১৮৯৯ সাল। জ্যৈষ্ঠের রসালো ফলের গন্ধ নিয়ে বর্ধমান জেলার আসানসোলের মহকুমার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন দুখু। গ্রাম পরিবার তাকে দুখু নামে চিনলেও আমরা চিনি জাতীয় কবি নামে।
তিনি ছিলেন একাধারে কবি,সাহিত্যিক,গল্পকার,গীতিকার, নাট্যকার,উপন্যাসিক, শিল্পী ও সাংবাদিক।
নজরুলের পিতা কাজী ফকির আহমদ ছিলেন মসজিদের ইমাম ও মাজারের খাদেম।
১৯০৮ সালে বাবার মৃত্যুর পর এ দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেন নজরুল।এর মধ্যে মক্তব থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অর্জন করেন তিনি।
১৯১০ সালে রানীগঞ্জ সিয়ারসোল স্কুলে ভর্তি হন কবি।আর্থিক অনটনের কারনে কারণে স্কুল ছেড়ে লেট গানের দলে মজবুত জায়গা করে নেন তিনি।কিছু দিন এক খৃষ্টান রেলওয়ে গার্ডের সহকারী হিসেবে কাজ করেন।
আসানসোলের এক রুটির দোকানে মাসিক ৫ টাকায় চাকরি শুরু হয় এর পর পরই।
এখানেই এক দারোগাবাবু সঙ্গে পরিচয় ঘটে কবির।রফিজউল্লাহর সঙ্গে তার নিজ বাড়ি ময়মনসিংহ জেলার সিমলা গ্রামে এলেন নজরুল।
১৯১৪ সালে দরিরামপুর স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে কবিকে ভর্তি করেন এ দারোগা।
সৃজনশীল প্রতিভাধর এ ব্যক্তি ৩ বছরের বেশি এখানে পড়লেন না। ১৯১৭ সালে এসএসসি পরীক্ষার পূর্বে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ৪৯ নং বাঙালি পল্টনে যোগ দিয়ে চলে যান করাচী।
১৯২০ সাল, মাত্র তিন বছরে কোয়ার্টার মাস্টার হাবিলদার পদে প্রোমোশন পেলেন।
২৫ বছর বয়সে ১৯২৪ সালে বৈবাহিক জীবনে প্রবেশ করেন কবি।
স্ত্রী কুমিল্লার গিরিবালা দেবীর কন্যা দুলি পরে কবি তাকে প্রমীলা বলেই ডাকতেন।
৪২ বছর বয়সে নজরুল এক সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হন।
এর মধ্যেই অনেক অর্জন কবিকে অনুপ্রাণিত করে। তাঁর কলম জ্বলজ্বল করে উঠে। রচিত হয় –
শত শত কবিতা
গল্প
উপন্যাস
নাটক
চলচ্চিত্র ইত্যাদি।
ধুমকেতু পত্রিকা সম্পাদনার মাধ্যমে তাঁর বহুমুখী প্রতিভা বিকশিত হতে থাকে।
ইসলামী জাতি সত্তার উৎকর্ষ সাধনে কবি নজরুলের অবদান সীমাহীন।
অগ্নি বীনা
বিষের বাঁশি
জিঞ্জির
কাব্যগ্রন্থ কবির জনপ্রিয়তা আকাশচুম্বী করে তোলে।
বিদ্রোহী কবিতা আর স্বাধীনতা কামী যোদ্ধাদের প্রাণ পুরুষ হয়ে উঠেন কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
১৯৭৬ সালে কবি ঢাকায় সাহিত্য প্রেমীদের চির বিদায় জানিয়ে ইন্তেকাল করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবিকে দাফন করা হয়।
আব্দুল মতিন -কবি,সাহিত্যিক ও সহ সম্পাদক মহীয়সী