Ads

ইরানী প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার ক্রাশের ককপিট ভিডিও ও বিশ্লেষণ

।। এইচ এম সোহেল ।।

ওসিন্ট থেকে ইরানী প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টারের ক্রাশের আগমুহুর্তের ভিডিও ক্যামেরা ভিউ পেলাম। যদি এটা সত্যিই হয়, আমার বহুবার বেল ২১২ তে ফ্লাই করার অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একটি বিশ্লেষণ ও কিছু প্রশ্ন:

পাইলটের আবহাওয়া এত খারাপ সত্বেও কেন কেউ কেনো প্রোটেস্ট করে নাই? কেনো ফ্লাই করা হলো? এখানে তো হেলিকপ্টারে নিয়মিত জার্নি করা প্যাসেঞ্জার ছিলো যারা ফ্লাইট সেফটির এই বেসিক বিষয়গুলো জানেন। বেল ২১২ এর জানালাগুলো অনেক বড়, এম আই ৮/১৭ এর মত গোল ছোট না। প্যাসেঞ্জাররাও হিউজ আউটসাইড ভিউ পান। কিন্তু অনেকগুলোতে বিশেষ করে ভিআইপি পরিবহনের জন্য যেগুলো নির্দিষ্ট সেগুলোতে আবার কার্টেন বা ব্লাইন্ড থাকে। তেমন হলে ভেতরের প্যাসেঞ্জারদের জানা বা বোঝার কথা না, কোথায় যাচ্ছে তারা। তবে একটা ভিডিওতে দেখা গেছে জানালায় ব্লাইন্ড বা কার্টেন ছিলো না।

কুয়াশা হলে তো পাইলট আরো উপর দিয়ে উড়ে যাবার কথা। কারণ বন-জঙ্গলের ক্যানোপীতে ধোয়াটে কুয়াশা বা মেঘ বেশী জমে যা উপরে ক্লিয়ার স্কাই থাকে। আমি নিজেও আমার বহু হেলিকপ্টার জার্নিতে এমন দেখেছি। কুয়াশা বা নিচে নামা মেঘ এভয়েড করতে হাই অল্টিটিউড ফ্লাই করতে হয়, যেটা বাকী দুই হেলিকপ্টার করেছিলো। কিন্তু সে করে নাই কেন? সে কেন ন্যাপ অফ আর্থ ফ্লাই করছিলো? এ পরিস্থিতিটাকে আপনি সাজেক এর পাহাড়গুলোর চূড়ায় জমে থাকা মেঘ বা কুয়াশার সাথে তূলনা করতে পারেন।

ইরানী প্রেসিডেন্টের হেলিকপ্টার ক্রাশের ককপিট ভিডিওটি দেখতে নিচের ভিডিওতে ক্লিক করুন

 

এয়ার কনভয় যদি দূর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অতিক্রম করে, তখন ভিজিবিলিটি ইস্যুর জন্য এয়ার ক্রাফটগুলোর মাঝে দুরুত্ব বাড়ানো হয় এবং ওয়ে পয়েন্ট, অল্টিটিউড, কোর্স ঠিক রাখার জন্য সকল পাইলট রেডিওতে অনেক ঘন ঘন বার্তা দিয়ে কোঅর্ডিনেট করা হয়। এখানে সব চুপচাপ।

অনেকেই পাইলটকেই এজেন্ট বলে দাবী করতেছে। এমন ঘটনা বিরল না। পূর্বে আমেরিকা বহু ইরাকী, ইরানিয়ান, রাশান পাইলটকে ঘুষ দিয়ে তাদের বিমান সহ পালাতে সাহায্য করেছে। যারা আমেরিকান কন্ট্রোলড টেরিটরিতে গিয়ে হাজির হয়।

আরও পড়ুন- Iran Presidential Helicopter Crash WAS an Assassination

এখানে মনে হলো পাইলট সরাসরি গাছে হেড অন হিট করায় ক্রাশ করে ঠান্ডা মাথায়। পাইলটের কোন ভীতি নাই, চিৎকার নাই, শান্ত ভাবে সে কাজটা করেছে। ম্যাল্ফাংশন হলে সে May Day কল দিত। ডিস্ট্রেস সিগ্ন্যাল দিতো। সবাইকে চিৎকার করে সতর্ক করতো। কিন্তু প্রতিটা সেকেন্ডে সে শান্ত। তাকে প্রিপেয়ার করাই হয়েছে এভাবে।

কো পাইলট ভিডিও করছিলেন নাকি কাউকে লাইভ স্ট্রিমিং করছিলেন? সে কেন হঠাৎ কলিশনের আগ মুহুর্তে মিটার গেজ গুলো দেখালেন? তার মাঝেও কোন রিয়েকশন নাই। এমন কি ইম্প্যাক্টের পরও না। একদম ম্যুভির মত কোল্ড ব্লাডেড। সব জেনে বুঝে নিজের ভাগ্য মেনে নিয়ে ‘Go’ ডিসিশন। এই ভিডিও লাইভ স্ট্রিম করাটা বা কাউকে দেখানো কি আদেশ প্রদানকারীকে ‘জব ডান এন্ড এক্সিকিউটেড’ এর এশিওর্ড সিগ্ন্যাল পাঠানো?

আরও দেখুন- যেভাবে হঠাৎ ‘উধাও’ হয়ে যায় রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টার

ফ্লাইট চলাকালীন সময়ে ক্রাশের পূর্বে লাস্ট যে ভিডিওটা, তাতে দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্টের বডি ল্যাংগুয়েজ কেমন যেন ভীত সন্ত্রস্ত দেখাচ্ছিলো। তিনি কারও সাথে কথাই বলছিলেন না। গভর্নরও সেইম। তিনি তো চিন্তায় মাথা নত করে ফেলেছেন। দুজনেরই টু শব্দটি নেই। তারা কি তাদের ভাগ্যটা জেনেই ফেলেছিলেন? মনে হচ্ছিলো তাকে ও প্রাদেশিক গভর্নরকে এরেস্ট করা হয়েছিলো।

ফুল সাইন অব ডিটেনশন। এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী যার সাথে আলাপ করছিলেন, তার বডি ল্যাংগুয়েজ ও এক্সপ্রেশন ছিলো কোন কিছু নিয়ে নেগোশিয়েট করছেন। তাকেও সুইচড অফ মনে হচ্ছে। সর্ব ডানের ব্যাক্তি পাইলটের দিকে তাকিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কে কিছু বললেন। মনে হচ্ছে যেন পাইলটের কাছে হ্যান্ডগান আছে। হতে পারে আসল পাইলটই ফ্লাই করছে না। অরিজিনাল পাইলটকে সন্তোর্পনে সরিয়ে সিনেমার মত ভিলেন কন্ট্রোল নিয়ে ফ্লাই শুরু করেন যা কারো গোচরে আসে নাই। দিস ওয়াজ এ হাইজ্যাক।

আরও দেখুন- ফরাসি এক টিভি বিতর্কে মোসাদ এজেন্টের নাম আসতেই ভাইরাল!

ভিডিওর শেষ মুহুর্তে কিছু চিৎকারের শব্দ পাওয়া যায়। বেল ২১২ তে দুজন পাইলট ব্যতিত ০৮ জন, সর্বোচ্চ ১০ জন বহন করা হয়। পাইলট ককপিটের সাথে প্যাসেঞ্জার কেবিন মোস্টলি খোলা থাকে কিন্তু ভিআইপিদের জন্য প্যাডেড ব্লাইন্ড বা পার্টিশন থাকে। যদিও ইঞ্জিনের শব্দে কথা বার্তা বা চিৎকার মাফল্ড হয়ে যায়, কিন্তু দু একজন প্যাসেঞ্জারের ভয়জনিত চিৎকার টা স্পষ্টই শোনা গেছে। কিন্তু পাইলট দ্বয় একদম শান্ত। এমনও হতে পারে, ভিডিও ট্র্যাক ও সাউন্ড ট্র্যাক ভিন্ন ভিন্ন সোর্সের হতে পারে।

লেখকঃ কলাম লেখক ও ইন্টারন্যাশনাল মিলিটারি ইন্সট্রাক্টর

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা,গল্প,কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক!  আপনি আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন,“তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) ।আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

আরও পড়ুন