Ads

কবি ফররুখ আহমদ ও কিছু না বলা কথা

আরেফিন আল ইমরান
আজ কবি ফররুখ আহমদ এর জন্মদিন। ‘মুসলিম রেঁনেসা’র কবি’ হিসেবে সুপরিচিত। আর রোম্যান্টিকতায় তিনি প্রবাদ প্রতীম। তাঁর কাব্য প্রতিভা পরিব্যাপ্ত হয়েছে অতীতের গৌরব থেকে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে। নতুন নতুন শব্দ চয়ন, উৎপ্রেক্ষা, অনুপ্রাস সৃষ্টি করে বাংলা কবিতাকে এক বিশেষ মর্যাদা দিয়েছেন ফররুখ আহমদ। কবি ফররুখ আহমদ এর সাত সাগরের মাঝি, সিরাজাম মুনীরা, মুহূর্তের কবিতা, সিন্দাবাদ , নৌফেল ও হাতেম প্রভৃতি গ্রন্থ তাঁর সৌকর্যময় মেধা ও বিপুল প্রতিভার স্বাক্ষর বহন করে। অথচ দেশ স্বাধীন হওয়ার পর, তিনি এক ঘৃণ্য রাজনীতির শিকার হন। বিভিন্ন রকম বঞ্চনার মধ্য দিয়ে পার করেন নিজের শেষ জীবন।

বুদ্ধিজীবিদের মধ্যে আহমদ ছফা ছাড়া আর কেউই ফররুখের পক্ষে সেভাবে কলম ধরেননি। আধুনিকতার বিপুল সমারোহে যে কবি বাংলা কবিতাকে বিশিষ্ট উচ্চতায় নিয়ে গেলেন, যার শব্দ চয়ন ও কবি প্রতিভা আমাদের জন্য চিরকালীন এক প্রেরণার উৎস হয়ে আছে—সেই ফররুখকেই যেতে হয়েছে দুঃখ-দারিদ্র ও লাঞ্চনার ভেতর দিয়ে। রাষ্ট্রীয় অবহেলার এমন দৃষ্টান্ত আমাদের ভীষণভাবে পীড়া দেয়। মননশীলতা, সাহিত্য প্রতিভা ও শিল্পকলাকে যখন এই রকম বৈষম্যের মধ্য দিয়ে যেতে হয়, তখন তা নেতিবাচক দৃষ্টান্ত হিসেবেই পরিগণিত হয়।

ইসলামের ইতিহাসকে নিজের কবিতায় স্পিরিট হিসেবে নিয়ে ভবিষ্যতের এক পাঞ্জেরীর স্বপ্ন তিনি আমাদের দেখিয়ে গেছেন। দিনশেষে অনেক অবহেলা সত্ত্বেও কবি ফররুখ আহমদের সেই অপরিসীম অবদান—বাংলা সাহিত্য থেকে মুছে যাওয়ার নয়। জন্মদিনে অনেক শ্রদ্ধায় স্মরণ করছি—কবিতার রাজ্যে পাঞ্জেরী হয়ে ওঠা ফররুখ আহমদকে (জন্ম : জুন ১০, ১৯১৮ – মৃত্যু : অক্টোবর ১৯, ১৯৭৪)।

মিরপুর, ১০-০৬-২০২১

আরেফিন আল ইমরান, কলাম লেখক ও সঙ্গীত পরিচালক

লেখকের আরও লেখা –ইসলামী সঙ্গীতের সংকট ও সম্ভাবনা

আরও পড়ুন