Ads

একজন উদ্যোক্তার যে গুণবলী থাকা জরুরী

ফারহানা শারমীন জেনী

সবসময় আমার মাথায় একটা বিষয় ঘুরপাক খেতে থাকে সেটা হলো কর্মের দ্বারা মানুষের ভাগ্য নাকি পরিবর্তন হয় তাহলে কেন দেশে এতো এতো বেকার,ভবঘুরে, সাহায্য প্রার্থী অসহায়, দরিদ্র?? কিন্তু কিছু বিষয় নিজে যদি মুখোমুখি না হওয়া যায় বাস্তবতার তাহলে বোঝা যায় না যে একটা মানুষের শুধু অর্থ সম্পদ থাকলেই ভাগ্য পরিবর্তন হয় না থাকতে হয় আইকিউ অর্থাৎ বুদ্ধিমত্তা সঠিক ইকুয়েশন সম্পর্কে জ্ঞান ।একসময় রাজ ভান্ডারও ফুরিয়ে আপনি একটা গল্পে পরিণত হবেন “এক দেশে এক রাজা ছিল তার সুখে দিন কাটিত দেনা বাড়িতেছে কিন্তু তার আরাম ভাঙে না অতএব একদিন সকল দেনা চুকাইতে প্রজা সহ রাজ্য বিক্রয় হইয়া গেল”।আসলে চিন্তা করে না চললে আমাদের ভবিষ্যৎ এমনই হবে। আবার মূলধনেরও প্রয়োজন আছে। তবে মূলধন তৈরি করা যায় বিন্দু বিন্দু সঞ্চয় দিয়ে সিন্ধু গড়ে।

আমি আগে এটাও ভাবতাম যে ইচ্ছা করলেইতো সবাই উদ্যোক্তা হতে পারে ।কেন হচ্ছে না? তাহলেইতো সমস্যা সমাধান হয়ে যায় । তাদের আর এতো কষ্ট থাকে না। এখন বুঝি যে কেন একজন মানুষ হুট করে উদ্যোক্তা হতে পারে না।

উদ্যোক্তা হতে গেলে প্রথমত যে জিনিসটা আপনার প্রয়োজন তা হলো আপনার অধ্যাবসায়, আইডেনটিটি, মানুষের সাথে মেশার ক্ষমতা, সহিষ্ণুতা এবং ধৈর্য্য।

দ্বিতীয়ত দরকার প্রখর বুদ্ধিমত্তা,সঠিক অংক জ্ঞান, মিতব্যয়ী হওয়া। সঠিক জায়গায় অর্থের সঠিক প্রয়োগ করা।

তৃতীয়ত যেটা দরকার সেটা একজন উদ্যোক্তার বিশেষ প্রয়োজন তাহলো আপনার এই কর্মোদ্যোগে যারা যারা সংশ্লিষ্ট একদম উঁচু পর্যায় থেকে নিচু পর্যায় পর্যন্ত সততা ও সদ্ব্যাবহার। কিন্তু যদি আপনি বুঝতে পারেন আপনার এই দুটো গুণকে কেউ আপনার দূর্বলতা ভাবছে তবে সেখানে আপনার কঠোর ব্যক্তিত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

সর্বোপরি একদিনে একজন মানুষ উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে পারেনা।দিনে দিনে তাকে উদ্যোক্তা হয়ে উঠতে হয়।টাটা কোম্পানির মালিক কিন্তু হুট করে এ পর্যায়ে আসেননি, এসেছেন কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এবং একইসাথে তার বংশধরদের মধ্যে দিয়ে গেছেন এই নামযশ ধরে রাখার পর্যাপ্ত জ্ঞান। বিলগেটসও কিন্তু হুট করেই একটি কোম্পানির মালিক হয়ে যাননি তিনিও কঠোর পরিশ্রমে উঠে এসেছেন।

অতএব আমাদেরকে জীবনধারণের জন্য কাজ করে যেতে হবে আল্লাহর ওপর পূর্ণ তাওয়াককুল করে। আপনি ছোট থেকে একটু একটু করে বড় হোন।ব্যাংক লোন নিয়ে সুদের মধ্যে ঢুকে যেয়ে রাতারাতি বড়লোক বনে গেলেও তাতে বারাকা থাকেনা।সুদকে আল্লাহ হারাম করেছেন এই হারাম যেন কোনভাবেই আমার মধ্যে না আসে সেটা সদা সর্বদা সচেতন থাকতে হবে নতুবা কোনদিক দিয়ে আপনি বিপদগ্রস্ত হবেন আপনি নিজেও জানবেননা।

রিজিক কমে বাড়ে। আপনি যদি রিজিককে তালাশ না করেন তাহলে আপনার বরাদ্দ রিজিক থেকে আল্লাহ কমিয়ে দিতে পারেন আবার আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করেন আল্লাহর ওপর তাওয়াককুল করে তাহলে আল্লাহ বাড়িয়ে দিতে পারেন। এজন্যইত আল্লাহ কুরআনে বলছেন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কর্মক্ষেত্রে ছড়িয়ে যেতে। দেখেন পাখিরা সকাল বেলায় নীড় থেকে বের হয়ে ছড়িয়ে পড়ে আবার সন্ধ্যায় খড়কুটো মুখে নিয়ে ফিরে আসে,পিঁপড়া অসময়ের জন্য দলবেঁধে খাদ্য সঞ্চয় করে। তারা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জীব হয়ে যদি সঠিক পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে পারে তাহলে আমরা কেন পারব না।

আল্লাহ আমাদের সকলকে এই করোনা মহামারীর বৈশ্বিক সমস্যা কাটিয়ে সফল একটা জীবন গড়ে তুলতে সহায়ক হোন।যার যে মেধা আছে কাজের ক্ষমতা আছে তাকে কাজে লাগিয়ে আসুন নিজকে বদলায় সাথে সমাজটাকে বদলায় সাথে বদলে দেই দেশটাকে,গড়ে তুলি সুখী সমৃদ্ধ একটি দেশ।

লেখকঃ কবি, সাহিত্যিক ও সহ-সম্পাদক, মহীয়সী

লেখকের পূর্ব প্রকাশিত লেখা-

আজ সেই ছেলেটির জন্মদিন

ফিলিস্তিন এক মৃত্যু উপত্যকা

 

 

আরও পড়ুন