Ads

স্বামী-স্ত্রী যৌথভাবে পেলেন অর্থনীতিতে নোবেল পুরষ্কার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

এবারে ২০১৯ সালের অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ভারতের বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় , তার স্ত্রী এস্থার ডুফলো এবং মাইকেল ক্রেমার । বিশ্ব দারিদ্র দূরীকরণে তাদের অতুলনীয় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনজনকে যৌথভাবে এই পুরষ্কার দেয়া হয় । অভিজিতের স্ত্রী ডুফলো দ্বিতীয় নারী হিসাবে অর্থনীতিতে এই নোবেল পেলেন । এর আগে ২০০৯ সালে ইলিনর অসট্রম  প্রথম নারী হিসাবে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন । ভারতীয় বাঙালি অভিজিতের স্ত্রী, ৪৬ বছর বয়সী এস্থার ডুফলো এ পর্যন্ত সবচেয়ে কমবয়সী নোবেলজয়ী ব্যক্তি হিসাবে ইতিহাসের পাতায় নিজের নাম লেখালেন ।

নোবেল কমিটি তাদের এক বক্তব্যে বলেন যে- “বিশ্ব দারিদ্রের বিরুদ্ধে লড়তে আমাদের সক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায় নোবেল লরেটরা মূলত এই নিয়েই কাজ করেছেন । আর তাদের এই বিষয়টাই নোবেল কমিটি বিবেচনায় নিয়েছে ।”

১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। আর তারই ছাত্র অভিজিৎ পেলেন এই মহান পুরষ্কার। অভিজিৎ ব্যানারজি ২০০৩ সালে তার স্ত্রী এস্থার ডুফলো  এবং সেনধিল মুলাইনাথানকে নিয়ে  “আব্দুল লতিফ জামিল  পোভার্টি একশন ল্যাব” প্রতিষ্ঠা করেন । যাকে সংক্ষেপে J PAL  বলা হয় । J PAL হচ্ছে আমেরিকার ম্যাসাচুয়েটস ভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্র ।

অভিজিৎ ব্যানারজি গুরুত্বপূর্ণ চারটি বই প্রকাশ করেন । এর মধ্যে একটি হচ্ছে “Poor Economics” . এই বইয়ের জন্য তিনি ২০১১ সালে Financial Times and Goldman Sachs Business Book of the Year Award পেয়েছিলেন । এই বইটি পরবর্তীতে প্রায় ১৭ টি ভাষায় অনুদিত হয় ।

কলকাতার এই সময়ের জনপ্রিয় সাহিত্যিক সুবোধ সরকার বলেন –

“অমর্ত্য সেনের পর আর এক বিস্ময় প্রতিভা। সারা বিশ্বের কাছে আর এক চমক অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায় । দ্বিতীয় বাঙালি যিনি অর্থনীতি বিজ্ঞানে নোবেল পেলেন । মাত্র ৫৭ বছর বয়েসে। আজ কিছুক্ষণ আগে স্টকহোম থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। লক্ষ্মীপুজো যেতে না যেতে এর চেয়ে বড় খবর বাঙালির ঘরে আর কী-ই বা হতে পারত। আমি ইকনমিক্সের লোক নই। চাল ডাল আলু পেঁয়াজের হিসাব বুঝতেই কালঘাম ছুটে যায়, তবু অভিজিতবাবুর অনেকগুলো লেখা আমি পড়েছি আনন্দবাজারের পোস্ট এডিট পেজে। সহজ করে কঠিন জিনিস বোঝাতে পারেন। তাঁর সঙ্গে আমার একটাই মিল তিনি এত বছর ধরে যে বিষয়ে কাজ করছেন তার নাম — দারিদ্র । আমি চল্লিশ বছর কবিতা লিখে এলাম, বিষয়– খিদে। অমিল একটাই তিনি হলেন জিনিয়াস। আর আমি হলাম খিদে নিয়ে ফিউরিয়াস।

হার্ভার্ড, এম আই টির প্রফেসর অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়কে অফুরন্ত অভিনন্দন। অভিনন্দন তাঁর স্ত্রীকেও,এস্থার ডাফলো-কে, যৌথভাবে পেয়েছেন এই সম্মান। ভালই হল, এক বাড়িতেই ঢুকল । গতকাল সৌরভ পেলেন ক্রিকেটের রাজমুকুট। আজ অভিজিৎ পেলেন স্টকহোমের নোবেল। বাঙালি হিসেবে গর্ব করার জায়গাটা দুদিনে অনেকটা বেড়ে গেল। যাঁরা দিল্লিতে বসে বলে দেন বাঙালি শেষ হয়ে গেছে তাদের গালে এত বড় থাপ্পড় নেমে আসবে ভাবিনি। আজ আর একজনের কথা পড়ছে– মেঘনাথ সাহা , মুদির ছেলে, পাঁচ পাঁচবার তাঁর নাম উঠেছিল নোবেল কমিটির টেবিলে।”

আরও পড়ুন