Ads

গাজায় আল জাজিরার ভবন গুড়িয়ে দিল ইজরায়েলি সৈন্য

মো: রাফি

গাজার যে ভবনে আল জাজিরা, এপিসহ বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক মিডিয়ার আউটলেট ছিলো, তা বম্বিং করে গুড়িয়ে দিয়েছে ইজরায়েল।সাম্প্রতিক সময়ে প্যালেস্টাইনে ইজরায়েলি আগ্রাসনের যে হৃদয়বিদারক চিত্র আমরা চাক্ষুষ অবলোকন করি তার পেছনে বিশেষ ভূমিকা আছে আল জাজিরা, টিআরটিসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়ার।

সো কল্ড বৈশ্বিক লিবারেল মিডিয়াগুলোও যখন এই ইস্যুতে জঘন্য একচোখানীতি অবলম্বন করছে, তখন ঘন্টায় ঘন্টায় লাইভ আপডেট দিয়ে গাযা সংকট দুনিয়াজুড়ে প্রচার করে গেছে আল জাজিরা, টিআরটি, আনাদুলো এজেন্সিসহ বেশ কয়েকটি মিডিয়া।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে মানুষের রাস্তায় নেমে আসার পেছনেও এই মিডিয়াগুলোর বড় অবদান আছে।

আর স্বভাবতই এই ব্যাপারটা ইজরায়েলের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিলো। এরই ফলস্বরূপ গাযায় অবস্থিত ‘আল জালা টাওয়ার’ গুড়িয়ে দিলো ইজরায়েল।এই টাওয়ারেই ছিলো আল জাজিরা, এপিসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের আউটলেট।

ভবনের মালিক জাওয়াদ মেহেদি বলেন, ‘ইজরায়েলি ইন্টেলিজেন্স অফিসার হামলার হুমকি দিয়ে আমাকে ফোনে জানায়, ১ ঘন্টার ভেতর ভবন থেকে সবাইকে সরে যেতে। আমি আর ১০ মিনিট বেশি সময় দিতে অনুরোধ করি যাতে ভবন থেকে সাংবাদিকরা তাদের প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি সরিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু ইজরায়েলি অফিসার আমার প্রস্তাব কানে না তুলে বলেন, প্রাণহানি না চাইলে ১ ঘন্টার ভেতর সবাইকে সরিয়ে নাও।”

আল জাজিরার রিপোর্টার আল খালুত জানান, ‘সাংবাদিকরা চেষ্টা করেছে যতোটা পারে প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি, বিশেষ করে ক্যামেরাগুলো সরিয়ে নিতে পারে।’

তিনি আরো বলেন ‘আমি এ ভবনে ১১ বছর কজ করেছি। মাঝেমাঝে এর ছাদ থেকেও রিপোর্ট করতাম। সবকিছু ২ সেকেন্ডে শেষ হয়ে গেলো।’

তিনি জানান,’ এতোকিছুর পরও আমাদের রিপোর্টাররা ১ সেকেন্ডের জন্যও কাজ বন্ধ রাখেনি। তারা বিকল্প উপায়ে সংবাদ প্রচার করে যাওয়ার চেষ্টা করছে।’

এপি নিউজ এজেন্সির সিইও গ্যারি প্রিট বলেন,’ তারা অনেকদিন আগে থেকেই জানতো এই ভবনে আমাদের সংবাদমাধ্যমের কার্যালয় আছে। আমাদের সাংবাদিকরা সেখানে ছিলো। ডজনের ওপর এপি সাংবাদিক এবং ফ্রিল্যান্সার ছিলো সেখানে। তারা কোনক্রমে মৃত্যু এড়িয়েছে। ‘

তিনি আরো বলেন,’ আজকে যা হলো তার ফলে পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাসী গাজা সম্পর্কে খুব কম তথ্যই জানতে পারবে।’

ইথিকাল জার্নালিজমের আইদান হোয়াইট ইজরায়েলের এ কাজের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘ইজরায়েল অনেক আগে থেকেই সংবাদমাধ্যগুলোর ওপর হামলা করে আসছে, সেসব সংবাদমাধ্যমের ওপর যাদের তারা চুপ করিয়ে দিতে চায়।’

হোয়াইট হাউজ অবশ্য ইজরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে তাদের ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’ নীতি বজায় রেখেছে। বিবৃতিতে এ কাজের তেমন কোন সমলোচনা না করে তারা বলেছে, ‘ প্রাণহানি এড়ানোই এক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ। ‘

সংবাদমাধ্যমের ওপর এমন হামলা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। অবশ্য ইজরায়েল আইনের থোড়াই কেয়ার করে। সম্ভবত গাযায় তারা আরো বড় ধরনের আগ্রাসন চালাতে যাচ্ছে। সেই আগ্রাসনের সঠিক চিত্র আপনার আমার কাছে পৌঁছানোর খুব বেশি সুযোগ হয়তো রইলোনা আর…

আরও পড়ুন