Ads

ইসলামি বই মেলা: রমলে’র সেই কৌশলটা প্রয়োগ করতে আসছেন তো?

।। জিয়াউল হক ।।

হযরত ইউসুফ আ:’কে দাস হিসেবে বিক্রির জন্য বাজারে তোলা হয়েছে। অসম্ভব সুন্দর চেহারার ছেলেটাকে কেনার জন্য অনেকেই তাদের মূলধন নিয়ে জড়ো হয়েছে। নিলাম চলছে। একের পর এক দাম উঠছেই। এরই মধ্যে একজন ভিখারিণী ভিক্ষা করে পাওয়া মাত্র একটা পয়সা নিয়েই হাজির। ভিখারিণী বুড়ির কি ঠাঁই হয় ওখানে? বুড়িও নিলামে অংশ নিতে চায়, জেনে উপস্থিত কিছু যুবকের মধ্যে হাসির রোল পড়ে যায়।
বুড়ি মা ভিক্ষা করে পাওয়া একটা পয়সা সুন্দর এই যুবক ইউসুফকে কিনতে এসেছে ঐ সমাজের সবচেয়ে ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সাথে টেক্কা দিয়ে! না হেসে কি পারা যায়! অনেক টিটকারির মুখোমুখি হয়ে বুড়ি শেষ পর্যন্ত একটা কথাই কেবল বলেছিলেন তাকে নিয়ে উপহাসকারীদের উদ্দেশ্যে;
বাছা, আমি জানি, তোমাদের মতো বড় বড় ধনিক বণিকদের সাথে নিলামে পেরে উঠবো না। তারপরেও ভিক্ষা করে পাওয়া আমার শেষ সম্বল, ঐ একটা পয়সা নিয়েই তোমাদের সাথে দাঁড়িয়েছি, ইউসুফকে কিনে নিয়ে মুক্ত করে দেবো বলে। কেয়ামতের দিনে আল্লাহর কাছে অন্তত বলতে পারবো, আল্লাহ, অর্থ বিত্ত টাকা ছিল না। তবে যে একটা পয়সা ছিল. সেটা নিয়েই লাইনে দাঁড়িয়েছিলাম, তোমার বান্দাহকে মুক্ত করার জন্য। আমার সামর্থ তো ঐটুকুই ছিল, সেটুকুই কাজে লাগিয়েছি।
কে জানে, মহামহিম গাফুরুর রাহিম আমার আল্লাহ ক্ষুদ্র এ প্রচেষ্টাটুকুর কারণেই আমাকে মাফ করে দিতে পারেন। অন্তত আমি তো তাই’ই আশা করি।
বায়তুল মোকারাম দক্ষিণ গেটে বইমেলা চলছে। বাংলা একাডেমি বইমেলার ক্ষেত্রে দেশের সকল প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া চব্বিশঘন্টা তাদের প্রচার কাজ করে দেয়। তবে এ ক্ষেত্রে তারা কেউ কিছুই করছে না, করবেও না।
কারণটা পরিস্কার, বাংলাদেশে ইসলাামি সাহিত্য মানুষ পড়–ক, ইসলামকে জানুক , মানুক, তারা সেটা চায় না। বাংলাদেশকে ডি-ইসলামাইজ করার চেষ্টা বিগত প্রায় এক যুগেরও বেশি সময়কাল ধরে চলে আসছে। সেটা আরও জোরদার হচ্ছে, সামনে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে বলেই মনে হয়।
এ থেকে বাঁচার জন্য আমাদের তরুণ প্রজন্ম’সহ নারী পুরুষ নির্বিশেষে সকলের কাছে ইসলাামি সাহিত্য পৌছে দিতে হবে। লড়াইটা অস্ত্রের নয়, বুদ্ধির। তলোয়ারের নয়, কলমের। আপনি কি এই লড়াইয়ে অংশ নেবেন না?
বই কেনার টাকা না থাকে, বই কিনতে না চান, অন্তত একটাবারের জন্য হলেও স্ত্রী পুত্র কন্যা বা বন্ধু বান্ধব নিয়ে ঘুরে আসুন। আপনার উপস্থিতিটুকুই অনেকের বুকে আশা জাগাবে। আবার কারো কারো বুকে কাঁপনও জাগাবে।
হজ্জের সময় দূর্বল ও সংখ্যালঘু মুসলমানদের রমল করার মাধ্যমে কাফের সম্প্রদায়ের মনে মনস্তাত্তিক প্রভাব ফেলার কথা মনে আছে তো? কৌশলটা সবযুগেই, সবার ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আপনিও ইসলামি সাহিত্যকে হারিয়ে যাওয়ার হাতে থেকে বাঁচাতে একটু কেশৈলী হতে পারেন নিশ্চয়ই।
ইসলামি সাহিত্যের দূর্দিনে আপনার এই সামান্য পৃষ্ঠপোষকতাটুকুও হয়তো আল্লাহর কাছে অনেক বড়ো কুরবানি হিসেবে বিবেচিত হবে। আসছেন তো?
আরও পড়ুন