Ads

যোগ্যতার কোন বিকল্প নেই

শরীফ হোসেইন

পৃথিবী তার সৃষ্টির পর হতে বা মানব সভ্যতার বিকাশ হওয়া থেকেই পরস্পরের প্রতিযোগীতা চলছে। আদম (আঃ) কে তার যোগ্যতার প্রমান দিয়েই আনুগত্য লাভ করতে হয়েছে। এক জাতি আর এক জাতির উপর প্রভাব বিস্তার করেছে। কোন সময় তা যোগ্যতা দিয়ে কোন সময় বা ক্ষমতা দিয়ে। ক্ষমতা আসলে যোগ্যতার একটি বহিঃপ্রকাশ।

পৃথিবীর কোন ইতিহাস পাওয়া যায় না যেখানে আপনার কোন যোগ্যতা নাই আর সবাই এসে আপনাকে সুন্দর করে আপ্যায়িত করবে। আমরা বাংলাদেশীরা কী কারণে যেন সবসময়ই কান গেল গেল বলে চিৎকার করতেই ভালোবাসি।
মোঘল, ব্রিটিশ কিংবা পাকিস্তান আমলে বলুন না কেন এর ব্যাতিক্রম হয়নি। আমরা সবসময়ই বলেছি ওরা আমাদের শোষন করলো, আমাদের অধিকার খর্ব করলো, নিষ্পেষিত করলো।

কোনো সময় কি শুনেছেন অধিকার অর্জন করতে হলে আমাদের এই এই যোগ্যতা অর্জন করতে হবে, এই যোগ্যতা অর্জন করে আমাদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবো।

স্ট্যাচু নিয়ে আমাদের দেশে বহু আন্দোলন হয়েছে। এ আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে, এর ইসলামিক পার্সপেক্টিভ নিয়ে আমি কোন বক্তব্য দিতে চাইনা।
স্টাচুর উদ্দেশ্য যদি বলি

১. ইতিহাসের সংরক্ষণ ২. সৈন্দর্য্য। আমাদের দেশে যারা এর পক্ষ নেন তারা কি এর কোনটা মানেন!!! এক শ্রেণি টাকার লোভে এগুলো করে। আরেক শ্রেণি মনে করে মুর্তি একটা বানাতে পারলেই মঙ্গলও তব রাধে। দুটি উদহারণ দেই।

১. কাওরানবাজার সুন্দরবন হেটেলের পাশে একবার বাঘ এর মুর্তি বানানো হলো। এক টোকাইকে সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করলো এটা দেখতে কেমন? সে বললো ‘হের পিছনডা বাগের লাহান, সামনে দেখতে গরুর লাহান, হালায় আসলে একটা গাধা। এই গাধা গালিটা এর সাথে জড়িত রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রকরাও ডিজার্ভ করেন। সব শেষে সেই মুর্তি ভেঙ্গে পড়ে এক ভ্যানচালক নিহত হয়েছিল।

২. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাঝে এক মুর্তি নগরী আছে। কোন রুচিতে কে এসব ভাগাড় বানিয়েছে জানিনা!!! পরিকল্পনা বলে যে শব্দটা আছে তা এখানে নেই। যার যা ইচ্ছা করেছে এখানে এনেছে। রাধাকৃঞ্ষ লীলা ধর্মীয়ভাবে যারা মানেন এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার, কিন্ত কোন সভ্য সমাজ কি এসবের প্রদর্শন করে? তাও এখানে পাবেন। এখানে যার যা ইচ্ছা করেছে তাই করেছে আর জড়ো করেছে, কারো মাথা, কারো পা, কারো হাত ইত্যাদি।

আশার কথা বলি কাওরান বাজারে সার্ক ফোয়ারা, প্রেসক্লাব মোড়ে কদম ফোয়ারা চমৎকার কিছুর একটা। এমনকি ইন্টার কন্টিনেন্টাল হোটেল এর সামনে পুরাতন ঢাকার ঐতিহ্যটাও সুন্দর। কিন্ত অজ্ঞাত কারণে এসব ভাল কাজ আর হয় না। এখানে সেখানে যত্র তত্র মুর্তি বানায় রুচিহীনভাবে। প্রত্যেক জেলার শুরুতে এখন রুচিহীন এমন কর্ম দেখি। বনানীতে ক’জন ক্রিকেটারের মুর্তি দেখি এরা কান্দে না হাসে বুঝতে আমি বহুক্ষন তাকিয়েছি বুঝিনি। খামার বাড়ির BARC এ বঙ্গবন্ধুর স্টাচু দেখে আপনি সন্দিহান হবেন এটা ক্লাসে ফোরে পড়া কোন বাচ্চার ড্রয়িং কিনা? পিলখানায় সুন্দর একটা গেট ছিল যার পাশে ছিল এ বাহিনীর ক্রমবিকাশের ইতিহাস। পিলখানায় সে সৌন্দর্য ভেঙ্গে হাতির মাথা বসানো দেখে মনে হল আসলে জাতি হিসেবে আমরা বডিতেই বেড়েছি মাথায় কিছু বাড়েনি।

 

(বিশ্বের কিছু চমৎকার স্টাচুর ছবি)


১৫ আগস্ট ২০২১
পশ্চিম ধানমন্ডি

আরও পড়ুন