Ads

সন্তানদের বন্ধু বানাবেন যেভাবে (পর্ব-১)

নুরে আলম মুকতা

আপনি আপনার সন্তানটির বড় শত্রু হয়ে উঠছেন না তো ? দেখুন ভালো করে ভেবে দেখুন। নিজের আচরণের বিষয়ে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিপাত করুন। যদি এরকম আচরণ করে থাকেন আমি বলবো দয়া করে এগুলো পরিহার করুন। একদম রুঢ় আচরণ পরিহার করুন। শাসন ও ভালোবাসার ভারসাম্য রক্ষা করার চেষ্টা করুন। ওদের বন্ধু হতে না পারলে শত্রু হয়ে পড়বেন না দয়া করে। ওরা একদম ব্যতিক্রম সময় অতিক্রম করছে। আর কতো বছর আর শতাব্দী পরে এরকম সময় আসবে কেউ বলতে পারবে না। ওরা একটি দারুন সিস্টেমের মধ্যে ছিলো। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো নিঃসন্দেহে চমৎকার একটি ব্যবস্থার মধ্যে দিয়ে পরিচালিত। ওরা যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত যেতো তখন একটি ব্যবস্থা আর ইন্টারএ্যাকশনের মধ্যে বা পারস্পরিক ভাব বা অনুভূতি আদান প্রদান ব্যবস্থার মধ্যে ছিলো। এটি কিন্তু ছোট্ট বিষয় নয়। একটি শিশু, কিশোরের মনোজগতে বিশাল এক সার্কিট কাজ করে। বায়োলজির ভাষায় আমরা নিউরোনের আজব খেলা বলতে পারি। এটি বিশেষ বিশেষ হরমোন আর কোষ নিয়ন্ত্রন করে। ডিএনএ আর আরএনএ এর বিষয়ে এখানে আলোচনা করার সুযোগ কম। পরে আবার এটি আলোচ্য বিষয় হতে পারে।

যা বলছিলাম, শিশু বা কিশোরের কি দেখবো ? কেমন করে বন্ধু হবো ? একটু আলোচনা করি-
মোবাইল ফোনটি আপনি আর ওর কাছ থেকে প্রত্যাহার করতে পারবেন না। অনুমোদিত সিস্টেমে এখন এটি ওর হাতের মুঠোয়। এটি সাংঘাতিক রকমের যন্ত্র। যারা বলেন এটি প্রজন্ম শেষ করে দিচ্ছে তারাও অসহায়। তবে আমাদের বাঁচার উপায় কি? বড় বড় লেকচার শোনা আর জানার দরকার নেই। আপনি পৃথিবীর সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে উঠুন। ওরা যা যা করতে চায় করতে দিন আপনার গোচরে। একদম নিষিদ্ধ কাজ করতে চাইবে না আপনি যদি বন্ধু হয়ে উঠতে পারেন। মা বাবা কিংবা বড় ভাইবোন থাকলে সবাই মিলে হই হুল্লোড় অথবা গান বাজনায় মেতে যান।

সময় হলে আপনি যে যে ধর্ম অনুশীলন করুন ধর্মের মুল কথাগুলো ওদের ভেতরে প্রবিষ্ট করানোর চেষ্টা করুন। আপনি বাইরে কোথাও গেলে শিশুদের সাথে নিন, মসজিদ,মন্দির,অফিস যেখানেই যান না কেন সাথে নিন আপনার প্রিয় সন্তানটিকে। এতে দুটো লাভ হবে, আপনার নিজেরও আচরণে পরিবর্তন আসবে। আপনার সন্তানটিরও মানসিকতার পরিবর্তন হবে।ও সিদ্ধান্ত নিতে শিখবে। ওরা সাথে থাকলে আপনারও অপরাধ প্রবণতা ধ্বংস হবে।

ছোট্ট একটি অপরাধ বা কুঅভ্যাস ধরি,আপনি যদি ধূমপায়ী হন তবে ওটাও কমে আসবে। বড় কোন বদঅভ্যাস থাকলে ওগুলো তো যাবেই। সন্তানটির সাথে যৌনতা বিষয়ে কথা বলার চেষ্টা করুন। আপনাকে এ বিষয়ে যেঁচে কথা বলতে হবে না। জীবন যাপনের মধ্যেই চলে আসবে। যেমন ধরুন, দুটি কুকুর কুকুরি সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে। আপনার সন্তানটি সহ আপনি হেঁটে যাচ্ছেন। ও যদি প্রশ্ন না করে তবে বুঝবেন ও এটি সম্পর্কে ওর বন্ধুদের কাছ থেকে ভুল মেসেজ নিয়েছে। নিষিদ্ধ মনে করে ও আপনাকে প্রশ্ন করছে না। আর যদি প্রশ্ন করে তবে আপনি ভাগ্যবান। এটি তো নিষিদ্ধ কিছু নয় ভাই। প্রকৃতির লিলা। আপনাকে বন্ধুর মতো করে  বুঝিয়ে দিতে হবে ওর মা আর আপনি না হলে ওর জন্ম অসম্ভব ছিলো। আপনি আর ওর আম্মুর কথা বললেই ও থেমে যাবে। ওদের এইডস,সিফিলিস, গনোরিয়ার মতো রোগ গুলোর কথা বলুন। আমরা বায়োলজিতে এগুলোকে STD বা সেক্স ট্রান্সমিটেড ডিজিজেস বলি।

অনেক সময় নাপিতের সেলুনও প্রাণঘাতি ভাইরাস ব্যাকটিরিয়া ছত্রাক বহন করতে পারে। ইতিমধ্যে আমরা যে ব্ল্যাক আর হোয়াইট ফাঙ্গাস বা ছত্রাক সম্পর্কে জেনেছি তাও কিন্তু যৌনাঙ্গে বেশি আক্রমণ করতে পারে। অদৃশ্য ব্যাকরটিরিয়া আর ভাইরাসের কথা বলুন। এখন অদৃশ্য ভাইরাস বোঝানো সহজ। কোভিড-১৯ এর আক্রমনের ফলে স্বল্পশিক্ষিত লোকেরাও এ সম্পর্কে ইদানীং জেনে গিয়েছে যে অদৃশ্য অনুজীব প্রাণ সংহার করতে পারে। আমাদের আর বোঝাতে কষ্ট হবে না যে অবৈধ সম্পর্ক জীবন বিপন্ন করতে পারে। এটি বোঝাতে পারলে আপনার সন্তান বিশাল ঝুঁকি মুক্ত থাকবে।

(চলবে)

লেখকের অন্যান্য লেখাঃ ভ্রমণ কাহিনীঃ লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (পর্ব-০৩)

ভ্রমণ কাহিনীঃ লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (পর্ব-০২)

ভ্রমণ কাহিনীঃ লাব্বাইক, আল্লাহুম্মা লাব্বাইক (পর্ব-০১)

 

লেখকঃ সাহিত্যিক, শিক্ষক ও সহ-সম্পাদক, মহীয়সী

আরও পড়ুন