Ads

চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের একাল সেকাল   

রেজাউল করিম মুকুল

তিস্তার পানি সংরক্ষণে চীনের অর্থায়ন খয়রাতি নয়, বলতে পারেন খাতির। বৈশ্বিক কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ এশিয়ার সংযোগসেতু হিসেবে বিবেচিত হয়। এশিয়ার দুই বৃহৎ দেশের মধ্যখানে বাংলাদেশের অবস্থান, যার একটি উদীয়মান ভারত। অন্যটি হলো চিন, যা ইতিমধ্যে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে।

সুধা রামচন্দ্র বাঙালুরু থেকে লিখেছেন“ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষবর্ধণ শ্রিংলা সম্প্রতি হন্তদন্ত হয়ে বাংলাদেশে ছুটে এসেছিলেন যে কারণে তার একটি হতে পারে তিস্তা। তিস্তা নদীর পানি সংরক্ষণ ও ব্যবস্হাপনা বিষয়ক ৯টি প্রোজেক্টে বাংলাদেশ চীনের কাজ থেকে ৬.৪ বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন পেতে যাচ্ছে। তাছাড়া পায়রা সমুদ্রবন্দর, বরিশালভোলা মহাসড়ক ও সেতু এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পার্ক নির্মাণে চীনের সহযোগীতা উল্লেখযোগ্য। হিমালয়ের চুনথাং থেকে উৎপন্ন হোয়ে সিকিম এবং উত্তরে পশ্চিমবঙ্গের আধা ডজন জেলা অতিক্রম করে বাংলাদেশে ২৮০০ বর্গ কিমি স্হান দখলে রেখেছে তিস্তা। এ বছর সিকিম এর বর্ডার রোডস সংস্হা ৩৬০ মিটার দীর্ঘ বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করেছে তিস্তার উপর।”

তিস্তা রিভার কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট এন্ড রেসটোরেসন প্রোজেক্ট এর জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৮৩.২৭ মিলিয়ন ডলার, চীন দেবে ৮৫৩.০৫ মিলিয়ন ইউএস ডলার ঋণ সহায়তা। বাকিটা বাংলাদেশ সরকার বহন করবেন। কাজটি সম্পন্ন করবেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। ৩১৫ কিমি দীর্ঘ তিস্তার ১১৩ কিমি প্রবাহিত হয় বাংলাদেশের ভিতর দিয়ে যা কোথাও .৭০ কোথাওবা ৫.৫ কিমিঃ চওড়া আর এর গড় গভিরতা ৩.১ কিমি। বাংলাদেশের মাননীয প্রধানমন্ত্রী গত বছর জুলাইতে চিন সফরকালে টিআরসিএমআর প্রোজেক্টটির জন্য চীনা অর্থায়নের প্রস্তাব করেন। বর্ষা ও খরা মৌসুমে তিস্তাকে পানি ধারনে সক্ষম করাই এ প্রেজেক্টের লক্ষ্য। বাংলাদেশ ১৯৯৬ খ্রিঃ ভারতের সাথে চুক্তির আলোকে তিস্তার পানির ন্যায্য হিস্সা না পেয়ে চীনের সহায়তায় এই মেগা প্রকল্পের পরিকল্পনা করেছে। সে সময় চিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট ঝিজিনপিং অত্যন্ত সাদরে তা গ্রহন করেন এবং অনুমোদনের আশ্বাস দেন, এটা সেটাই।

এশিয়া প্যাসিফিক ট্রেড এগ্রিমেন্টের আওতায় চিনে আগের থেকে ৩০৯৫টি বাংলাদেশী পণ্য শুল্কমুক্ত ছিলো, এবার নতুন করে ছাড় দেওয়ায় চিনে শুল্কহীন হল ৮২৫৬টি বাংলাদেশি পণ্য। চীন সরকার জানিয়েছে, স্বল্পোন্নত দেশের আর্থিক উন্নয়নে সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তবে শুল্ক ছাড় ছাড়াও বাংলাদেশে বিনিয়োগও বাড়িয়েছে চীন। চীন বাংলাদেশের ব্যবসায়িক বন্ধু দীর্ঘদিনের। গত বছর দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা হোয়েছে প্রায় ১৮ বিলিয়ন। এ বছর ৯৭ ভাগ পণ্যে কোন কর আরোপ না করার ঘোষণার ফলে ব্যবসা বেড়ে যাবে ৩০ বিলিয়নে। ২০১৬খ্রিঃ এর পর থেকে চিনবাংলাদেশ সম্পর্ক বেশ মজবুত হোতে থাকে। বেল্ট এন্ড রোড ইনিসিয়েটিভ এর আওতায় এরই মধ্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ১০ বিলিয়ন ডলার।

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক কিছুটা বিতর্কিত ও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ভারতের এনআরসি ও সিএএ ইস্যুতে যখন ভারতের মুসলিমদের বাংলাদেশ থেকে যাওয়া অবৈধ অনুপ্রবেশকারি আখ্যায়িত করা হচ্ছিলো। বিশেষ করে বিজেপি মহাসচিব ও গৃহমন্ত্রী অমিত শাহ বাংলাদেশের মুসলিমদের উইপোকা আখ্যায়িত করতেন। ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনটিকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী অযথা অর্থহীন বলেছেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ সিমান্তে বিএসএফ এর হত্যাকান্ড বাংলাদেশের মানুষকে ভারত বিদ্বেষী করে তুলেছে। তদুপরি ভারতের সাথে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক আগের মতোই বিদ্যমান। প্রতি বছর ১৫২০ লক্ষ বাংলাদেশী রোগী ভারতে যান চিকিৎসা করাতে। গত বছর ভারত বাংলাদেশ ব্যবসা হয়েছে ৯.২১ বিলিয়ন। আবার বাংলাদেশের বিভিন্ন সেক্টরে ভারতীয় নাগরিকরা চাকুরি করেন এবং ভারতে রেমিট্যান্স পাঠান। ভারতের পূর্ব ও উত্তরের বিচ্ছিন্নতাবাদি উপদ্রুত জেলাগুলোতে শান্তি প্রতিষ্টায় বাংলাদেশের সহযোগিতা ও অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ভারতের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবেই খুবই মজবুত ও বুনিয়াদী। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা ভারতের একাত্তরের সরকারের সাহায্য ও সহায়তা এবং প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির আন্তরিক প্রচেষ্টা এত দ্রুত সম্ভব করে তুলেছিলো। ভারতের নাগরিকত্ব আইন এনআরসি, সিএএ ও এনপিআর সে দেশের অভ্যন্তরিন বিষয় হলেও এসব আইনের লক্ষ্য ভারতের মুসলিম, যাদের অবৈধ্য বাংলাদেশী আখ্যায়িত করা হয়। চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারীর দিল্লি হত্যাকান্ড এনাআরসির একজিকিউশন নমুনা মাত্র। ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২০খ্রিঃ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রথমবারের মতো ভারত সফরের মধ্যেই এনআরসি, সিএএ এবং এনপিআর নাগরিকত্ব আইনের পক্ষেবিপক্ষে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠে রাজধানী নয়াদিল্লি। অতি সম্প্রতি এ্যামেনিষ্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছেন টানা তিনদিন চার রাতের রায়টের একটি পক্ষ ছিলো দিল্রির পুলিশ। ভারতীয় লোকসভায় ৩১১/৮০ ভোটে পাশ হওয়া এনআরসি এর সংশোধনী সিএএ ভারতের সাম্প্রতিক মুসলিম বিদ্বেশী মনোভাবকে উৎসাহিত করেছে, উস্কে দিয়েছে বহুমাত্রিক সহিংসতা। কমরেড জ্যোতি বসু বলেছেন সরকারের অনিচ্ছায় দাঙ্গা হয় না, দাঙ্গা হয় সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে। মুসলিমদের ভারত থেকে বের করে দেওয়ার আইন এনআরসি, সিএএ ও এনপিআরকে বাধা দিয়েছে প্রকৃতি নিজেই। মার্চ থেকে ভারতে কোভিড১৯ এর প্রাদূর্ভাব এনআরসি কার্যক্রমকে থামিয়ে দেয়, সরকারিভাবে বাতিল করা হয় নাই। করোনাভাইরাস শাপেবর হোয়ে ভারতীয় মুসলিমদের রক্ষা করে, এবং এরই মধ্যে লাদাখ সীমান্তে চিনের অবস্হান অনিদৃষ্টকালের জন্য ভারতীয় অভ্যন্তরিন রাজনীতিতে প্রভাব ফেলবে এতে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই।

চীন ও বাংলাদেশের জনগণ প্রাচীনকাল থেকেই পরস্পরের ভালো প্রতিবেশী ও বন্ধু। বাংলাদেশচীন সম্পর্ক অনেক প্রাচীন। দুই হাজার বছর কিংবা তারও বেশি আগের সম্পর্ক। বাংলাদেশকে চীনের সঙ্গে যুক্ত করেছিল যে পথ ইতিহাসে সেটাই সিল্ক রোড নামে প্রসিদ্ধ। পশ্চিমা সিল্ক রোডের সূচনা হয়েছিল রাজধানী সিয়ান (তৎকালীন ছাংআন) থেকে। সেই পথ সিনজিয়াং হয়ে আফগানিস্তানের ভেতর দিয়ে ভারত হয়ে পৌঁছেছিল বাংলাদেশে। চীনারা এক সময় বাংলাদেশকে বলতো 孟加拉国 মংচিয়ালা গুও। গুও অর্থ দেশ, আর বেঙ্গল টাইগার হলো মংচিয়া। ভাষাবিদরা বলেন চীনাদের মং থেকে বং আর বং থেকেই নাকি বাংলা। হবে হয়তো। কয়েক শতাব্দী ধরে এই মংচিয়ালাই চীন  ও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যকার সম্পর্কের সেতুবন্ধ। আরও একটি সিল্ক রোডও ছিল, যার উৎপত্তি হয়েছিল দক্ষিণ চীনের কুনমিং থেকে। এটার নাম ছিলো পূর্ব সিল্ক রোড যা মিয়ানমারের মধ্য দিয়ে সংযোগ স্থাপন করেছিল বাংলাদেশের সঙ্গে। এই দুটি পথ ধরে ব্যবসাবাণিজ্যের প্রসার ঘটেছিল, বৃদ্ধি পেয়েছিল সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান। প্রাচীনকাল থেকে চীন নৌ ও স্থলশক্তিতে অত্যন্ত শক্তিশালি দেশ হওয়া সত্ত্বেও সমগ্র ইতিহাসে চীন অন্য কোনো দেশে নিজেদের উপনিবেশ স্থাপন করেনি, অন্য কোনো দেশ দখল করে নেয়নি। বরং সব দেশের স্বাধীনতাসার্বভৌমত্বের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে এসেছে।

চীনবাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে সব সময় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে প্রতিরক্ষা। প্রাচীনকালের দক্ষিণ রেশমপথ এবং সামুদ্রিক রেশমপথ ছিল দুপক্ষের যোগাযোগ ও বোঝাপড়ার মূল মাধ্যম। এ নিয়ে হাজার বছর ধরে প্রচলিত অনেক ঐতিহাসিক ঘটনাবলী। চীনের পরিব্রাজক ফাহিয়েন ও হিউয়েন সাং এর কথা কার অজানা। ওনারা বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থের সন্ধানে এসেছিলেন বাংলাদেশে। অন্যদিকে, বাংলাদেশের অতীশ দীপঙ্কর চীনে বৌদ্ধ ধর্ম প্রচার করেছেন। চীনের মিং রাজবংশ আমলের সমুদ্রচারী চাংহোও দুবার বাংলা সফর করেন। তিনি লিখেছেন: “এ অঞ্চলের রীতিনীতি সরল। এলাকাটি জনবহুল ও শস্যসমৃদ্ধ। এখানকার উর্বর জমিতে প্রচুর ফলন হয়।প্রাচীনকাল থেকেই চীন ও বাংলাদেশ উভয়ই সমুদ্র উপকূলীয় দেশ বিধায় সমুদ্রপথে তাদের মধ্যকার আদানপ্রদান ছিল চমৎকার। প্রায় ৬০০ বছর আগে চীনের মিং রাজবংশের পরাক্রমশালী সম্রাট ছিলেন ইয়ংলে। সেই সময়ের শ্রেষ্ঠ নাবিক অ্যাডমিরাল ঝেং হে ছিলেন সম্রাটের শান্তির দূত; তিনি ভারত মহাসাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর পরিভ্রমণ করেন। তিনিই সমুদ্রপথে চীনা সিল্ক রোড সৃষ্টি করেন। ১৪০৫ থেকে ১৪৩৩ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অ্যাডমিরাল ঝেং হে শতাধিক জাহাজের বিশাল বহর নিয়ে সাতটি আন্তসমুদ্র অভিযান পরিচালনা করেন এবং এশিয়া ও আফ্রিকার ৩০টি দেশ ও অঞ্চল পরিভ্রমণ করেন। অ্যাডমিরাল ঝেং হের নৌবহর দুবার চট্টগ্রাম বন্দরে এসেছিল। চীনা দোভাষী মাহুয়ানের গ্রন্হ য়িংয়া শাংলানএর বিবরন থেকে জানা যায় চীনদেশ থেকে ৬২টি জলযান ভর্তি ৩ হাজার চৈনিক প্রতিনিধি ২১ দিনে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে পৌঁছান এবং সেখান থেকে নৌকাযোগে অতিথিদের রাজধানী সোনারগাঁয়ে আনা হয়। বাংলার শাসক সুলতান গিয়াস উদ্দিন আজম শাহ তাঁর রাজধানী সোনারগাঁয়ে সাদর অভ্যর্থনা জানান চীন থেকে আসা অ্যাডমিরালকে। সুলতান পরবর্তী সময়ে একটি দীর্ঘ গ্রীবার জিরাফসহ মূল্যবান নানা উপহার পাঠান মিং রাজার দরবারে। চীনা ঐতিহ্য অনুসারে জিরাফকে সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মনে করা হয়। মাহুয়ান নিজেও ঐ দলে ছিলেন।

চিনবাংলাদেশ মৈত্রীর ইতিহাসও অনেক দীর্ঘ। গত শতাব্দীর পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে তৎকালীন চীনা প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই দুবার ঢাকা সফর করেন। বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সেসময় দুবার চীন সফর করেন। বর্তমানে চীন বাংলাদেশের বৃহত্তম বাণিজ্যিক ও উন্নয়ন সহযোগী দেশ। আর বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ায় চীনের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। চীন ও বাংলাদেশের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ২০০০ সালের ৯০ কোটি মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ২০১৫ সালে ১৪৭০ কোটি ডলারে পৌঁছায়। এক্ষেত্রে বার্ষিক বৃদ্ধির হার প্রায় ২০ শতাংশ। বাংলাদেশের পাটজাতীয় পণ্যও চীনের বাজারে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। চীন ইতোমধ্যেই বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি সর্বাধুনিক নির্মাণপ্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে শাহজালাল সার কারখানা ও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্র। বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের স্বপ্নের সেতুপদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ চলছে। পরিবহন, বিদ্যুত, জ্বালানি ও টেলিযোগাযোগসহ নানা ক্ষেত্রে চীনের শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলো এই নির্মাণকাজের সাথে জড়িত আছে। পদ্মা সেতুর নির্মাণে কাজ করছেন ৫ হাজার ৩০০ শ্রমিক। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। তাঁদের সঙ্গে চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানির (এমবিইসি) ৬৬০ জন চীনা প্রকৌশলী ও স্টাফ রয়েছেন। চীনের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত এশীয় অবকাঠামো উন্নয়ন ব্যাংক প্রথম দফায় যেসব প্রকল্পে ঋণ দিয়েছে, সেগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের বিদ্যুত বিতরণব্যবস্থা উন্নয়ন প্রকল্পও অন্তর্ভুক্ত।

যীষু খ্রিষ্টের জন্মেরও ২২১ বছর আগে চীনের প্রথম সম্রাট কুইন সি হুয়ানডি সর্বপ্রথম বিগত দুইশত বছর ধরে বিবাদমান ছোট ছোট রাজ্যগুলোকে একিভূত করেন এবং ঐকের প্রতীক হিসাবে নির্মান করেন ৬৪০০ কিমি দীর্ঘ মধ্য এশিয়া থেকে হোয়াংহো নদী পর্যন্ত পৃথিবীর দীর্ঘতম মনুষ্য নির্মিত প্রাচীর। এটি নির্মান করে তিন লক্ষ যুদ্ধবন্দী দাস। শুধু তাই নয় সম্রাটের নামানুসারে আজকের আধুনিক চীনের নামকরনও হয় ২৩০০ বছর আগে। দখলবেদখলের ঐক্যবদ্ধ চীন সেই থেকে আজ অবধি আর কখনোই ভাঙ্গেনি বরং এর সাথে যুক্ত হয়েছে হংকং ও পর্তুগালের কলোনী ম্যাকাও। মধ্য এশিয়ার বহিঃশত্রুর আক্রমনের হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার উদ্দেশ্যে হলেও চীনের প্রাচীরটি অতীতের মত আজও বিরাট বিশাল এক জণগোষ্ঠীর ঐকের প্রতীক। মাঝে এটি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্হ হলেও ১৪৪৮ সালে পূননির্মান করা হয়। আর আধুনিক যুগে প্রায়সই এর শ্রীবৃদ্ধি করে সরকারগুলো ।

 

লেখকঃ কলামিস্ট

 

আরও পড়ুন