Ads

মুক্তিযোদ্ধাও চান না সরকারী চাকুরীতে কোটা থাকুক

।। বিশেষ প্রতিনিধি, রাবি ।।

মুক্তিযোদ্ধা কোটার সুবিধা পাওয়ার জন্য অনেকে  ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট তৈরি করে নিয়েছেন  । তাই মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট নিয়ে মুক্তিযোদ্ধার নাতি-নাতনীদের কোটায় সরকারী চাকুরীতে নিয়োগ নেয়াটা ভাল চোখে দেখছেন না বাংলাদেশের সচেতন মহল । পুরো ছাত্র ও যুব সমাজ জেগে উঠেছে এর বিরুদ্ধে । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কোটা বিরোধী আন্দোলনে ছাত্রদের সাথে যোগ দিয়েছিলেন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা আন্দোলনে  তার বক্তব্য ছিলো

“আপনাদের কাছে আমার একটাই দাবি, কোটা যেন না থাকে”।

গত ১১ জুলাই দৈনিক সমকালে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে উঠে আসে, “জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) মাধ্যমে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা সনদ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে। মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এ অভিযোগ উত্থাপন করেন কমিটির সদস্য ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী।”

গত ১৯ জুন ২০২৪ এ প্রথম আলোতে প্রকাশিত এক তথ্যে উঠে আসে, “সরকারের পাঁচ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধার ভুয়া সনদ নেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয় ২০১৪ সালে।”

গত ৯ জুলাই মহীয়সীতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন ” মুক্তিযোদ্ধার নাতী-নাতনীরা জানে না নানা-দাদারা কোথায় যুদ্ধ করেছিল” এ উঠে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তিযোদ্ধার নাতী-নাতনী কোটায় ভর্তি হতে আসা ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে এক বিস্ময়কর তথ্য । রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ও লেখক ড মোহাঃ ইয়ামিন হোসেন এই তথ্য জানিয়েছেন কয়েকদিন আগে ।  তিনি জানান,

“মুক্তিযোদ্ধারা আমাদের জাতির সর্বোচ্চ গর্বিত সন্তান। মহান আল্লাহ তাঁদেরকে ইহকাল ও পরকালে ভালো রাখুন। এবার আসল কথায় আসি, মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি-নাতনী যারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটায় ভর্তি হয়েছেন, তা আমার বোর্ডে ২৮-৩০ জন হবেন। এদের মধ্যে ৮০% বা বেশি মুক্তিযোদ্ধাদের মেয়ের সন্তান। মুক্তিযোদ্ধাদের বেশিরভাগই বেঁচে নেই, মহান আল্লাহ তাঁদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌসের বাসিন্দা হিসেবে কবুল করুন। অত্যন্ত দুঃখজনক যে, এই ২৮-৩০ জন ক্যান্ডিডেটের মধ্যে মাত্র একজন বলতে পারছেন তার নানা কোন সেক্টরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন। এটা অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়। আমরা যারা সেদিন কষ্ট করে নিয়মানুযায়ী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করি, তাদের জন্য এটা চরম কষ্টের দিন।

মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের সন্তানেরা যদি তাদের পূর্বপুরুষদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ সম্পর্কে না জানেন, তাহলে তাদের ঐ কোটায় সুবিধা দেওয়ার মানে কী?

এটা অনেকটা কবরে শুয়ে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের কষ্ট দেওয়ার মতো। এরাই আবার বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় কোটায় চাকুরী করবেন- পাপটা কার হবে, ভেবে দেখা দরকার! পরিশেষে, আমি মনে করি, যারা তাদের নানা বা দাদার মুক্তিযুদ্ধের সেক্টরের নম্বর জানে না, তাদেরকে ঐ কোটায় চাকরি দিলে তাদের মুক্তিযোদ্ধা পূর্বপুরুষেরা কষ্ট পাবেন। মহান আল্লাহ দয়া করে জাতিকে রক্ষা করুন।”

আসলে মাত্র কয়েক শতাংশ জাতির জন্য পুরো দেশের আপামর জনতাকে এভাবে বৈষম্যের শিকারে পরিণত করার কোনও মানে হয় না । অতি দ্রুত বিতর্কিত এই কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সুষ্ঠু সমাধান হওয়া উচিৎ ।

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

আরও পড়ুন