Ads

যাকাত অস্বীকারকারীর ভয়াবহ পরিণতি

।। ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন আযহারী ।।

যারা যাকাত আদায়ে অস্বীকার করে বা গরিমসি করে তাদের ব্যাপারে কুরআন ও হাদীসে ভয়াবহ পরিণতির কথা বলা হয়েছে। নিচে কয়েকটি আয়াত ও হাদীস উল্লেখ করা হলো:

ক। যন্ত্রণাদায়ক আযাব:

যাকাত আদায় না করলে সে সব লোক আখেরাতে বড় ক্ষতিগ্রস্ত ও যন্ত্রণাদায়ক আযাবে পতিত হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

{وَالَّذِينَ يَكْنِزُونَ الذَّهَبَ وَالْفِضَّةَ وَلَا يُنْفِقُونَهَا فِي سَبِيلِ اللَّهِ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ أَلِيمٍ. يَوْمَ يُحْمَى عَلَيْهَا فِي نَارِ جَهَنَّمَ فَتُكْوَى بِهَا جِبَاهُهُمْ وَجُنُوبُهُمْ وَظُهُورُهُمْ هَذَا مَا كَنَزْتُمْ لِأَنْفُسِكُمْ فَذُوقُوا مَا كُنْتُمْ تَكْنِزُونَ}.

“এবং যারা সোনা ও রূপা পুঞ্জীভূত করে রাখে, আর তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করে না, আপনি তাদের বেদনাদায়ক আযাবের সুসংবাদ দিন। যেদিন জাহান্নামের আগুনে তা গরম করা হবে, অতঃপর তা দ্বারা তাদের কপালে, পার্শ্বে এবং পিঠে সেঁক দেয়া হবে। (আর বলা হবে) এটা তা-ই যা তোমরা নিজদের জন্য জমা করে রেখেছিলে, সুতরাং তোমরা যা জমা করেছিলে তার স্বাদ উপভোগ কর।”[1]

আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন:

{وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَهُمْ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَلِلَّهِ مِيرَاثُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ وَاللَّهُ بِمَا تَعْمَلُونَ خَبِيرٌ}.

“আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে। আর আসমানসমূহ ও জমিনের উত্তরাধিকার আল্লাহরই জন্য। আর তোমরা যা আমল কর সে ব্যাপারে আল্লাহ সম্যক জ্ঞাত।”[2]

আবূ যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন:

«انْتَهَيْتُ إِلَى النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَهُوَ جَالِسٌ فِي ظِلِّ الْكَعْبَةِ، فَلَمَّا رَآنِي قَالَ: «هُمُ الْأَخْسَرُونَ وَرَبِّ الْكَعْبَةِ» قَالَ: فَجِئْتُ حَتَّى جَلَسْتُ، فَلَمْ أَتَقَارَّ أَنْ قُمْتُ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، فِدَاكَ أَبِي وَأُمِّي، مَنْ هُمْ؟ قَالَ: «هُمُ الْأَكْثَرُونَ أَمْوَالًا، إِلَّا مَنْ قَالَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهَكَذَا – مِنْ بَيْنَ يَدَيْهِ وَمِنْ خَلْفِهِ وَعَنْ يَمِينِهِ وَعَنْ شِمَالِهِ – وَقَلِيلٌ مَا هُمْ، مَا مِنْ صَاحِبِ إِبِلٍ، وَلَا بَقَرٍ، وَلَا غَنَمٍ لَا يُؤَدِّي زَكَاتَهَا إِلَّا جَاءَتْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ أَعْظَمَ مَا كَانَتْ، وَأَسْمَنَهُ تَنْطَحُهُ بِقُرُونِهَا وَتَطَؤُهُ بِأَظْلَافِهَا، كُلَّمَا نَفِدَتْ أُخْرَاهَا، عَادَتْ عَلَيْهِ أُولَاهَا، حَتَّى يُقْضَى بَيْنَ النَّاسِ».

“একবার আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে গেলাম। তখন তিনি কা‘বা গৃহের ছায়ায় উপবিষ্ট ছিলেন। তিনি আমাকে দেখে বললেন, কা‘বা গৃহের মালিকের শপথ, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত। আবূ  যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন: এরপর আমি তাঁর নিকট গিয়ে বসলাম, কিন্তু বিলম্ব না করে দাঁড়িয়ে গেলাম এবং বললাম, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনার প্রতি আমার পিতামাতা উৎসর্গিত হোক, তারা কারা? তিনি বললেন, তারা হলো অধিক সম্পদের মালিকরা। কিন্তু তারা ব্যতীত যারা এদিক ওদিকে, ডানে, বামে, সম্মুখে, পশ্চাতে ব্যয় করেছে। তবে এদের সংখ্যা অনেক কম। উট, গরু ও ছাগলের মালিকেরা এগুলোর যাকাত আদায় না করলে কিয়ামতের দিন সেগুলোকে অনেক বড় ও তর-তাজা অবস্থায় মালিকের নিকট আসবে এবং তাকে ওদের শিং দ্বারা আঘাত করবে ও খুর দ্বারা পদদলিত করতে থাকবে। পদদলিত করে যখনই সর্বশেষটি চলে যাবে, তৎক্ষণাৎ প্রথমটি পুনরায় ফিরে আসবে এবং তা চলতে থাকবে লোকদের ফয়সালা হওয়ার পর্যন্ত।”[3]

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ آتَاهُ اللَّهُ مَالًا، فَلَمْ يُؤَدِّ زَكَاتَهُ مُثِّلَ لَهُ مَالُهُ يَوْمَ القِيَامَةِ شُجَاعًا أَقْرَعَ لَهُ زَبِيبَتَانِ يُطَوَّقُهُ يَوْمَ القِيَامَةِ، ثُمَّ يَأْخُذُ بِلِهْزِمَتَيْهِ – يَعْنِي بِشِدْقَيْهِ – ثُمَّ يَقُولُ أَنَا مَالُكَ أَنَا كَنْزُكَ، ثُمَّ تَلاَ: وَلَا يَحْسَبَنَّ الَّذِينَ يَبْخَلُونَ بِمَا آتَاهُمُ اللَّهُ مِنْ فَضْلِهِ هُوَ خَيْرًا لَهُمْ بَلْ هُوَ شَرٌّ لَهُمْ سَيُطَوَّقُونَ مَا بَخِلُوا بِهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ».

“যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে এর যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে (বিষের তীব্রতার কারণে) টেকো মাথা বিশিষ্ট বিষধর সাপের আকৃতি দান করে তার গলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হবে। সাপটি তার মুখের দু’পাশ কমড়ে ধরে বলবে, আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার জমাকৃত মাল। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তিলাওয়াত করেন, “আর আল্লাহ যাদেরকে তাঁর অনুগ্রহ থেকে যা দান করেছেন তা নিয়ে যারা কৃপণতা করে তারা যেন ধারণা না করে যে, তা তাদের জন্য কল্যাণকর। বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর। যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছিল, কিয়ামত দিবসে তা দিয়ে তাদের বেড়ি পরানো হবে”।[4] [5]

রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَا مِنْ صَاحِبِ كَنْزٍ لَا يُؤَدِّي زَكَاتَهُ، إِلَّا أُحْمِيَ عَلَيْهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ، فَيُجْعَلُ صَفَائِحَ فَيُكْوَى بِهَا جَنْبَاهُ، وَجَبِينُهُ حَتَّى يَحْكُمَ اللهُ بَيْنَ عِبَادِهِ، فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ، ثُمَّ يَرَى سَبِيلَهُ، إِمَّا إِلَى الْجَنَّةِ، وَإِمَّا إِلَى النَّارِ».

“সোনা-রুপা সঞ্চয়কারী ব্যক্তি যদি এর যাকাত আদায় না করে তবে জাহান্নামের আগুনে তা উত্তপ্ত করা হবে। অতঃপর এগুলোকে পাতের ন্যায় বানিয়ে এর দ্বারা তার পার্শ্ব এবং ললাটে দাগ দেওয়া হবে। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের মধ্যে ফয়সালা করা পর্যন্ত, এমন দিনে যে দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। এরপর দেখানো হবে তাকে তার পথ জান্নাতের দিকে অথবা জাহান্নামের দিকে।”[6]

খ। রহমত থেকে বঞ্চিত

যাকাত আদায় না করলে আল্লাহ তাঁর রহমত বন্ধ করে দেন। রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«يَا مَعْشَرَ الْمُهَاجِرِينَ خَمْسٌ إِذَا ابْتُلِيتُمْ بِهِنَّ، وَأَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ تُدْرِكُوهُنَّ: لَمْ تَظْهَرِ الْفَاحِشَةُ فِي قَوْمٍ قَطُّ، حَتَّى يُعْلِنُوا بِهَا، إِلَّا فَشَا فِيهِمُ الطَّاعُونُ، وَالْأَوْجَاعُ الَّتِي لَمْ تَكُنْ مَضَتْ فِي أَسْلَافِهِمُ الَّذِينَ مَضَوْا، وَلَمْ يَنْقُصُوا الْمِكْيَالَ وَالْمِيزَانَ، إِلَّا أُخِذُوا بِالسِّنِينَ، وَشِدَّةِ الْمَئُونَةِ، وَجَوْرِ السُّلْطَانِ عَلَيْهِمْ، وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ، إِلَّا مُنِعُوا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ، وَلَوْلَا الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا، وَلَمْ يَنْقُضُوا عَهْدَ اللَّهِ، وَعَهْدَ رَسُولِهِ، إِلَّا سَلَّطَ اللَّهُ عَلَيْهِمْ عَدُوًّا مِنْ غَيْرِهِمْ، فَأَخَذُوا بَعْضَ مَا فِي أَيْدِيهِمْ، وَمَا لَمْ تَحْكُمْ أَئِمَّتُهُمْ بِكِتَابِ اللَّهِ، وَيَتَخَيَّرُوا مِمَّا أَنْزَلَ اللَّهُ، إِلَّا جَعَلَ اللَّهُ بَأْسَهُمْ بَيْنَهُمْ».

“হে মুহাজিরগণ! তোমরা পাঁচটি বিষয়ে পরীক্ষার সম্মুখীন হবে। তবে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি যেন তোমরা তার সম্মুখীন না হও। যখন কোনো জাতির মধ্যে প্রকাশ্যে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ে তখন সেখানে মহামারী আকারে প্লেগ রোগের প্রাদুর্ভাব হয়। তাছাড়া এমন সব ব্যাধির উদ্ভব হয়, যা পূর্বেকার লোকেদের মধ্যে কখনো দেখা যায় নি। যখন কোনো জাতি ওজন ও পরিমাপে কারচুপি করে তখন তাদের ওপর নেমে আসে দুর্ভিক্ষ, কঠিন বিপদ-মুসিবত ও তাদের বাদশার পক্ষ থেকে অত্যাচার। যখন তারা যাকাত আদায় করে না তখন আসমান থেকে বৃষ্টি বর্ষণ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যদি ভূ-পৃষ্ঠি চতুস্পদ জন্তু ও নির্বাক প্রাণি না থাকতো তাহলে আর কখনো বৃষ্টিপাত হতো না। যখন কোনো জাতি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অঙ্গীকার ভঙ্গ করে, তখন আল্লাহ তাদের ওপর তাদের বিজাতীয় দুশমনকে ক্ষমতাশীন করেন এবং সে তাদের সহায়-সম্পদ সবকিছু কেড়ে নেয়। যখন তোমাদের শাসকবর্গ আল্লাহর কিতাব মোতাবেক মীমাংসা করে না এবং আল্লাহর নাযিলকৃত বিধানকে গ্রহণ করে না, তখন আল্লাহ তাদের পরস্পরের মধ্যে যুদ্ধ বাঁধিয়ে দেন।”[7]

গ। লানতে পতিত হওয়া

যাকাত প্রদান না করা অভিসম্পাতকে অনিবার্য করে। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ قَالَ: «آكِلُ الرِّبَا، وَمُوكِلُهُ، وَكَاتِبُهُ إِذَا عَلِمُوا ذَلِكَ، وَالْوَاشِمَةُ، وَالْمَوْشُومَةُ لِلْحُسْنِ، وَلَاوِي الصَّدَقَةِ، وَالْمُرْتَدُّ أَعْرَابِيًّا بَعْدَ الْهِجْرَةِ مَلْعُونُونَ عَلَى لِسَانِ مُحَمَّدٍ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ».

আবদুল্লাহ (ইবন মাস‘ঊদ) রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “যে জেনে শুনে সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের চুক্তি লেখে, যে সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য নিজ চুলে অন্যের চুল যোজনা করে, যে অন্যকে যোজনা করে দেয়, যে সাদকা দিতে অস্বীকার করে (তালবাহনা), যে হিজরতের পর মুরতাদ হয়ে মরুতে বসবাস করে, এরা সকলে কিয়ামতের দিন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের মুখে অভিশাপপ্রাপ্ত।”[8] আর রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলায়হি ওয়াসাল্লাম যাকে অভিসম্পাত দিবেন, সে যে অবশ্যই ধ্বংস হবে এতে কোন সন্দেহ নেই।

ঘ। জাহান্নাম অবধারিত

যাকাত প্রদান না করা জাহান্নামকে অনিবার্য করে। এ প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে-

عن أَبَي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَأْتِي الْإِبِلُ عَلَى صَاحِبِهَا عَلَى خَيْرِ مَا كَانَتْ إِذَا هُوَ لَمْ يُعْطِ فِيهَا حَقَّهَا تَطَؤُهُ بِأَخْفَافِهَا وَتَأْتِي الْغَنَمُ عَلَى صَاحِبِهَا عَلَى خَيْرِ مَا كَانَتْ إِذَا لَمْ يُعْطِ فِيهَا حَقَّهَا تَطَؤُهُ بِأَظْلَافِهَا وَتَنْطَحُهُ بِقُرُونِهَا وَقَالَ … قَالَ وَلَا يَأْتِي أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ بِشَاةٍ يَحْمِلُهَا عَلَى رَقَبَتِهِ لَهَا يُعَارٌ فَيَقُولُ يَا مُحَمَّدُ فَأَقُولُ لَا أَمْلِكُ لَكَ شَيْئًا قَدْ بَلَّغْتُ وَلَا يَأْتِي بِبَعِيرٍ يَحْمِلُهُ عَلَى رَقَبَتِهِ لَهُ رُغَاءٌ فَيَقُولُ يَا مُحَمَّدُ فَأَقُولُ لَا أَمْلِكُ لَكَ مِنْ اللَّهِ شَيْئًا قَدْ بَلَّغْتُ.

আবূ হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “যে ব্যক্তি নিজের উটের হক আদায় করবে না সে উট দুনিয়া অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হয়ে খুর দিয়ে আপন মালিককে পিষ্ট করতে আসবে, যে ব্যক্তি নিজের ছাগলের  হক আদায় করবে না সে ছাগল দুনিয়া অপেক্ষা অধিক শক্তিশালী হয়ে খুর দিয়ে আপন মালিককে পদদলিত করবে এবং শিং দিয়ে আঘাত করবে। … রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: তোমাদের কেউ যেন কিয়ামতের দিবসে কাধের উপর চিৎকাররত ছাগল বহন করে আমার নিকট না আসে এবং বলে হে রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। তখন আমি বলব, তোমাকে করার আমার কোন ক্ষমতা নেই। আমি তো এ বিষয়টি পৌঁছে দিয়েছি। আর তোমাদের কেউ যেন কিয়ামতের দিবসে কাধের উপর চিৎকাররত উট বহন করে আমার নিকট না আসে এবং বলে হে রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। তখন আমি বলব, তোমাকে কিছু করার আমার কোন ক্ষমতা নেই। আমি তো এ বিষয়টি তোমাদেরকে (আগেই) পৌঁছে দিয়েছি।”[9] সুতরাং যারা পশুর যাকাত দেয় না তাদের যে জঘন্য সাজা দেয়া হবে তার একটি চিত্র এখানে ফুটে উঠেছে।

অন্য বর্ণনায় যাকাত না দেয়ার আরে কঠোর শাস্তির আলোচনা এসেছে। যেমন বর্ণিত হয়েছে- আবূ যার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন:

بَشِّرْ الْكَانِزِينَ بِرَضْفٍ يُحْمَى عَلَيْهِ فِي نَارِ جَهَنَّمَ ثُمَّ يُوضَعُ عَلَى حَلَمَةِ ثَدْيِ أَحَدِهِمْ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ نُغْضِ كَتِفِهِ وَيُوضَعُ عَلَى نُغْضِ كَتِفِهِ حَتَّى يَخْرُجَ مِنْ حَلَمَةِ ثَدْيِهِ يَتَزَلْزَلُ.

“যারা সম্পদ জমা করে রাখে, তাদেরকে এমন গরম পাথরের সুসংবাদ দাও যা তাদেরকে শাস্তি প্রদানের জন্য জাহান্নামে উতপ্ত করা হচ্ছে। তা তাদের স্তনের বোঁটার উপর স্থাপন করা হবে আর তা কাঁধের পেশী ভেদ করে বের হবে এবং কাধের উপর স্থাপন করা হবে তা নড়াচড়া করে সজোরে স্তনের বোঁটা ছেদ করে বের হবে।[10]

অন্য বর্ণনায় যাকাত না দেয়ার অনিবার্য সাজা যে জাহান্নাম, তা স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ হয়েছে। যেমন বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم : مَانِعُ الزَّكَاةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فِي النَّارِ.

আনাস ইবন মালিক রাদি আল্লাহু ‘আনহু সূত্রে বর্ণিত  রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন: “কিয়ামতের দিন যাকাত প্রদান থেকে বিরত থাকা ব্যক্তি জাহান্নামে যাবে।” [11]

এ প্রসঙ্গে আরো বর্ণিত হয়েছে-

عن أَبَي هُرَيْرَةَ ، قَالَ  قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ :… أَوَّلُ ثَلاَثَةٍ يَدْخُلُونَ النَّارَ : فَأَمِيرٌ مُسَلَّطٌ ، وَذُو ثَرْوَةٍ مِنْ مَالٍ لاَ يُؤَدِّي حَقَّ اللهِ فِي مَالِهِ ، وَفَقِيرٌ فَجُورٌ.

আবূ হুরায়রা সূত্রে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:  “… প্রথম তিন শ্রেণী যারা জাহান্নামে প্রবেশ করবে, দাপটে শাসক, ধনী যে তার সম্পদে আল্লাহর অধিকার দেয় না এবং পাপী দরিদ্র।”[12]

গহনার যাকাত না দিলে তার শাস্তিরও বর্ণণা এসেছে। যেমন বর্ণিত হয়েছে:

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيهِ عَنْ جَدِّهِ أَنَّ امْرَأَةً أَتَتْ رَسُولَ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- وَمَعَهَا ابْنَةٌ لَهَا وَفِى يَدِ ابْنَتِهَا مَسَكَتَانِ غَلِيظَتَانِ مِنْ ذَهَبٍ فَقَالَ لَهَا « أَتُعْطِينَ زَكَاةَ هَذَا ». قَالَتْ لاَ. قَالَ « أَيَسُرُّكِ أَنْ يُسَوِّرَكِ اللَّهُ بِهِمَا يَوْمَ الْقِيَامَةِ سِوَارَيْنِ مِنْ نَارٍ ». قَالَ فَخَلَعَتْهُمَا فَأَلْقَتْهُمَا إِلَى النَّبِىِّ -صلى الله عليه وسلم- وَقَالَتْ هُمَا لِلَّهِ عَزَّ وَجَلَّ وَلِرَسُولِهِ.

আমর ইবন শুয়ায়িব রহ. তার পিতা, তিনি তার দাদার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, এক মহিলা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট তার কণ্যাকে নিয়ে আসলেন যার হাতে ছিল দু’টি স্বর্ণের মোটা চুড়ি। তিনি বললেন, “তুমি কি এটার যাকাত দাও?” সে বললো, না।  তিনি বললেন, “এ দু’টির পরিবর্তে কিয়ামতের দিন আল্লাহ তোমাকে দু’টি আগুনের চুড়ি পরিধান করলে তা কি তোমাকে খুশী করবে?” বর্ণনাকারী বলেন: এরপর সে এ দু’টি মহানবী আলাইহিস সালামের নিকট ছুড়ে ফেলে দিয়ে বললো, এ দু’টি আল্লাহ ‘আযযা ওয়া জাল্লা ও তার রাসূল সাাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের জন্য।”[13]

সুতরাং যাকাত না দিলে জাহান্নামের কঠোর শাস্তি যে অপরিহার্য, তা সন্দেহাতীতভাবেই প্রমাণিত।

ঙ। দুর্ভিক্ষে পতিত হওয়া

যাকাত প্রদান না করলে দুর্ভিক্ষ  দেখা দেয়। এ প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে-

عن عبد الله بن بريدة عن أبيه قال قال رسول الله صلى الله عليه و سلم «مَا مَنَعَ قَوْمٌ الزَّكَاةَ إِلَّا ابْتَلَاهُمُ اللَّهُ بِالسِّنِينَ.

আব্দুল্লাহ ইবন বুরাইদাহ রাদি আল্লাহু ‘আনহু তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “কোন সম্প্রদায় যখনই যাকাত দেয়া থেকে বিরত থেকেছে তখনই আল্লাহ তাদেরকে দূর্ভিক্ষের পরীক্ষায় ফেলেছে।”[14]

চ। অনাবৃষ্টি দেখা দেয়

যাকাত প্রদান না করলে অনাবৃষ্টি দেখা দেয়। এ প্রসঙ্গে বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُرَيْدَةَ ، عَنْ أَبِيهِ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ : … وَلاَ مَنَعَ قَوْمٌ الزَّكَاةَ ، إِلاَّ حَبَسَ اللَّهُ عَنْهُمُ الْقَطْرَ .

আব্দুল্লাহ ইবন বুরাইদাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু  তার পিতার সূত্রে বর্ণনা করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:… “ কোন সম্প্রদায় যখন যাকাত দেয়া থেকে বিরত থাকে তখন আল্লাহ তাদেরকে বৃষ্টি বন্ধ করে দেন।”[15]

অন্য হাদীছে, তবে চতুষ্পদ প্রাণীর জন্য বৃষ্টি দেয়া হয় বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন বর্ণিত হয়েছে-

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ:… وَلَمْ يَمْنَعُوا زَكَاةَ أَمْوَالِهِمْ ، إِلاَّ مُنِعُوا الْقَطْرَ مِنَ السَّمَاءِ ، وَلَوْلاَ الْبَهَائِمُ لَمْ يُمْطَرُوا.

আব্দুল্লাহ ইবন ‘উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা সূত্রে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “… তারা যাকাত দেয়া থেকে বিরত থাকলে তখন তাদেরকে বৃষ্টি বন্ধ করে দেয়া হয়, যদি চতুষ্পদ প্রাণী না থাকতো তাহলে বৃষ্টিই হতো না।”[16]

সুতরাং যাকাত আদায় করা থেকে বিরত থাকলে জাহান্নামের মর্মান্তিক শাস্তি ছাড়াও পৃথিবীতেও অনেক আযাব ও গজবের সম্মুখীন হতে হয়।

ছ। মুশরিক ও মুনাফিকের বৈশিষ্ট্য

যাকাত প্রদান না করা মুশরিকদের ও মুনাফিকদের একটি বৈশিষ্ট্য। যাকাতের মাধ্যমে মুশরিকদেরকে মুমিনদের থেকে পৃথক করা হয়েছে। আল্লাহ মুশরিকদের দোষ সম্পর্কে বলেন:

{وَوَيْلٌ لِلْمُشْرِكِينَ الَّذِينَ لَا يُؤْتُونَ الزَّكَاةَ وَهُمْ بِالْآخِرَةِ هُمْ كَافِرُونَ}.

“আর মুশরিকদের জন্য ধ্বংস, যারা যাকাত দেয় না। আর তারাই আখিরাতের অস্বীকারকারী।” [17]

যাকাত ব্যতীত কেউ মুনাফিকদের থেকে আলাদা হতে পারে না। আল্লাহ মুনাফিকদের সম্পর্কে বলেছেন:

{الْمُنَافِقُونَ وَالْمُنَافِقَاتُ بَعْضُهُمْ مِنْ بَعْضٍ يَأْمُرُونَ بِالْمُنْكَرِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمَعْرُوفِ وَيَقْبِضُونَ أَيْدِيَهُمْ نَسُوا اللَّهَ فَنَسِيَهُمْ إِنَّ الْمُنَافِقِينَ هُمُ الْفَاسِقُونَ}.

“মুনাফিক পুরুষ ও মুনাফিক নারীরা একে অপরের অংশ, তারা মন্দ কাজের আদেশ দেয়, আর ভাল কাজ থেকে নিষেধ করে, তারা নিজদের হাতগুলোকে সঙ্কুচিত করে রাখে (অর্থাৎ ব্যয় করে না)। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়েছে, ফলে তিনিও তাদেরকে ছেড়ে দিয়েছেন, নিশ্চয় মুনাফিকরা হচ্ছে ফাসিক।”[18]

আর মুনাফিকরা অর্থ ব্যয় করে নিজেদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে। আল্লাহ তাদের সম্পর্কে বলেন:

{وَمَا مَنَعَهُمْ أَنْ تُقْبَلَ مِنْهُمْ نَفَقَاتُهُمْ إِلَّا أَنَّهُمْ كَفَرُوا بِاللَّهِ وَبِرَسُولِهِ وَلَا يَأْتُونَ الصَّلَاةَ إِلَّا وَهُمْ كُسَالَى وَلَا يُنْفِقُونَ إِلَّا وَهُمْ كَارِهُونَ}.

“আর তাদের দান কবূল থেকে একমাত্র বাধা এই ছিল যে, তারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অস্বীকার করেছে, আর তারা সালাতে আসে না, তবে অলস অবস্থায় এবং তারা দান করে না, তবে অপছন্দকারী অবস্থায়।” [19]

জ। সম্পত্তি ক্রোক করা

যাকাত আদায়ে অস্বীকার করলে আল্লাহ প্রদত্ত দুনিয়া ও আখিরাতের শাস্তির পাশাপাশি ইসলামী রাষ্ট্র কর্তৃক আইনগত দণ্ড প্রদানেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

«مَنْ أَعْطَاهَا مُؤْتَجِرًا فَلَهُ أَجْرُهَا، وَمَنْ مَنَعَهَا فَإِنَّا آخِذُوهَا وَشَطْرَ مَالِهِ، عَزْمَةً مِنْ عَزَمَاتِ رَبِّنَا عَزَّ وَجَلَّ، لَيْسَ لِآلِ مُحَمَّدٍ مِنْهَا شَيْءٌ».

“যে ব্যক্তি সাওয়াবের আশায় যাকাত দিবে, সে তার প্রতিদান পাবে আর যে যাকাত দেয়া বন্ধ করে দিবে, আমি তার ঐ সম্পদ নিয়ে নিবো। অধিকন্তু তার সম্পদ থেকে আরো অর্ধেক জব্দ করবো। এটি আমাদের মহা মহিম রবের একটি কঠোর নির্দেশ। মুহাম্মদের বংশধরের জন্য এর কোন অংশ হালাল নয়।”[20]

এ হাদীস যাকাত আদায়ে নির্ধারিত কর্তৃপক্ষকে যাকাতদান থেকে বিরত ব্যক্তির অর্ধেক সম্পত্তি ক্রোক করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এটি এক প্রকারের আর্থিক দণ্ড যা যাকাতদানে বিরত ব্যক্তির জন্য এবং এ থেকে পলায়নকারী লোকদের শিক্ষা দেওয়ার উদ্দেশ্যে দেশের শাসক প্রয়োজনে জারি করতে পারবে। এটি কোন বাধ্যতামূলক ও স্থায়ী দণ্ড নয়; বরং দায়িত্বশীলদের ও মুসলিম সমাজের শাসকদের ইখতিয়ারভুক্ত একপ্রকারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি।

যাকাত আদায়ে এতো ভয়ভীতির কারণ

ইসলামী রাষ্ট্রে যাতে শতভাগ যাকাত আদায় হয় এবং এগুলো গরীব অসহায় এবং যাকাতের অন্যান্য হকদারদের মাঝে বণ্টন করা হয় সেজন্য সর্বাধিক তাগিদ দেওয়া হয়েছে। যাকাত যেহেতু গরীবের অধিকার, তাই তা আদায়ে এতো বেশি ভয়ভীতি ও হুমকি দেওয়া হয়েছে।

ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন সংবিধান বা সনদে গরীব অসহায়দের হকের ব্যাপারে এ ধরনের ইহকালীন ও পরকালীন কঠোর শাস্তির বিধান নেই। ইসলামে সম্পদশালীদের যেমন রয়েছে মর্যাদা, তেমনি সম্পদের হক আদায় না করলে রয়েছে কঠোর শাস্তির হুমকি।

 

তথ্যসূত্র: 

[1] আল-কুরআন: ৯ (সূরা আত-তাওবাহ): ৩৪-৩৫।

[2] আল-কুরআন: ৩ (সূরা আলে ‘ইমরান): ১৮০।

[3] আস-সহীহ লি মুসলিম, অধ্যায়:, যাকাত, পরিচ্ছেদ: যারা যাকাত আদায় করবে না তাদেরকে কঠোর শাস্তি দেয়া, হাদীস নং ৯৯০, ২য় খ., ৬৮৬পৃ.।

[4] আল-কুরআন: ৩ (সূরা আলে ইমরান): ১৮০।

[5] সহীহুল বুখারী, অধ্যায়: যাকাত, পরিচ্ছেদ: যাকাত অস্বীকারকারীর গুনাহ, হাদীস নং ১৪০৩, ২য় খ., ১০৬ পৃ.।

[6] আস-সহীহ লি মুসলিম, অধ্যায়: যাকাত, পরিচ্ছেদ: যাকাত অস্বীকারকারীর গুনাহ, হাদীস নং ৯৮৭, ২য় খ., ৬৮২পৃ.।

[7] ইবন মাজাহ, অধ্যায়: ফিতনা-ফাসাদ, পরিচ্ছেদ: শাস্তিসমূহ, হাদীস নং ৪০১৯, ২য় খ., ১৩৩২পৃ.; আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন; শু‘আইব আরনায়ূত রহ. হাদীসটিকে হাসান লিগাইরিহী বলেছেন, তবে এ সনদটিকে দ‘ঈফ বলেছেন; মুসতাদরক হাকিম, হাদীস নং ৮৬২৩, ৪র্থ খ., ৫৮২ পৃ., ইমাম হাকিম রহ. হাদীসের সনদটিকে সহীহ বলেছেন; তবে বুখারী ও মুসলিম রহ. বর্ণনা করেননি।

[8] আস-সুনানু লিন নাসায়ী, অধ্যায়: সাজসজ্জা, পরিচ্ছেদ: যে চুলে অন্যের চুল যোজনা করে, হাদীস নং ৫১০২, ৮ম খ., ১৪৭ পৃ.। আলবানী রহ. হাদীসটিকে সহীহ বলেছেন; আল-মুসনাদু লি আহমদ, হাদীস নং ৩৮৮১, ৬ষ্ঠ খ., ৪২৫ পৃ.; শু‘আইব আরনায়ূত রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

[9] সহীহুল বুখারী, অধ্যায়: যাকাত, পরিচ্ছেদ: যাকাত অস্বীকারকারীর গুনাহ, হাদীস নং ১৪০২, ২খ. ১০৬ পৃ.।

[10] সহীহুল বুখারী, অধ্যায়: যাকাত, পরিচ্ছেদ: যে ব্যক্তি যাকাত আদায় করে সে সম্পদ পূঞ্জীভুত করে না, হাদীস নং ১০৭, ২খ. ১০৭ পৃ.

[11] আত-তবারানী, আল-মু‘জামুস সাগীর, হাদীস নং ৯৩৫, ২খ. ১৪৫ পৃ.; হাইসামী রহ. মাজমা‘উয যাওয়ায়েদে (৩য় খ., ৬৪পৃ.) বলেন: হাদীসটির সনদে সিনান ইবন সা‘দ রয়েছেন, তাঁর ব্যাপারে অনেক কথা রয়েছে, কেউ কেউ তাকে সিকাহ বলেছেন। আলবানী রহ. সহীহ আত-তারগীবে উল্লেখ করেছেন, ১ম খ. ৪৬৭পৃ.।

[12] আল-মুসতাদরাক লি হাকিম, হাদীস নং ১৪২৯, ১খ, ৫৪৪ পৃ., ইমাম হাকিম রহ. বলেন: হাদীসটির সনদে ‘আমের ইবন শাবীব আল‘উকাইলী রয়েছেন তিনি মুসতাকীমুল হাদীস, তবে হাদীসটির আ‘মাশ রহ. থেকে সহীহ শাহেদ রয়েছে।

[13]  আস-সুনানু লি আবী দাঊদ, অধ্যায়: যাকাত, পরিচ্ছেদ: পূঞ্জীভুত কী? হাদীস নং ১৫৬৩, ২য় খ., ৯৫পৃ.। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন।

[14] আত-তবারানী, আল-মু‘যামুল আওসাত, হাদীস নং ৪৫৭৭, ৫ম খ., ২৬পৃ.। হাইসামী রহ. মাজমা‘উয যাওয়ায়েদে (৩য় খ., ৬৬পৃ.) রহ. বলেন: ‘হাদীসটি তাবরানী তার আওসাতে বর্ণনা করেছেন, তার রিজালগণ সিকাহ।’

[15]  আল-মুসতাদরাক লি হাকিম, হাদীস নং ২৫৭৭, ২খ. ১৩৬পৃ.। ইমাম হাকিম রহ. বলেন: হাদীসটি মুসলিমের শর্তানুযায়ী সহীহ, তবে বুখারী ও মুসলিম কেউ বর্ণনা করেননি। যাহাবী রহ. তালখীসে মুসলিমের শর্তানুসারে সহীহ বলেছেন।

[16] আস-সুনানু লি ইবনে মাজাহ, অধ্যায়: ফিতনা ফাসাদ, পরিচ্ছেদ: শাস্তিসমূহ, হাদীস নং ৪০১৯, ২য় খ., ১৩৩২পৃ.। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। আল-মুসতাদরাক লি হাকিম, হাদীস নং ৮৬২৩, ৪র্থ খ., ৫৮২পৃ.। ইমাম হাকিম রহ. বলেন: হাদীসটি সহীহুল ইসনাদ, তবে বুখারী ও মুসলিম কেউ বর্ণনা করেননি।

[17] আল-কুরআন: ৪১ (সূরা ফুসসিলাত): ৬-৭।

[18] আল-কুরআন: ৯ (সূরা আত-তাওবাহ): ৬৭।

[19] আল-কুরআন: ৯ (সূরা আত-তাওবাহ): ৫৪।

[20] আস-সুনানু লি আবী দাঊদ, অধ্যায়: যাকাত, পরিচ্ছেদ: চারণভূমিতে বিচরণকারী পশুর যাকাত, হাদীস নং ১৫৭৫, ২য় খ., ১০১ পৃ.। আলবানী রহ. হাদীসটিকে হাসান বলেছেন। শু‘আইব আরনায়ূত রহ.ও হাদীসটির সনদটি হাসান বলেছেন।

 

লেখকঃ 

সহকারী অধ্যাপক ও কো-অর্ডিনেটর, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ

শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, উত্তরা, ঢাকা।

 

আরও পড়ুন-

জাকাত না দেয়ার পরিণাম ভয়াবহ

যাকাত আদায় না করার ভয়াবহ পরিণাম

বাংলাদেশে যে শিক্ষা শিক্ষিত করতে ব্যর্থ হচ্ছে

 

আরও পড়ুন