগর, মহাজ্ঞানী সর্বশক্তিমান। যিনি আমাদের শ্রেষ্ট জীব হিসাবে তৈরী করেছেন, সকল প্রশংসা সেই মহান আল্লাহর। মানব জাতীর শ্রেষ্ট নেতা হিসাবে যাকে প্রতিষ্টিত করেছেন,সে সর্বশ্রেষ্ট মানব রাসুল মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতি অশেষ ছালাম ও দরুদ। যিনি সারা জগতের জন্য রহমত স্বরূপ এসেছেন এই দুনিয়ায়। তিনি হলেন হজরত মুহাম্মদ মুস্তফা (সাঃ)।
রসুল (সাঃ) এর জন্মের পূর্বে আরব্য প্রেক্ষাপট কেমন ছিল সে ব্যপারে সামান্য আলোচনা করার প্রয়োজন বোধ করছি।রাসুল (সাঃ) জন্মের আগের অন্ধকার যুগকে আইয়ামে জাহেলিয়াতের যুগ বলা হয়। সারা আরব দেশের মানুষের মধ্যে তখন গোমরাহি বিরাজ করত।
সে যুগে সভ্যতা ঈমানদারী একা নিভৃতে কেঁদে বেড়াত। চারিদিকে শিরক, অন্যায়, অবিচার, হত্যা, যুদ্ধ বিগ্রহ ইত্যাদির সমারোহ ছিল। ছিল শিরকের বিশ্বজনীন ব্যধি। ছিল ভ্রান্ত জাতিভেদের ফেতনা। বানানো ধর্মীয় ও সামাজিক রীতি-নীতিই সেখানে চলত। ছিল হাজারো মুর্তি -প্রতিমা। চলত মুর্তি পূজা, ঘুড়ি পূজা, সূর্য পূজা, অগ্নি পূজা।তাদের মধ্যে ভাগ্যের দোহাই ছিল এবং তা কিছু মানুষের জন্য খারাপ পরিনতি নিয়ে আসত।
তৎকালীন আরবে পতিতাবৃত্তিও বাদ পড়েনি। দেব মন্দিরে হতো ভাগ্য গননা। ছিল তালাকের পর তালাক দেওয়া স্বামী স্ত্রীকে বার বার গ্রহন করার নিয়ম। চলতো এতিমদের উপর অন্যায় অত্যাচার। তাদের প্রাপ্য ধন সম্পত্তি থেকে তাকে বঞ্চিত করা হতো। সে যুগে কখনো কন্যা সন্তানদের জীবিত কবর দেওয়া হতো। কখনো নারী শিশুদের উত্তরাধিকার হতে বঞ্চিত করা হতো। একে অপরকে হত্যা করত এবং তার প্রতিশোধ চলতো একের পর এক হত্যা দিয়ে।
সেই সময়ে আরব দেশে মুষ্টিমেয় লোক বাস করতেন যারা এক আল্লাহর একত্ববাদে বিশ্বাসী ছিলেন। তারা হানিফ নামে পরিচিত ছিলেন।নিরীহ আরব বাসী সব সময় চিন্তিত থাকতো কখন কোন লুন্ঠনকারী দল এসে হঠাত আক্রমন করে বসে। মোট কথা আরবের অবস্থা এমন ছিল যে , গোটা দেশে এমন কোন জনপদ ছিল না যারা শান্তিতে থাকত। এই অন্ধকারের পর্দা সরিয়ে দিয়ে এক মহা আলোকের আবির্ভাবের বড় প্রয়োজন হয়েছিল। তাইতো মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তার সেরা বিচক্ষনতা দিয়ে এক মহান উদ্দেশ্যে এই পৃথিবীর বুকে তার সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ মাখলুকাত শ্রেষ্ঠ মানুষ আমাদের নবী (সাঃ) কে প্রেরণ করেন। আবির্ভাব হয় এক মহা আলোক সত্তার, যার পবিত্র আলোতে সারা পৃথিবী মাতোয়ারা।
লেখকের আরও লেখা পড়ুন- নারীর স্বাধীনতা ও ইসলাম
রাসূল (সাঃ) এর জন্মঃ 
পবিত্র মক্কা নগরীর কুরাইশ বংশের মান মর্যাদা আভিজাত্য আরব দেশের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ট ছিল। আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মদ (সাঃ) ইবরাহিম (আঃ) এর বংশধর ছিলেন। তার পিতা আব্দুল্লাহ ছিলেন মক্কার কুরাইশ নেতা আব্দুল মুত্তালিবের পুত্র। তার মাতা ছিলেন আমিনা।
১২ রবিউল আউয়াল সোমবার সুভে সাদিকের এক পবিত্র মুহুর্তে রাসুল (সাঃ) এর জন্ম হয়। শীতের বিদায়ী লগ্নে নব বসন্তের আগমনের ছোয়ায় তৃনশাখা প্রশাখায় সবুজ নব পল্লব প্রায় সমাগত। প্রকৃতি যেন কীসের মায়ামন্ত্রে মোহাচ্ছন্ন। পূর্ব আকাশে এক পবিত্র নামের জানান দিয়ে সূর্য উদয়ের আয়োজন চলছে। আলো আধারে যেন কীসের কানাকানি শুনা যায়। মা আমিনার মনে স্বপ্নেরা দোলা দিয়ে যায়। আকাশের চাঁদ বুঝি কোলে এলো তার তাই খুশিতে আত্মহারা। আল্লাহর প্রিয় বন্ধু রাসুল (সাঃ) নেমেছেন মাটির ধরায়। কুল মাখলুক তাই বুঝি এত খুশি। সপ্তাকাশে ফেরেস্তারা ছুটাছুটি করছে তার আসার আয়োজনে। পবিত্র আরব নগরীতে প্রভাতী আলোক শিখা শুভাগমনী বার্তা নিয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল চারিদিকে।
দাদা মুত্তালিব যখন খবর পেলেন খুশির আবেগে তিনি প্রসূতি ঘরেই চলে গেলেন। নিজের ছেলের মুখটি স্মরন করে শিশু পৌত্রকে উঠিয়ে নিজের বুকের মধ্যে চেপে ধরলেন। নাম রাখলেন মুহাম্মদ (সাঃ)।
রাসুল (সঃ) এর পিতা আব্দুল্লাহ আব্দুল মুত্তালিবের সর্বকনিষ্ঠ সর্বাপেক্ষা সুদর্শন এবং প্রিয় পাত্র ছিলেন। মাত্র পঁচিশ বছর বয়সে তিনি মৃত্যু বরণ করেন। পুত্র আব্দুল্লাহর অকাল মৃত্যু হওয়ায় তার সদ্য ভুমিষ্ট সন্তান রাসূল (সাঃ) এর প্রতি আব্দুল মুত্তালিবের হৃদয়ের টান অনেক বেশি। তিনি নাতির জন্মে খুশি হয়ে দেশের প্রথা অনুযায়ী মহা সমারোহে উৎসব পালন করলেন। এবং গরিবদের মধ্যে উট বিতরন করলেন।

 

ধারাবাহিকভাবে  চলবে-

 

লেখকঃ কবি ও সাহিত্যিক 

ফেসবুকে লেখককে পাবেন এই লিংকে – দিল আফরোজ

রাসূল সাঃ এর জীবনী – আমার রাসুল (সাঃ) এর কথা বলছি – রাসূল সাঃ এর জীবনী – আমার রাসুল (সাঃ) এর কথা বলছি

আরও পড়ুন