Ads

হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। ৫ম পর্ব

।। জামান শামস ।।

হজ্জের তালবিয়া কেবল সম্মিলিত কোরাসই নয়,এটি একটি অংগীকার

হজ্জের কতিপয় রোকন ও সুন্নাত সমূহ রয়েছে। তম্নধ্যে তালবিয়া পাঠ করা অন্যতম সুন্নাত। ইহরাম বাঁধার পর থেকে মসজিদুল হারামে পৌঁছা পর্যন্ত ইহরাম বাঁধার কারণে নিষিদ্ধ কাজকর্ম থেকে বিরত থাকা এবং হালাল হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত তালবিয়াহ পাঠ করতে হয়। এই তালবিয়াহ পুরুষগণ উচ্চস্বরে সম্মিলিতভাবে ও মহিলাগণ নিম্নস্বরে পাঠ করবেন। হজ্জের তালবিয়াহ হ’ল নিম্নরূপ :

لَبَّيْكَ اللَّهُمَّ لَبَّيْكَ لَبَّيْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ لَبَّيْكَ إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ وَالْمُلْكَ لاَ شَرِيكَ لَكَ

আমি হাযির হে আল্লাহ আমি হাযির। আমি হাযির। তোমার কোন শরীক নেই, আমি হাযির। নিশ্চয়ই যাবতীয় প্রশংসা, অনুগ্রহ ও সাম্রাজ্য সবই তোমার; তোমার কোন শরীক নেই’।[মুত্তাফাক্ব আলাইহে, মিশকাত হা/২৫৪১]

হজ্জে তালবিয়াহ পাঠের ফযীলত সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন,

مَا مِنْ مُسْلِمٍ يُلَبِّى إِلاَّ لَبَّى مَنْ عَنْ يَمِينِهِ أَوْ عَنْ شِمَالِهِ مِنْ حَجَرٍ أَوْ شَجَرٍ أَوْ مَدَرٍ حَتَّى تَنْقَطِعَ الأَرْضُ مِنْ هَا هُنَا وَهَا هُنَا ‘

কোন মুসলিম যদি তালবিয়াহ পাঠ করে তখন তার সাথে সাথে ডানে-বামে যা কিছু রয়েছে পাথর, গাছ-পালা কিংবা মাটির ঢেলা তালবিয়াহ পাঠ করতে থাকে। এমনকি এখান থেকে এদিক ও দিকে (পূর্ব ও পশ্চিমের) ভুখন্ডের শেষসীমা পর্যন্ত’।[তিরমিযী হা/৮২৮; ইবনু মাজাহ হা/২৯২১; মিশকাত হা/২৫২০ ]

মালিকুল মুলক কে ?সূরা আলে ইমরানের ২৩ নম্বর আয়াত আমাদের মালেকুল মুলক সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারনা দেয়-

قُلِ اللّٰهُمَّ مٰلِکَ الۡمُلۡکِ تُؤۡتِی الۡمُلۡکَ مَنۡ تَشَآءُ وَ تَنۡزِعُ الۡمُلۡکَ مِمَّنۡ تَشَآءُ ۫ وَ تُعِزُّ مَنۡ تَشَآءُ وَ تُذِلُّ مَنۡ تَشَآءُ ؕ بِیَدِکَ الۡخَیۡرُ ؕ اِنَّکَ عَلٰی کُلِّ شَیۡءٍ قَدِیۡرٌ

বল, ‘হে আল্লাহ! তুমি সমুদয় রাজ্যের মালিক, যাকে ইচ্ছে রাজ্য দান কর আর যার থেকে ইচ্ছে রাজ্য কেড়ে নাও এবং যাকে ইচ্ছে সম্মানিত কর আর যাকে ইচ্ছে অপদস্থ কর, তোমারই হাতে সব রকম কল্যাণ, নিশ্চয়ই তুমি সকল বস্তুর উপর ক্ষমতাবান’।

আরও পড়ুন-হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। ১ম পর্ব

এই আয়াতে রয়েছে মহান আল্লাহর সীমাহীন শক্তি ও তাঁর মহা কুদরতের প্রকাশ। তিনি বাদশাহকে ফকীর করেন এবং ফকীরকে বাদশাহ। তিনিই সমস্ত কর্তৃত্বের মালিক। الْخَيْرُ بِيَدِكَ (যাবতীয় কল্যাণ তোমার হাতে) না বলে, بِيَدِكَ الْخَيْرُ (তোমারই হাতে যাবতীয় কল্যাণ) বলা হয়েছে। অর্থাৎ, বিধেয় পদকে আগে আনা হয়েছে। উদ্দেশ্য নির্দিষ্টীকরণ। অর্থাৎ, সমস্ত কল্যাণ কেবল তোমার হাতেই। তুমি ছাড়া কল্যাণদাতা আর কেউ নেই।

স্পষ্টভাবে বলে দেয়া হয়েছে, এ জগতের সব শক্তি ও রাষ্ট্রক্ষমতা একমাত্র আল্লাহতায়ালার করায়ত্ত। সম্মান ও অপমান তারই নিয়ন্ত্রণাধীন। তিনি দরিদ্র ও পথের ভিখারীকে রাজ সিংহাসন ও মুকুটের অধিকারী করতে পারেন এবং প্রবল প্রতাপান্বিত সম্রাটের হাত থেকে রাষ্ট্র ও ঐশ্বর্য ছিনিয়ে নিতে পারেন। এ আয়াতের শেষাংশেই বলা হয়েছে, আল্লাহর হাতেই যাবতীয় কল্যাণ। আয়াতের প্রথমাংশে রাজত্ব দান করা ও ছিনিয়ে নেয়া এবং সম্মান ও অপমান উভয়দিক উল্লেখ করা হয়েছিল।

এ কারণে এখানে খায়ের বা কল্যাণ শব্দ ব্যবহার করে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যে বিষয়কে কোনো ব্যক্তি বা জাতি অকল্যাণকর বা বিপজ্জনক মনে করে, তা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি অথবা জাতির জন্য আপাতদৃষ্টিতে অকল্যাণকর ও বিপজ্জনক মনে হলেও পরিণামের সামগ্রিক দিক দিয়ে তা অকল্যাণকর নাও হতে পারে। মোট কথা, আমরা যেসব বিষয়কে মন্দ বলি, সেগুলো পুরোপুরি মন্দ নয় আংশিক মন্দ মাত্র। আল্লাহপাক রাব্বুল আলামিনের দিকে সম্বন্ধ এবং সামগ্রিক উপযোগিতার দিক দিয়ে কোনো বস্তুই মন্দ নয়। আর এই বিশ্বাসই মুমিনের পথ চলার অবলম্বন ও ঈমানের দাবি।

বস্তুত রাষ্ট্র অর্জন এবং তা পরিচালনার ক্ষেত্রে যারা শক্তিকেই অবলম্বন মনে করেন, তারা স্পষ্ট ভুলের মধ্যে আছেন। কারণ ক্ষমতার জন্য রক্তপাত ও অত্যাচারকে ইসলামে নিষেধ করা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু মুসা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা অত্যাচারীকে অবকাশ দেন (অর্থাৎ তাকে তৎক্ষণাৎ ধরেন না, ঢিল দেন, সুযোগ দেন যাতে সে আরও জুলুম করতে পারে)। এরপর তাকে এমনভাবে পাকড়াও করেন, সে আর ছুটে যেতে পারে না। এরপর নবী (সা.) আয়াত পাঠ করেন; অর্থাৎ এইরূপ তোমার প্রভুর পাকড়াও যে যখন তিনি অত্যাচারী গ্রামবাসীকে পাকড়াও করেন…। -বোখারি ও মুসলিম

মোট কথা, সার্বভৌম ক্ষমতার মালিক আল্লাহ। আল্লাহ যাকে ইচ্ছা ক্ষমতা দেন, যার থেকে ইচ্ছা ক্ষমতা কেড়ে নেন। মূলত আল্লাহ বান্দাকে ক্ষমতা দিয়ে পরীক্ষা করেন। কেউ এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হন, অনেকেই পারেন না। ক্ষমতার এই পালাবদলের মাঝে যারা বুদ্ধিমান, তাদের জন্য রয়েছে শিক্ষা।

আরও পড়ুন-হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। ২য় পর্ব

বিশ্বব্যাপী চলমান ক্ষমতার দ্বন্দ্বে নিপতিত গোষ্ঠী বা সরকারপ্রধানরা ক্ষমতাকে আল্লাহ প্রদত্ত নিয়ামত মনে না করাই সব অনিষ্টের মূল। মনে রাখবেন, পৃথিবী এখন গতিময়; এগিয়েছে বেশ। এর পরও ক্ষমতাসীনরা নিজেদের মনোভাব শাসক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে ফেলতে পারেনি। তারা জনগণের বন্ধু হতে পারেনি। ক্ষমতার মোহ, সম্পদের লালসা আর কায়েমি স্বার্থে অন্ধ এসব শাসকের পবিত্র কোরআনে কারিমের এই আয়াত একটি জরুরি বার্তা। কিন্তু একথাটি ক’জন বুঝেন- সেটাই প্রশ্ন!

জাহান্নামী হওয়ার সবচেয়ে ভয়ংকর মাধ্যম হ’ল শিরক বা আল্লাহর সাথে কারও সমকক্ষ স্থাপন করা। হজ্জে গমন করে বারংবার তালবিয়া পাঠের মাধ্যমে আদম সন্তান যাবতীয় শিরক বিমুখতার সেই নযীর স্থাপন করে এবং বলে লাববায়িক লা শারীকা লাকা (হাযির হে প্রভূ! তোমার কোন শরীক নেই)।

কারণ সে শিরকের ভয়াবহতা সম্পর্কে অবগত। আল্লাহ বলেন,

إِنَّهُ مَنْ يُشْرِكْ بِاللَّهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللَّهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَأْوَاهُ النَّارُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنْصَارٍ

‘বস্ত্ততঃ যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে অন্যকে শরীক করে, আল্লাহ অবশ্যই তার উপরে জান্নাতকে হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হ’ল জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই’ (সূরা মায়েদাহ ৭২)

হজ্জের ময়দানে তালবিয়াহ পাঠ এবং বারংবার একই বাক্য উচ্চারণের মাধ্যমে সে আল্লাহর প্রশংসায় নিমগ্ন থাকে। এধরনের প্রশংসাকারী মুসলিমদের জন্য চিরকাল থাকার জায়গা জান্নাত। যেমন আল্লাহ বলেন,

دَعْوَاهُمْ فِيهَا سُبْحَانَكَ اللَّهُمَّ وَتَحِيَّتُهُمْ فِيهَا سَلَامٌ وَآخِرُ دَعْوَاهُمْ أَنِ الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ

সেখানে তাদের প্রার্থনা হবে, ‘মহা পবিত্র তুমি হে আল্লাহ’ এবং পরস্পরের সম্ভাষণ হবে ‘সালাম’। আর তাদের প্রার্থনার সমাপ্তি হবে ‘সমস্ত প্রশংসা বিশ্বচরাচরের প্রতিপালক আল্লাহর জন্য’ (সূরা ইউনুস ১০)

আরও পড়ুন-হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। ৩য় পর্ব

বান্দার উপর মহান আল্লাহর নেয়ামত অগনিত। এই অজস্র নে‘মতসমূহের শুকরিয়া আদায় করা বান্দার পক্ষে সম্ভব না হ’লেও তাকে আরও বেশী বেশী কল্যাণের অনুসন্ধানে ব্যস্ত থাকাটাই সমীচীন। এ বিষয়ে আল্লাহ বলেন, لَئِنْ شَكَرْتُمْ لَأَزِيدَنَّكُمْ وَلَئِنْ كَفَرْتُمْ إِنَّ عَذَابِي لَشَدِيدٌ ‘যদি তোমরা কৃতজ্ঞতা স্বীকার কর, তাহলে আমি অবশ্যই তোমাদেরকে বেশী বেশী করে দেয়। আর যদি অকৃতজ্ঞ হও, তাহ’লে (মনে রেখ) নিশ্চয়ই আমার শাস্তি অত্যন্ত কঠোর’ (সূরা ইবরাহীম ৭)

আর তাইতো ফরয হজ্জ পালনরত হাজী ছাহেবরা আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে বলে, إِنَّ الْحَمْدَ وَالنِّعْمَةَ لَكَ অর্থ ‘নিশ্চয়ই যাবতীয় প্রশংসা ও অনুগ্রহ সবই তোমার’।

আল কুরআনে মুসলিম উম্মাহকে ‘উম্মাতে ওয়াসাতা “ অর্থাৎ সর্বোৎকৃষ্ট ও মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী জাতি হিসেবে বিশ্ব নেতৃত্বের আসন দান করা হয়েছে। এদের দায়িত্ব হলো, মানবসৃষ্ট ভেদাভেদের প্রাচীর চূর্ণ-বিচূর্ণ করে সব মানুষকে এক কাতারে দাঁড় করিয়ে দেয়া। নামাজের জামাতে যেমন শাসক-শাসিত ও প্রভু-ভৃত্যে কোনো পার্থক্য রাখা হয়নি, হজের ক্ষেত্রে এ সাম্যের পরিধি বহুদূর পর্যন্ত বিস্তৃত। জামাতে নামাজ আদায়কালে নির্দিষ্ট কোনো পোশাক পরিধান শর্ত নয়; কিন্তু হজ ও উমরাহ আদায়ের ক্ষেত্রে এ সুযোগ রাখা হয়নি। কাবাঘরের সেবক বা যেকোনো পরাশক্তির কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব হোক, তাকে অবশ্যই রাজমুকুট ছেড়ে সেলাইবিহীন বস্ত্র পরিধান করে হজ-উমরাহর জন্য যেতে হবে।

হজ-উমরাহ আদায়কালে সাজসজ্জা, ভোগ-বিলাস, বৈধ পন্থায় যৌন সম্ভোগ থেকে দূরে অবস্থান করতে হবে। ঝগড়া-ফ্যাসাদ, দাঙ্গা, তর্ক-বিতর্ক, অশ্লীল বাক্য বর্জনপূর্বক দৃষ্টি সংযত রাখতে হবে। সেখানে শাসক-শাসিত, মনিব-ভৃত্য ও গাত্র বর্ণে কোনো ভেদাভেদ থাকে না। সব প্রকার সাম্প্রদায়িকতা আর বর্ণবাদ থাকে পায়ের নিচে। শাসক-শাসিত সবাই একই পোশাকে একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনায় হজ পালনপূর্বক সাম্যের সর্বশ্রেষ্ঠ দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।

হজে গমনকারী মানুষের কণ্ঠ উচ্চারিত বাক্যগুচ্ছের অর্থ অনুধাবন করুন। মানুষটি যেন জীবনের শেষ গোসল করে পরিধান করল কবর জগতে শয়নের পোশাক। এর অর্থ হজে গমনেচ্ছুক মানুষদের অনুধাবন করতে হবে, না করলে হজপূর্ব আর পরের জীবনে কোনো পার্থক্য পরিলক্ষিত হবে না। মানুষটি যদি সমগ্র পৃথিবীর ধন-সম্পদের অধিকারীও হয়, মৃত্যুর পর সামান্যতম সম্পদও সাথে নিতে পারে না। হজে গমনেচ্ছুক মানুষটি কবর জগতের পোশাক পরিধান করে এ কথাই প্রমাণ করছে, পার্থিব কোনো বস্তুর প্রতি তার সামান্যতম আকর্ষণও নেই। সেলাইবিহীন মাত্র দুই খণ্ড সাদা কাপড় পরিধান করে দুই রাকাত নামাজ আদায় শেষ করা মাত্রই সে মুখে উচ্চারণ করতে থাকল, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইকা লা শারিকা লাকা লাব্বাইক। ইন্নাল হামদা ওয়ান্নিয়ামাতা লাকা ওয়াল মুলক্, লা শারিকা লাকা।

আরও পড়ুন-হজ্জ জীবনে একবার কিন্ত প্রভাব সারা জীবনের।। চতুর্থ পর্ব

ইহরাম বাঁধার পর মানুষটি যা বলছে এবং যারা শুনছে, উভয়ে যদি তা বুঝে বাস্তব জীবনে অনুসরণ করত, তাহলে এ পৃথিবীতে আল্লাহর সাম্রাজ্য কায়েম হতো,শান্তি-সমীরণ প্রবাহিত হতো। ইহরাম বাঁধার পর মানুষটি নির্ভীক চিত্তে বলিষ্ঠ কণ্ঠে সব স্বৈরাচার জালিমগোষ্ঠী, অশান্তি-বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী তাগুতি শক্তিকে হুমকি প্রদর্শন করে ঘোষণা করছে, ‘আমি সব শক্তিকে উপেক্ষা করে আমার আল্লাহর আদেশে তাঁরই মনোনীত কেন্দ্রীয় দফতরে উপস্থিত হয়েছি। আমি আমার আল্লাহর ডাকে এখানে উপস্থিত হয়েছি, যাঁর কোনো অংশীদার নেই। সৃষ্টি জগতের সৃষ্টি কাজে, এর আইন-কানুন রচনা ও প্রয়োগে কারো সামান্যতম অংশও নেই। অবশ্যই সব প্রশংসা মহান আল্লাহর। দৃশ্য-অদৃশ্যমান সব সম্পদরাজির মালিক তিনি, সৃষ্টিজগতের তিনিই সার্বভৌম ক্ষমতার একচ্ছত্র মালিক, তাঁর সার্বভৌমত্বে কারো সামান্যতম অংশও নেই’। তালবিয়ার এটিই ব্যাখ্যামূলক অর্থ।

উল্লিখিত কথাগুলো যে মানুষটি হজ আদায়কালে অবিরাম উচ্চারণ করল, সেই মানুষটিই হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করে যদি জালিম স্বৈরাচারের গুণ-গানে মত্ত হয়ে তার আনুগত্য করে, তাহলে এর থেকে স্ববিরোধিতা আর কী হতে পারে? ইহরাম পরিধানকারী মানুষটি মুখে যা উচ্চারণ করল, অথচ হজ থেকে প্রত্যাবর্তন করেই কুরআনের বিধানের বিপরীত বিধানের পক্ষে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে শিরকের মধ্যে নিমজ্জিত হলো, ক্ষমতাধর মানুষকে বানালো ভাগ্যবিধাতা। এটি বড় ধরনের গুনাহ, অথচ মানুষের জীবন থেকে গুনাহ মুছে দেয়ার জন্যই হজ ফরজ করা হয়েছে। হজের শিক্ষা বাস্তবায়ন না করে হজের আনুষ্ঠানিকতা পালন করে কোনো অর্জন সম্ভব নয়।

আল্লাহ আমাদের হজ্জে তালবিয়াহ পাঠের তাৎপর্য অনুধাবনের মাধ্যমে অন্তর ও জ্ঞানের প্রসারতা দান করুন, দীন কায়েমের শপথে অটুট রাখুন। আমীন!

চলবে…

লেখকঃ কলাম লেখক এবং সাবেক এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে লেখক জামান শামস

আরও পড়ুন