Ads

নীরবতা বিতর্কিত পরিস্থিতিতে সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া

।। মূল: মুফতি মেনক।।

।। অনুবাদ: মাসুম খলিলী।।

এক. অন্যের প্রতি অপমানজনক বা আপত্তিকর হওয়ার দরকার নেই। মানুষকে সম্মান করুন। নীরবতা প্রায়শই বিতর্কিত পরিস্থিতিতে সর্বোত্তম প্রতিক্রিয়া। তারা তর্ক করুক, তাদের দ্বিমত হোক। আপনি মাটিতে শক্তভাবে দাঁড়ান। আপনি যখন নীরব থাকবেন এবং উপেক্ষা করবেন, তারা বুঝবে যে তারা আপনার শান্তিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারেনি।

দুই. সর্বশক্তিমান। আপনি আমাদের হৃদয়ের মোড় পরিবর্তনকারী। আপনি এক মুহূর্তের মধ্যে আমাদের আরোগ্য দিতে পারেন। আপনি মুহূর্তের মধ্যে আমাদের ক্ষমা করে দেন। আপনি অসম্ভবকে বাস্তবে পরিণত করেন। আপনি আমাদের যা কিছু দিয়েছেন তার জন্য আমরা যেন সর্বদা কৃতজ্ঞ থাকতে পারি সেই তৌফিক দিন। আমীন।

তিন. আপনি যখনই এমন কাউকে খুঁজে পান যিনি আপনার মধ্যে সেরা কিছু আনেন, এমন ব্যক্তিদের সাথে সংযুক্ত থাকুন! তারা এই সময়ে বিরল ধরনের মানুষ। আজ, অনেকেই অন্যকে নিচে নামিয়ে আনতে ব্যস্ত। সাধারণ লোকেরা তা করে না। এটি তাদের সেই ধরনের নিরাপত্তাহীনতা যার জন্য তারা নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বোধ আনতে অন্যকে নীচে নামানোর অজুহাত তৈরি করতে চায়।

আরও পড়ুন-

কোটা প্রথা যেভাবে জাতিকে অন্ধকারে ঠেলে দিচ্ছে  

পূনশ্চঃ

এক. আপনার জীবনে আপনি অনেক মানুষের সাথে দেখা করবেন। এটা সর্বশক্তিমানের পরিকল্পনার অংশ। কেউ কেউ আপনাকে বারবার আপনার জীবনে যে চক্রটি অনুভব করেছেন তার কথা মনে করিয়ে দেবে। অন্যরা আপনাকে একটি নতুন শুরুর দিকে নিয়ে যাবে। সেজন্য আপনার জীবনে সঠিক ব্যক্তিদের আকৃষ্ট করা গুরুত্বপূর্ণ।

দুই. হতাশ হবেন না। পরিবর্তে ধৈর্য ধরুন; সর্বশক্তিমান এবং আপনার নিজের সাথে। তাড়াহুড়ো করবেন না। আমরা প্রায়ই আশা করি যে সর্বশক্তিমানের সময়সূচী আমাদের মতোই হবে। এটা খুব কমই সেভাবে কাজ করে। আমরা তাড়াহুড়া করছি। তিনি তা করেন না। মনে রাখবেন, তিনি সর্বদা সময়মতো আছেন। এক মুহূর্ত আগে বা পরে না।

তিন. যখন অন্তর অসুস্থ থাকে, যখন অন্তর দুষিত হয়, তখন এমনকি সর্বোত্তম কাজও কিছুতেই হিসাবে আসে না। সুতরাং হৃদয়ই প্রধান ভূমিকা পালন করে এবং এর প্রতি দুর্দান্ত মনোযোগ দাবি রাখে। ঘৃণা, হিংসা, বিদ্বেষ ইত্যাদি থেকে হৃদয়কে মুক্ত করার জন্য সব সময় সর্বশক্তিমানের সাহায্য প্রার্থনা করুন। আপনার আকাঙ্ক্ষাকে বিশুদ্ধ রাখুন।

চার. হেরে যাওয়া আর আশাহত বোধ করা, সমুদ্রের মাঝখানে একটি নৌকায় দুলতে থাকার মতো। ভূমির দেখা নেই। কাল কি হবে তা না জেনে আপনি উদ্বিগ্ন বোধ করছেন। আপনার নেয়া প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে যখন শেষপ্রান্তে নিয়ে আসে তখন সবকিছু আটকে যায়! জেনে রাখুন যে, সর্বশক্তিমানের সাহায্য খুব কাছে। খুবই সন্নিকটে। ধৈর্য ধরুন। আস্থা রাখুন।

পাঁচ. সত্যটি হল সর্বশক্তিমান ছাড়া আপনি কী করছেন তা কেউই ভালোভাবে বুঝতে পারবে না। তিনিই একমাত্র যিনি আপনার প্রকৃত পরিস্থিতি জানেন এবং যখন আপনার প্রয়োজন হয় তখন তা তিনি উপলব্ধি করেন। তিনি আপনাকে আরোগ্য দান করবেন এবং তিনি আপনাকে আবার পূরোপুরি সুস্থ করবেন।

ছয়. যখন কোনও ব্যক্তি সর্বশক্তিমানের কাছ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তখন তাঁর দিকে আরও দশ বা ততোধিক মুখ ঘুরে আসে। ক্ষতি কখনই তাঁর নয়, আমাদের! নিজেকে অন্যের দ্বারা প্রতিস্থাপন হতে দেবেন না। আপনার নাম ভুল দিকটিতে নিবন্ধভুক্ত করবেন না। প্রত্যাবর্তনের জন্য এখনো খুব বেশি দেরি হয়নি। তাঁর দিকে ফিরে যান এবং অবিচল থাকুন।

সাত. সর্বশক্তিমান আমাদের জন্য যা সঞ্চিত রেখেছেন তা নিয়ে কখনো সন্দেহ করবেন না। আমরা বড় ক্যানভাস দেখতে পাই না। আমরা কেবল আমাদের সামনে যা আছে তাতে মনোনিবেশ করি। সর্বোত্তমটি জানেন তিনি। আর দুর্ভাগ্য ভর করলে এ জন্য সর্বশক্তিমানকে দোষ দেবেন না। আমাদের শক্তিশালী করতে এবং ধৈর্য বাড়ানোর জন্য এটি আসে, আমাদের শাস্তি দেয়ার জন্য নয়। এর পেছনে প্রজ্ঞা আছে।

আরও পড়ুন-

মানবতা না থাকলে আমাদের কিছুই থাকবে না

দ্রষ্টব্যঃ

আর যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে তাদেরকে শুভ সংবাদ দিন যে, তাদের জুন্য রয়েছে জান্নাত, যার তলদেশে নদী প্রবাহিত। যখনই তাদেরকে ফলমূল খেতে দেয়া হবে তখনই তারা বলবে, আমাদেরকে – পূর্বে জীবিকা হিসেবে যা দেয়া হত এতো তাই’। আর তাদেরকে তা দেয়া হবে সাদৃশ্যপূর্ণ করেই এবং সেখানে তাদের জন্য রয়েছে পবিত্র সঙ্গিনী। আর তারা সেখানে স্থায়ী হবে। (সূরা বাকারা: ২৫)

রাসুলুল্লাহ সা.বলেছেন, হারাম অর্থের মাধ্যমে (যে শরীরে) মাংস বৃদ্ধি পেয়েছে, তা জান্নাতে প্রবেশ করবে না। অর্থাৎ যে ব্যক্তি হারাম অর্থ ও অবৈধ উপার্জন দ্বারা দেহ গঠন (জীবিকা নির্বাহ) করেছে, জাহান্নামের আগুনই তার প্রাপ্য। (মিশকাত)

রাসুলুল্লাহ সা.বলেছেন,যে ব্যক্তি নিজেকে পাহাড়ের ওপর থেকে নিক্ষেপ করে আত্মহত্যা করবে, সে জাহান্নামে যাবে। সেখানে (পরকালে) সব সময় সে ওইভাবে (দুনিয়ার মতো) নিজেকে নিক্ষেপ করতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি বিষপান করে আত্মহত্যা করবে, সে বিষ তার হাতে থাকবে। জাহান্নামে সব সময় ওইভাবে সে বিষ পাণ করে নিজেকে মারতে থাকবে অনন্তকাল ধরে। যে ব্যক্তি কোনো ধারালো অস্ত্র দ্বারা আত্মহত্যা করেছে তার কাছে জাহান্নামে সে ধারালো অস্ত্র থাকবে, যার দ্বারা সে সব সময় সর্বদা নিজের পেটকে ফুঁড়তে থাকবে। (বুখারি ও মুসলিম)

লেখকঃ একজন মুসলিম শিক্ষাবিদ, ইসলাম প্রচারক ও বক্তা

অনুবাদকঃ মাসুম খলিলী,  কলাম লেখক ও কার্যনির্বাহী সম্পাদক, দৈনিক নয়া দিগন্ত

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা, গল্প  ও কবিতা  পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক! আপনি আপনার পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন, “তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) । আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই । আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে অনুবাদক মাসুম খলিলী

আরও পড়ুন