Ads

চিরন্তন গন্তব্যে চলে গেলেন আইন অঙ্গনের কিংবদন্তি বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ

।। সাবিকুন্নাহার মু্ন্নী ।।

জাতির একজন আস্হাভাজন, অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন জনপ্রিয় অভিভাবক বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ মহান রবের ডাকে সাড়া দিয়ে  চলে গেলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৯২ বছর বয়স। তিনি ২ ছেলে ১ মেয়ে ও নাতি-নাতনি রেখে গেছেন। সুপ্রিম কোর্টের আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি ও সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তিনি অত্যন্ত যোগ্যতা ও বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন।

রাজধানী ঢাকার মগবাজারস্থ ইনসাফ বারাকা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ ৯ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টায় ইন্তিকাল করেছেন । তিনি দীর্ঘ দিন যাবৎ হৃদযন্ত্রের জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। মহান আল্লাহ তাঁর সকল গুনাহগুলো মাফ করে দিয়ে , তাঁর নেক আমলসমূহ কবুল করুন এবং তাঁকে জান্নাতে উচ্চ মাকাম দান করুন।

বিচারপতি মোহাম্মদ আবদুর রউফ তার দীর্ঘ বর্নাঢ্য জীবনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। ১৯৯০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত তিনি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি সুষ্ঠ গ্রহনযোগ্য ও অবাধ নির্বাচনের ভিত্তি স্হাপন করে গেছেন।

মৃত্যু পূর্ব পর্যন্ত তিনি দুর্নীতিবিরোধী জাতীয় সমন্বয়ক কমিটির চেয়ারম্যান এবং জাতীয় শিশু সংগঠন ফুলকুড়ির সভাপতি ও ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কো. লি. এবং প্রাইম ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের শরীয়াহ বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। আইন অঙ্গনে তিনি অত্যন্ত আমানতদারিতা , পেশাদারিত্ব, স্বচ্ছতা এবং দায়িত্ববোধের সাথে দায়িত্ব পালন করেছেন যার উদাহরণ একবারেই বিরল। তিনি সাহসের সাথে সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে,জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মজলুমের পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং আইনি সহায়তা প্রদান করেছেন।আইনঅঙ্গনে তার এ সাহসী ভূমিকা ইতিহাসে স্মরনীয় হয়ে থাকবে।

আরও পড়ুন-

হিযাব ইসলামী সংস্কৃতি ও সভ্যতারও প্রতীক

বাংলাদেশের নির্যাতিত মজলুমদের পক্ষে দৃঢ় অবস্হান, আইনের শাসন, গণতন্ত্র , মানবাধিকার এবং ন্যায়ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তিনি আজীবন সংগ্রাম করে গিয়েছেন। দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের ফ্যাসিজমের পর বর্তমানে দেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার এই সূচনালগ্নে তার মতো একজন প্রাজ্ঞ ব্যক্তিত্বের বড় প্রয়োজন ছিল। তার মতো একজন বরেণ্য ও বিজ্ঞ অভিভাবককে হারিয়ে গোটা জাতি যেন আজ শোকে মুহ্যমান!

ব্যক্তিগত জীবনে এমন একজন আল্লাহ প্রেমী খালেস বিচারপতির জন্যই যেন রাসূল সাঃ এর ঘোষণা-“কিয়ামতের দিন আল্লাহর আরশের নীচে ৭ ব্যক্তির স্হান হবে তার মধ্যে অন্যতম একজন হচ্ছেন ন্যায় পরায়ন বিচারক।”

আমরা বিচারপতি আব্দুর রউফের মাঝে সে গুণাবলী দেখতে পেয়েছি ।মহান আল্লাহ যেন তাকে সেই কঠিন দিনে তাঁর আরশের নীচে স্হান করে দেন। আমরা তার শোকাহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।মহান আল্লাহ জাতিকে এ শূন্যতা পূরন করার তৌফিক দিন।

লেখকঃ  কলাম লেখকঅ্যাডভোকেট  এবং নির্বাহী পরিচালকমানবাধিকার ও আইনী সুরক্ষা কেন্দ্র (মাসুক)

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল, আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ গল্প ও কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেইজ মহীয়সী/Mohioshi-তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হ্যাঁ, মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল-

[email protected] ও [email protected] -এ; মনে রাখবেন, “ধন দৌলত খরচ করলে কমে যায়, কিন্তু জ্ঞান বিতরণ করলে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়”। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনি জ্ঞান দান করেন।” (সহিহ বুখারী- ৭১, ৩১১৬, ৩৬৪১, ৭৩১২, ৭৪৬০; মুসলিম- ১০৩৭; ইবনে মাজাহ- ২২১) ।

মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম; আজই আপনি যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে।  আসুন, ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ, সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি। আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমীন।

আরও পড়ুন