Ads

মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হোন

এইচ বি রিতা

মেন্টাল হেলথ অর্থাৎ মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের সংবেদনশীল, মানসিক ও সামাজিক বিষয়গুলোকে অন্তর্ভুক্ত করে। এটি আমাদের চিন্তাভাবনা, অনুভূতি ও আচরণকে প্রভাবিত করে। মেন্টাল হেলথ আমাদের মানসিক চাপ পরিচালনা, অন্যের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন এবং নিজেদের পছন্দ বা সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে। শৈশব ও কৈশোর থেকে যৌবনের মধ্য দিয়ে জীবনের প্রতিটি পর্যায়ে মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্বপূর্ণ।
আমাদের জীবনের চলার পথে যদি আমরা মেন্টাল হেলথ সমস্যাগুলো অনুভব করি, তাহলে সেটা আমাদের চিন্তাভাবনা, মেজাজ ও দৈনন্দিন আচরণকে প্রভাবিত করবে। মেন্টাল হেলথ সমস্যাগুলোর জন্য বেশ কিছু কারণ রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে—
১. জন্মগত জৈবিক কারণ (biological factor) বা মস্তিষ্কের রসায়ন (brain chemistry)
২. মানসিক আঘাত (Trauma) বা অপব্যবহারের (abuse) মতো জীবনের অভিজ্ঞতা
৩. মেন্টাল হেলথ সমস্যায় পারিবারিক ইতিহাস।
মেন্টাল হেলথ সমস্যাগুলো সাধারণ, তবে এর সমাধান ও সহায়তা রয়েছে। মেন্টাল হেলথ সমস্যাযুক্ত ব্যক্তিরা সঠিক তত্ত্বাবধানে সহজেই ভালো হয়ে উঠতে পারেন। মেন্টাল হেলথ সমস্যার প্রাথমিক চিহ্নগুলো হলো—
-খাওয়া ও ঘুমানো খুব বেশি বা খুব কম হওয়া
-নিজেকে মানুষের মধ্য থেকে ও সাধারণ ক্রিয়াকলাপ থেকে দূরে সরিয়ে নেওয়া
-দুর্বল বা শক্তিহীন বোধ করা
-অসাড় বোধ করা
-অসহায় বা নিরাশ বোধ করা
-ধূমপান, মদ্যপান বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ড্রাগ ব্যবহার করা
-অস্বাভাবিকভাবে বিভ্রান্ত হওয়া, ভুলে যাওয়া, রাগান্বিত, বিচলিত, চিন্তিত বা ভয় পাওয়া
-পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে চিৎকার করা, ঝগড়া করা
-গুরুতর বদমেজাজি হওয়া যা সম্পর্কের ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করে
-অবিরাম চিন্তা ও স্মৃতিতে ডুবে যাওয়া যা থেকে আপনি বেরিয়ে আসতে পারবেন না
-কারও কণ্ঠস্বর শোনা বা সত্য নয় এমন জিনিসগুলো বিশ্বাস করা
-নিজের বা অন্যের ক্ষতি করার কথা ভাবা
-নিজ বাচ্চাদের যত্ন নেওয়া, কাজ করা বা স্কুলে যাওয়ার মতো দৈনন্দিন কাজ সহায়তা করতে অক্ষম থাকা।
তবে ইতিবাচক মেন্টাল হেলথ বা মানসিক স্বাস্থ্য মানুষকে সুস্থতা দান করে। যেমন—আমাদের সম্পূর্ণ সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করায় মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, উৎপাদনশীল কাজ বাড়ায়, যেকোনো সমস্যা মোকাবিলায় ইতিবাচক চিন্তাভাবনার প্রতিফলন ঘটায়।
ইতিবাচক মেন্টাল হেলথ বা মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখার উপায়গুলোর মধ্যে রয়েছে—প্রয়োজন হলে পেশাদার ডাক্তারের সহায়তা নেওয়া, অন্যের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করা, ইতিবাচক থাকা, শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকা, অন্যদের প্রয়োজনে সাহায্য করা, যথেষ্ট ঘুমানো ও সমস্যা মোকাবিলার দক্ষতা বিকাশ করা।

লেখক : সাহিত‍্যিক ও সাংবাদিক

আরও পড়ুন