আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রায় এক দশক ধরে মিশর, সুদান এবং ইথিওপিয়ার মধ্যে বিরোধের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ইথিওপিয়ার হাইড্রোইলেকট্রিক বাঁধ যা ইথিওপিয়া নীল নদের উপরে নির্মাণ করছে । আর এই হাইড্রোইলেকট্রিক বাঁধ থেকে অর্জিত অর্থই ইথিওপিয়ার রাজধানী আদ্দিস আবাবাকে আফ্রিকার বৃহত্তম শক্তি রফতানিকারক হিসাবে পরিণত করেছে । মিশর আশঙ্কা করছে যে সুদানের সাথে ইথিওপিয়ার সীমান্তের নিকটে অবস্থিত ইথিওপিয়ার মেগা নীল বাঁধটি দেশের মিঠা পানির প্রধান উৎস নীল নদ থেকে এর জল প্রবাহকে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস করে ফেলবে। গ্র্যান্ড ইথিওপীয় রেনেসাঁ বাঁধ (জিইআরডি) নিয়ে মিশর, ইথিওপিয়া এবং সুদানের মধ্যে প্রায় ১০ বছর ব্যর্থ আলোচনার পরেও এখনও কোনও সমঝোতা হয়নি।
জাতিসংঘের ওয়ার্ল্ড ওয়াটার ডেভলপমেন্টের ২০১৮ এর রিপোর্ট অনুযায়ী মিশর বার্ষিক প্রায় ৭bn ঘনমিটার (সিবিএম) পানির ঘাটতির মুখোমুখি হচ্ছে এবং নাটকীয়ভাবে জলের ঘাটতির দিকে যাচ্ছে (মাথাপিছু ৫০০ সিবিএম)।
অথচ ইথিওপিয়ার সরকার বলে চলেছে যে এই বাঁধটি নীল নদ প্রবাহিত দেশগুলিকে প্রভাবিত করবে না। তবে বাঁধটি পলল ধরে রাখার ফলে নদীর তলদেশের সুদানের মাটির উর্বরতা হ্রাস করতে পারে এবং এই নীল-নির্ভর দেশটির কৃষিক্ষেত্রকে প্রভাবিত করবে।
জিইআরডি প্রবাহিত দেশগুলিতে বিশেষত মিশরীয় ডেল্টায় সেচ নেটওয়ার্কের শেষে স্পষ্ট প্রভাব ফেলেছে । জিইআরডি ভূগর্ভস্থ পানির স্তরকে প্রভাবিত করে পৃষ্ঠের পানির স্তর হ্রাস করেছে এবং ফসলের চাষের মাধ্যমে ফসলের ধরণগুলি পরিবর্তন করেছে। কেবলমাত্র ভূগর্ভস্থ জল এবং ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণই ক্ষতিগ্রস্থ হবে তা না, পাশাপাশি লবণাক্ত জলের ফলে সময়ের সাথে সাথে মাটির গুণগত মানও ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এই প্রভাবগুলি মিশরে অদূর ভবিষ্যতে অর্থনৈতিক সংকট তৈরি করতে পারে অনেকেই মনে করছেন।
অন্যদিকে, এফএও’র মতে, ইথিওপিয়ায় প্রচুর পরিমাণে জলসম্পদের সাথে সাথে স্বর্গীয় একটা আশীর্বাদও যেন রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় বার্ষিক প্রায় ৯৩৬bn সিবিএম বৃষ্টিপাত ।
নীল নদ কারও মালিকানাধীন নয় বরং বেশ কয়েকটি দেশের যৌথ মালিকানায় রয়েছে। তারা সকলেই জিইআরডি নির্মাণে সম্মত হওয়ার অধিকারী। নীল নদ নীল অববাহিকায় অবস্থিত একটি আন্তঃসীমান্ত নদ।আর এই নীল নদে ইথিওপিয়ার এই বাঁধের ফলে ইথিওপিয়া উপকৃত হলেও নিয়ে মিশর ও সুদান বেশ ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে ।আর এ নিয়ে প্রায়ই মিশর ও সুদানের সাথে ঝামেলা হয় ইথিওপিয়ার ।
সূত্রঃ ডেইলি নিউজ ইজিপ্ট