Ads

প্যারেন্টিং এর জন্য প্রস্তুতি কখন থেকে শুরু করবেন?

।। কানিজ ফাতিমা ।।

আপনি যেদিন থেকে প্যারেন্টিং সম্পর্কে সচেতন হয়েছেন সেদিন থেকেই এই দক্ষতা অর্জনের কাজ শুরু হয়ে যায় । আপনার সন্তান আপনার ও আপনার সঙ্গীর কাছ থেকেই মূলত সুঅভ্যাস ও বদঅভ্যাসগুলো শিখবে । কাজেই আপনি আপনার সন্তানের মধ্যে যে সুঅভ্যাস দেখতে চান টা আজ থেকেই নিজের মধ্যে রপ্ত করতে শুরু করুন । আপনার যা বদ অভ্যাস রয়েছে যা আপনি আপনার সন্তানের মধ্যে দেখতে চান না টা এখন থেকেই বর্জনের পরিকল্পনা শুরুর করুন । একটা ব্দ অভ্যাস ত্যাগ করতে সময় লেগে যায় অনেক ।

যেমন ধরুন আপনি যদি চান আপনার সন্তান ভোরে ঘুম থেকে উঠুক, বা আপনি যদি চান আপনার সন্তান পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুক- তবে আপনাকে এই অভ্যাসগুলো আগে রপ্ত করতে হবে ।

আবার যদি চান আপনার সন্তান ধুমপান না করুক, বা আপনার সন্তান মিথ্যা না বলুক, তবে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে এই বদঅভ্যাস যাতে আপনার মধ্যে না থাকে ।  আপনি যদি চান আপনার সন্তান বই পড়তে পছন্দ করুক, তবে আপনাকে নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস করতে হবে আগে । এক কথায় বলা যায় আপনি যে বিষয়ে সন্তানকে প্রশিক্ষিত করতে চান সেই বিষয়ে দক্ষতা আগে নিজে অর্জন করতে শুরু করুন । এর পরিকল্পনা যথেষ্ট সময় থাকতেই শুরু করুন । এটাই আপনার প্যারেন্টিং-এর প্রথম প্রস্তুতি ।

আরও পড়ুন-

সুষ্ঠু প্যারেন্টিং এর জন্য কী জানবেন?

অনেকে মনে করেন ‘এখনো বিয়েই হয়নি’ বা ‘কেবলই বিয়ে হয়েছে এখনো অনেক সময় বাকী । বিয়ে হওয়া পর্যন্ত বা বাবা-মা হওয়ার সংবাদ আসা পর্যন্ত অন্তত অপেক্ষা করি, তারপর এসে ভাবা যাবে ।’ এটা সত্য যে প্যারেন্টিংয়ের বাস্তবায়ন শুরু হয় বাবা-মা হওয়ার সংবাদ আসার সময় থেকে কিন্তু প্রস্তুতি পর্বটা শুরু হয় তার অনেক আগেই । চিন্তা করে দেখুন বিয়ের সাথে সাথে আপনার দায়িত্ব ও কাজের পরিমাণ অনেকগুনে বেড়ে যাবে । এক নতুন ডায়নামিকের সাথে মানিয়ে নিতে আপনাকে অনেকটা সময় ও চিন্তা খরচ করতে হবে । নতুন একজন মানুষের সঙ্গে একসাথে থাকার জন্য আপনার নিজের অনেক পরিবর্তন পরিমার্জন করতে হবে, নতুন অনেক কিছু শিখতে হবে, নতুন একটা পরিবারের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য সময় ও মনোযোগ দিতে হবে, আপনার সঙ্গীর সঙ্গে আপনার নিজের দিকের পরিবারের সদস্যদের সম্পর্ক স্থাপনের  সুব্যবস্থা করে দিতে হবে, দুইটি পরিবারের মধ্যে যোগাযোগ ও সম্পর্ক স্থাপনের সুবন্দোবস্ত করতে হবে । এতসব দিকে নজর রাখা ও তা সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে আপনার অনেক সময় ও শক্তি খরচ হবে। সে সময় এর সাথে সাথে নিজের প্যারেন্টিং স্কিল বাড়ানো আপনার স্ট্রেসের পরিমাণকে অনেকগুনে বাড়িয়ে দেবে । তাই জ্ঞানার্জন ও নিজেকে গড়ার প্রস্তুতিটা আগেই সেরে ফেলা ভালো ।

একথা সত্য যে সবার পক্ষে বিয়ের আগে থেকেই এই প্রস্তুতি নেয়া সম্ভব হয় না । এতে হতাশ হবার কিছু নেই । যেদিন থেকে আপনি সচেতন হয়েছেন সেদিন থেকেই প্রচেষ্টা চালিয়ে গেলে সেই প্রচেষ্টার ফল পাবেন আশা করা যায় । প্যারেন্টিং একটি প্রবাহের মতো- শুরু যেখানেই হোক না কেন, এরপর থেকে প্রতিনিয়ত প্রবাহিত হতে হয় ।

লেখকঃ লেখক, কলামিস্ট ও প্রবাসী বাংলাদেশী, ক্যালগারি, কানাডা

 

“এই প্রবন্ধের লেখক কানিজ ফাতিমা “প্যারেন্টিং এর মূলনীতি” বইয়ের লেখক”

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল, আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ গল্প ও কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেইজ মহীয়সী/Mohioshi-তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হ্যাঁ, মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইল-

[email protected] ও [email protected] -এ; মনে রাখবেন, “ধন দৌলত খরচ করলে কমে যায়, কিন্তু জ্ঞান বিতরণ করলে উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পায়”। আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনি জ্ঞান দান করেন।” (সহিহ বুখারী- ৭১, ৩১১৬, ৩৬৪১, ৭৩১২, ৭৪৬০; মুসলিম- ১০৩৭; ইবনে মাজাহ- ২২১) ।

মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম; আজই আপনি যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে।  আসুন, ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ, সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি। আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ তাআলা আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমীন।

 

আরও পড়ুন