Ads

ছাত্র-ছাত্রীদের আয়ের সুযোগ কিভাবে সৃষ্টি করা যায়?

।।  প্রফেসর ড মোহাঃ ইয়ামিন হোসেন ।।

বাংলাদেশে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাড়তি আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করার জন্য কিছু কার্যকরী উপায় রয়েছে। এসব উপায় তাদের আর্থিক স্বাধীনতা অর্জন এবং শিক্ষা ব্যয়ের চাপ কমাতে সাহায্য করতে পারে:

১. ফ্রিল্যান্সিং:

ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের দক্ষতা অনুযায়ী ফ্রিল্যান্সিং কাজ শুরু করতে পারে। অনলাইনে গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্ট্রি, অনুবাদ, প্রুফরিডিং, এবং ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি বিভিন্ন কাজ করতে পারে। এই কাজগুলো Fiverr, Upwork, Freelancer, এবং অন্যান্য ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মে সহজেই পাওয়া যায়।

২. টিউশনি:

টিউশনি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই জনপ্রিয় একটি আয়ের উপায়। তারা স্কুল বা কলেজের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন বিষয়ের টিউশন দিয়ে আয়ের সুযোগ তৈরি করতে পারে। এতে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের শিক্ষা ব্যয় মেটানোর পাশাপাশি পড়ানোর অভিজ্ঞতাও অর্জন করতে পারে।

৩. অনলাইন টিউটরিং:

অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, যেমন Chegg, Tutor.com, বা Preply এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা ভার্চুয়াল টিউটর হিসেবে কাজ করতে পারে। বিদেশী শিক্ষার্থীদের ইংরেজি, গণিত, বিজ্ঞানের মতো বিষয়ের সহায়তা দিয়ে ভালো আয় করা সম্ভব।

৪. অনলাইন কোর্স তৈরি বা বিক্রি:

বিশেষজ্ঞ কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকলে, যেমন প্রোগ্রামিং, ডিজাইন, ভাষা শেখানো, ছাত্র-ছাত্রীরা Udemy, Skillshare, বা Coursera এর মতো প্ল্যাটফর্মে অনলাইন কোর্স তৈরি করে তা বিক্রি করতে পারে। এছাড়া, নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোর্স বিক্রি করেও আয়ের সুযোগ তৈরি করা সম্ভব।

৫. কন্টেন্ট ক্রিয়েশন ও ইউটিউব চ্যানেল পরিচালনা:

ইউটিউব, ফেসবুক, এবং অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে শিক্ষামূলক বা বিনোদনমূলক ভিডিও তৈরি করে ছাত্র-ছাত্রীরা আয় করতে পারে। বিভিন্ন টিউটোরিয়াল, ভ্লগ, এবং শিক্ষামূলক ভিডিও পোস্ট করে তারা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ পেতে পারে।

আরও পড়ুন-

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বছর যেমন হওয়া উচিত

৬. অনলাইন টিউটোরিয়াল বা কোচিং:

অনলাইন মাধ্যমে টিউশন বা কোচিং দেয়া একটি লাভজনক উপায় হতে পারে। ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের জ্ঞান এবং দক্ষতা অনুযায়ী স্কুলের শিক্ষার্থীদের অনলাইন টিউশন দিতে পারে। এটি দেশের বাইরের শিক্ষার্থীদেরও কোচিং দেয়ার সুযোগ তৈরি করতে পারে।

৭. ব্লগিং ও কন্টেন্ট রাইটিং:

ব্লগিং এবং কন্টেন্ট রাইটিংয়ের মাধ্যমে আয়ের সুযোগ রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীরা নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর ব্লগ বা ওয়েবসাইটে লেখালেখি করতে পারে। এর জন্য গুগল অ্যাডসেন্স বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আয় করা সম্ভব। এছাড়া, বিভিন্ন কোম্পানির জন্য কন্টেন্ট লেখারও সুযোগ রয়েছে।

৮. অনলাইন মার্কেটপ্লেসে পণ্য বিক্রি:

ছাত্র-ছাত্রীরা ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, যেমন Daraz, Bikroy, বা নিজের ফেসবুক পেজে পণ্য বিক্রি করতে পারে। হ্যান্ডমেড ক্রাফট, কাস্টমাইজড প্রিন্ট, ফ্যাশন আইটেম, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করে তারা বাড়তি আয় করতে পারে।

৯. ড্রপশিপিং ও ই-কমার্স ব্যবসা:

ড্রপশিপিং বা ই-কমার্সের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি করে আয় করা যায়। পণ্য নিজের কাছে না রেখেই গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেয়ার মাধ্যমে লাভ করা সম্ভব। এটি কম খরচে শুরু করা যায় এবং ছাত্রদের জন্য এটি একটি লাভজনক ব্যবসার ক্ষেত্র হতে পারে।

১০. গ্রাফিক ডিজাইন ও ভিডিও এডিটিং:

যাদের গ্রাফিক ডিজাইন বা ভিডিও এডিটিংয়ে দক্ষতা রয়েছে, তারা এই কাজে বাড়তি আয় করতে পারে। ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ডিজাইন ও এডিটিং সেবা প্রদান করে এ থেকে ভাল পরিমাণ আয় করা যায়।

আরও পড়ুন-

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে বাংলাদেশী ফেলোদের সমস্যা ও সমাধান

১১. পার্ট-টাইম চাকরি:

বর্তমানে বাংলাদেশে অনেক প্রতিষ্ঠান শিক্ষার্থীদের জন্য পার্ট-টাইম কাজের সুযোগ দিয়ে থাকে। ক্যাফে, রেস্টুরেন্ট, কল সেন্টার, বা ডেলিভারি সেবায় কাজ করে তারা কিছু আয় করতে পারে। তবে, এ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে পড়াশোনার ব্যস্ততার সাথে সামঞ্জস্য রাখতে হবে।

১২. রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট:

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বা গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অধীনে রিসার্চ অ্যাসিস্ট্যান্ট বা টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কাজ করার সুযোগ রয়েছে। এতে তারা একদিকে যেমন গবেষণায় অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে, তেমনি বাড়তি ইনকামের সুযোগ পায়।

আমেরিকায় উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সমস্যা

১৩. ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট:

অনেক ছাত্র-ছাত্রী বিভিন্ন ইভেন্ট যেমন ওয়ার্কশপ, সেমিনার, এবং কালচারাল প্রোগ্রামের আয়োজনে কাজ করে থাকেন। এতে আয় হওয়ার পাশাপাশি সংগঠনের দক্ষতা বৃদ্ধি পায়।

১৪. ডাটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট:

ডাটা এন্ট্রি কাজ এবং ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবে কাজ করে আয় করা সম্ভব। এ ধরনের কাজ সাধারণত কম সময়সাপেক্ষ ও সহজ হওয়ায় ব্যস্ত শিক্ষার্থীদের জন্য এটি ভালো একটি আয়ের উৎস হতে পারে।

এই উপায়গুলো অনুসরণ করে ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের আর্থিক চাহিদা মেটাতে এবং নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারে। তবে, পড়াশোনার ক্ষতি না করে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে এই কাজগুলো করা গুরুত্বপূর্ণ।

লেখকঃ  প্রাবন্ধিক, গবেষক এবং অধ্যাপক, ফিশারীজ বিভাগ,  রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় 

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে  লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি  । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন

আরও পড়ুন