তারিক হকঃ
গতকাল আমার জার্মান প্রতিবেশিনী এসেছিলেন আমার বাসায় । আমি তাকে নেমন্তন্ন করেছিলাম ডিনারে । সাথে উনার মা ও এসেছিলেন । ভদ্রমহিলার একটু বয়স হয়েছে ।
কিন্তু এতো মজার মজার জোক করেন ! আমি নিজে জোক পছন্দ করি , তাই প্রতিবেশিনী কমেন্ট করলেন , “বাহ্ , রতনে রতন চিনে “।
কোনো ভদ্রমহিলার বয়স জিজ্ঞেস করা চরম অভদ্রতা তবুও লজ্জার মাথা খেয়ে জিজ্ঞেস করলাম । উনি উত্তর দিলেন , “আমি এখনো ইয়াং , মাত্র ৯৮ “।
আমি উনাকে বললাম , রহস্যটি কি ? উনি বললেন , “আপনিই বলুন না “।
আমি আমার মগজ খাটিয়ে সক্রেটিসের মত বাণী ছাড়লাম :
-আপনি খুব কম খান । তাই না ?
উনি মাথা নাড়লেন ।
-আপনি প্রতিদিন আট ঘণ্টা ঘুমোন ।
-হ্যাঁ, তবে এটা কোনো কারণ নয় ।
-আপনি সারাক্ষণ চলাফেরা করেন । কখনো বসেন না ।
-তা ঠিক , তবে আসল কারণ: আমি কখনো স্ট্রেসকে স্ট্রেস হিসেবে নেই না ।
-এটা কীভাবে সম্ভব ? আমি বললাম ।
– খুব সহজ । আমরা খুব তাড়াতাড়ি রেগে যাই , কেউ মনে ব্যথা দিলে সারাদিন মন খারাপ করি । এর কোনো মানে আছে ? আচ্ছা ধরুন , আপনার ডাক্তার আপনাকে আজকে বললো : ম্যাক্সিমাম ছয়মাস আপনি বাঁচবেন , আপনি কি এক মুহূর্ত ও খারাপ মুডে থাকবেন ? কখনই না, তাই না।
জানেন , আমি যখন সকালে উঠি, খোদাকে বলি , খোদা তোমাকে অনেক ধন্যবাদ , তুমি আমাকে আরেকটি দিন দিলে এই সুন্দর পৃথিবীতে । আজকের দিনটি আমি উপভোগ করবো , যতই বাধা আসুক না কেন ।
আমার কানে যেন রবীন্দ্র সঙ্গীত বেজে উঠল, “দু বেলা মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না “।
আমি থ হয়ে গেলাম । করিডোরে বড়ো আয়নাটির সামনে দাঁড়ালাম । কপোলে আর কপালে বার্ধক্যের ছাপ ।
উনি আমার কাঁধে হাত রেখে বললেন :
– Do not worry old man, হাসবেন , দেখবেন ইয়াং হয়ে যাবেন ।
লেখকঃ মোটিভেশনাল স্পিকার ও জার্মান প্রভ