Ads

আমার নাতনীর হ্যালোইন উৎসবের প্রস্তুতি

আরশাদ উল্লাহ্‌

হ্যালোইন উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে আমার নাতনী পাট্রিসিয়া ক্যানাডার ভ্যাংকুভারে। এই উৎসবটির ইতিহাস অতি প্রাচীন। খ্রীষ্টপূর্ব পাঁচ শাতাব্দী থেকে খ্রীষ্টপূর্ব এক শতাব্দী পর্যন্ত ইউরোপ ও এশিয়ার একাংশের লোকেরা হ্যালোইন উৎসব পালন করত। এই উৎসবের উদ্দেশ্য ছিল – অশুভ অপশক্তি যাতে জনগণের কোন ক্ষতি করতে না পারে – সে বিশ্বাসে উৎসবটি পালন করত। Pre – Roman আমলে Bronze age শুরু হওয়ার প্রারম্ভে এই প্রথার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
পরবর্তি সময়ে রোমান এবং জার্মানিদের দ্বারা এই প্রথা বিলুপ্ত করা হয়

হ্যালোইন উৎসবের ব্যাপারে আমার মোটেও ধারণা ছিলনা। ১৯৮২ সালের দিকে জাপানে আমাদের এক প্রতিবেশি অ্যামেরিকান মিসেস নান্সি শরতের একদিন বড় আকৃতির মিষ্টি কুমড়ার ভিতরের অংশ বের করে নাইফ দিয়ে কুমড়াটিতে সুন্দর ডিজাইনে বিভিন্ন আকৃতির ছেঁদা করে মুখোশ বানিয়ে সেটার ভিতরে মোম বাতি জ্বালিয়ে রাত ৮টায় দরজায় এসে টোকা দেন। সঙ্গে তার ছোট ৫ বৎসর বয়সের একটি সন্তানও ছিল। বাহিরে অন্ধকারে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। দরোজা খুলে অদ্ভুত কুমড়ার সে মুখোশ দেখে ভয় পেয়ে প্রথমে মুখ দিয়ে কোন কথা বের হল না। নিরবতা ভংগ করে নান্সি স্বশব্দে হেসে বললেন, “ভয় পেয়েছ?”
লজ্জা পেয়ে বললাম, ‘সামান্য’।
তারপর হাসাহাসি করে হ্যালোইনের গল্প বলেছিলেন। সেদিন প্রথম হ্যালোইন উৎসবের উপর আমার ধারণা হয়।

হ্যালোইন উৎসব ইউরোপে বিলুপ্ত হলেও এখন তা অ্যামেরিকাতে ব্যাপক ভাবে পালন করে। আমার নাতনি পাট্রিসিয়া ক্যানাডাবাসি হলেও প্রতিবছর ক্যানাডাতেও এই উৎসব চলছে। গত বৎসরও হ্যালোইনের ছবি পাঠিয়েছিল। সেগুলি ফেসবুকে পোষ্ট করিনি। আজ সকালে আবার পাঠিয়েছে। তাই ভাবলাম এই উৎসব নিয়ে কিছু লিখব।
এখন শরতকাল। উৎসব হবে ৩১ অক্টোবর। হয়তো অনেকে জানেন না যে অ্যামেরিকা ও ক্যানাডাতে আবাদ না করলেও খালি মাঠে অনেক মিষ্টি কুমড়া প্রকৃতি থেকে জন্ম নেয়। বেশি বড় বলে এগুলির স্বাদ তেমন নেই। মঠে এই কুমড়া অবহেলিত হয়ে পড়ে থাকে।

পাট্রিসিয়া ও তার বড় বোন হান্না এবারও হ্যালোইন উৎসবের প্রস্তুতি নিচ্ছে। ভিতরের অংশ বের করে কিছুদিন রোদ্রে শুকিয়ে নাইফ দিয়ে ডিজাইন করা হবে। তারপর পাড়া-প্রতিবেশিরা মিলে ঐতিহাসিক এই উৎসব পালন করবে। নিম্নের ছবি পাট্রিসিয়াকে কাঁধে করে মিষ্টি কুমড়া আনতে দেখা যাচ্ছে।
১০ অক্টোবর ২০১৯

লেখকঃ সাহিত্যিক ও জাপান প্রবাসী বাংলাদেশী

আরও পড়ুন