Ads

ইসলামিক সাইকোলজি নিয়ে আমার ভাবনা

খন্দকার মারিয়াম হুমায়ুন

ইসলামিক সাইকোলজি নিয়ে যতই পড়ি ততই মুগ্ধ হই। ইসলামিক সাইকোলজির এই বিশ্বকে দেওয়ার অনেক কিছু আছে, এখন শুধু দরকার আল্লাহর সাহায্য ও কিছু ডেডিকেশন। এই উদীয়মান সাইন্স ভবিষ্যতে অনেক ভালো একটি পর্যায়ে যাবে যা সাইকোলজির ইতিহাসে নতুন ইতিহাস তৈরী করবে(অলরেডি করেও ফেলেছে), ইন শা আল্লাহ ।
ওয়েস্টার্ন/ইস্টার্ন সাইকোলজির সাথে ইসলামিক সাইকোলজির বেশ তফাৎ রয়েছে। অনেক তফাৎ এর মধ্যে একটি হলো ইসলামিক সাইকোলজিতে মানুষের পুরো জীবন এবং প্রকৃতি একটা সিংগেল ফ্রেমে দেখা হয় না যা সেক্যুলার সাইকোলজিতে করা হয় i.e. সেক্যুলার সাইকোলজিতে মানুষ স্টাডি করা হয় একজন ব্যক্তির জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত। কিন্তু ইসলামিক সাইকোলজি মানুষের জন্মের আগের জীবন, জন্ম থেকে মৃত্যু এবং মৃত্যুর পরের জীবন, সব মিলিয়ে একটি কমপ্লিট ফ্রেমওয়ার্কে দেখানোর চেষ্টা করে যেই হলিস্টিক ভিউ মানুষের সাইকোলজিকে বুঝতে বহু ধাপ আরো এগিয়ে নিয়ে যায়।
ইসলামিক সাইকোলজি বর্তমানের ওয়েস্টার্ন সাইকোলজির ভিউ পরিবর্তন করে দিতে পারে। যেহেতু মানুষের প্রকৃতি বোঝা, তার মানসিক চিন্তাগত ও আচরণগত সমস্যা এবং সমাধান খোঁজ করা, সব মিলিয়ে ইসলামিক সাইকোলজি একটা ডাইমেনশনার পরিবর্তন আনতে পারে। এতে করে মানসিক রোগ নির্ণয়ে ব্যবহৃত DSM-5 এও পরিবর্তন আসবে।
ওয়েস্টার্ন সাইকোলজি পুরোটা দাঁড়িয়ে আছে ওয়েস্টার্ন প্যারাডাইমের উপর ভিত্তি করে। একজন মুসলিমের সাইকোলজি বোঝা এই প্যারাডাইমে সম্ভব না। বরং এর ক্ষতির দিকগুলো সামনে আসছে কারণ একজন মুসলিমের ফিতরা থেকে তাকে দূরে সরানো হচ্ছে যা পরবর্তীতে তার জীবনে আরো সমস্যা বয়ে আনতে পারে। একজন মুসলিমের প্রকৃতি শুধুমাত্র ইসলামিক প্যারাডাইমেই বোঝা সম্ভব; আসলে এখানে মুসলিম না বলে মানুষ বলা উচিৎ কারণ আমরা এটাই বিশ্বাস করি যে সব মানুষের ফিতরা একই- তারা একাত্ববাদের উপর জন্মগ্রহণ করে।
ডা স্কিনারের ভাষায়, সাইকোলজি সাইকোলজিকে পরিবর্তন করে। ফিজিক্স কিংবা কেমিস্ট্রির কোন থিওরী কোন পরমাণুর গঠন পরিবর্তন করতে পারে না। থিওরী যাই হোক না কেন, পরমাণুর গঠন তার মতনই থাকবে। কিন্তু একজন মানুষ তার নিজেকে কেমন করে দেখে এটার উপর সাইকোলজির একটা প্রভাব আছে। সাইকোলজি যদি এটা এভাবেই দেখায় যে, মানুষের ক্বালবের কোন অস্তিত্ব নেই বরং মানুষ তার ব্রেইনের সাহায্যে সব কিছু করে; তবে ওই ব্যক্তি তার ক্বলবের অসুখ নিরাময়ের বদলে অন্য কিছুর পেছনে ছুটবে। একই জিনিস খাটে ফিতরা অস্বীকার করার ক্ষেত্রেও। সাইকোলজিতে ফিতরার অনুপস্থিতি এক সময়ে ফিতরাকে অস্বীকার করার দিকেই নিয়ে যাবে।
একজন মুসলিমের শুধুমাত্র কগনিশনের বা ইন্সটিংট এর নির্ভর করলেই হয় না। আল্লাহ সুবহানাল্লাহু তা’লা মানুষকে যেই ফিতরার উপর সৃষ্টি করেছেন তার দিকে ফিরে যেতে হয়। এটাই মানুষকে মানসিকভাবে স্থিতিশীল করে তুলতে পারে।

লেখকঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং ডঃ বেলাল ফিলিপ্সের  আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত  বিশ্ববিদ্যালয়ের  (IOU)সাইকোলজি ও ইসলামিক স্টাডিজের স্টুডেন্ট

আরও পড়ুন