Ads

আজকে জাতীয় (শোক) দিবস

সুমাইয়া সুলতানা তামিমা

আজকে জাতীয় একটি দিবস। কেউ বলে স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যু দিবস,কেউ বলে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার জন্মদিন,কেউ বলে শহীদ মালেকর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী শিক্ষা দিবস আবার কেউ বলে মালিবাগ শহীদ দিবস। মোট ৪(চার)টা দিবস নিয়ে আজকের দিন।তাই বলা যায় আজকে জাতীয় দিবস ।

আচ্ছা আমরা যারা এখন এদেশের নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠেছি, তারা কি ১৯৬৯ সালে কেউ ছিলাম? না ছিলাম না। তখনকার এইদিনে শহীদ মালেক এদেশে ইসলামী শিক্ষা প্রবর্তন করার জন্য যখন বলিষ্ঠ কন্ঠে আওয়াজ দিয়েছিল তখন তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় নির্মমভাবে হত্যা করে। সে শহীদ হয়ে গিয়েছে আর আজ আমরা উন্মুক্তভাবে ইসলামী শিক্ষা আয়ত্ত করতে পারছি। তা না হলে তো শুধু নামেই মুসলিম থাকতাম। সুতরাং দিবস হিসেবে এটাও কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ।

আবার দেখুন! ১৯৭১ সালে আমরা কেউই ছিলাম না (মুক্তিযোদ্ধা বাদে)। ছিল শেখ মুজিবুর রহমান। যার ঘোষণায় মুক্তিযোদ্ধারা গর্জে উঠেছিল পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে। হাল ছেড়ে দেওয়া বাংলাদেশীদের তখন ফের জাগ্রত করার জন্য তার সেই ঘোষণা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে যে এখন আমরা স্বাধীন সার্বভৌম দেশে বাস করছি। আর সেই মুক্তিযুদ্ধের পুরো ৯ (নয়) মাস নিজের জীবন বাজি রেখে জাতির কমান্ড হয়ে যুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। বঙ্গবন্ধু ঘোষণা দেওয়ার পরই পাকিস্তানের হাতে আটক হন তারপর সেই ঘোষণা বাস্তবায়ন করেছে মেজর জিয়াউর রহমান। আমরা কিন্তু একজন রেখে আরেকজনে অস্বীকার করতে পারবো না। স্বাধীনতার পর ১৯৭৫ সালে এইদিনে যখন বঙ্গবন্ধুকে নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছে। তখন দেশ নামক বৃক্ষের গোড়াটা কেটে ফেলা হয়েছে। তিনি না থাকলে এদেশ হয়ত পরাধীনই থেকে যেত। আপনি যদি অবিশ্বাস করেন তাহলে বলব, কখনো কি কারো আদেশ/উপদেশ/আগ্রহ/উৎসাহ ছাড়া আপনি বৃহৎ কোন কাজ আজ পর্যন্ত করতে পেরেছেন? পারবেন না, কারণ হুকুম/উৎসাহ দেবার মত একজন মানুষ দরকার আমাদের।

সুতরাং বঙ্গবন্ধুর জন্য এদেশ স্বাধীন হয়েছে এটা বিশ্বাস করতেই হবে। তিনি ছিলেন বলেই আজ আমরা মুক্তাকাশে নিঃশ্বাস নিতে পারছি।

স্বাধীনতার পর জিয়াউর রহমান প্রেসিডেন্ট হয়ে দেশের কল্যাণে কাজ করেছেন এবং একটি রাজনৈতিক দল গঠন করেছে যার মাধ্যমে পরবর্তীতে তার স্ত্রী সামান্য হলেও দেশের কিছু কাজ করেছে। যেমন, দরিদ্র শিক্ষার্থী মেয়েদের ডিগ্রি পর্যন্ত উপবৃত্তি প্রদান। তাকেও স্বরন করতে হবে এই দিনে। বেগম খালেদা জিয়া বর্তমানে ভীষণ অসুস্থ হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে। তার জন্য দোয়া করতে হবে।

সবশেষে মালিবাগ শহীদ দিবস, এটা আমি বিস্তারিত জানিনা। কি জানি মসজিদ রক্ষা নিয়ে একটা ঝামেলা হয়েছিল। সেখানে নিরাপরাধ একটা ছাত্র হত্যা করা হয়। এটা চরমোনাই দরবারের একটি স্বরণীয় ঘটনা। তাদের কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ।

এখন আসুন দিবস গুলোর গুরুত্ব বোঝার চেষ্টা করি। শহীদ মালেক যেমন এদেশে ইসলামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠা করার জন্য বিপ্লব করছেন ঠিক তেমনি বঙ্গবন্ধু এদেশ স্বাধীন করার জন্য ঘোষণা দিয়েছেন। আবার যিনি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন তার স্ত্রী ও সন্তানদেরেও এদেশে ভূমিকা আছে। জন্মদিন পালন শরিয়তে জায়েজ নেই তবে দোয়া মিলাদ করা যায়। অতঃপর মালিবাগে মসজিদ রক্ষা করতে গিয়ে কেন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশে একজন নিষ্পাপ ছাত্র শহীদ হলো! এটাও গুরুত্বপূর্ণ।

তাই আজকের এই দিনে আসুন সবার জন্য দোয়া করি যেন আল্লাহ তাদের ক্ষমা করে দেয়। এদেশের পূর্বপুরুষদের স্বরন করা আমাদের একান্ত কর্তব্য। আমার দল ওর দল নিয়ে না থেকে একজন আদর্শ বাংলাদেশী হিসেবে আজকের দিনটা অন্তত কাটিয়ে দেই।

লেখকঃ কবি ও কলাম লেখক

লেখকের আরও লেখা পড়ুন-

ইসলামী সংস্কৃতির কাণ্ডারি কবি মতিউর রহমান মল্লিক

আরও পড়ুন