Ads

গুলতেকিন আহমেদ জীবনের জন্য হ্যা বলেছেন

শেখ সাফওয়ানা জেরিন

গুলতেকিন আহমেদের কবিতা অনেকদিন ধরেই পড়ি, কবিতা মিথ্যা বলেনা। এরকম একটা ধারণা আমার ছিল,উনি একদিন পছন্দের কাউকে বিয়ে করবেনই। কেউ এটাকে ভালো কাজ হিসেবে দেখছে,আবার কেউ কেউ সমালোচনায় ডুবে আছে। সেলিব্রিটি কবি সাহিত্যিক অভিনেতা অভিনেত্রীদের খাপছাড়া জীবন নিয়ে আমার কোন সমালোচনা ভালো কথা আলোচনাও করতে ইচ্ছা করেনা। পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে তারা আদতেই কোন আদর্শ হতে পারেনা, এটাই আমার বিশ্বাস।
৫০ পেরিয়ে কেন প্রেম করে বিয়ে করেছেন এটা আসলে সমালোচনার টপিক হতেও পারেনা। ভালো খারাপের পার্থক্য খুবই মৌলিক, সবাই তা জানে। ৪ সন্তানের একটা পরিবারের বাবার বুড়া বয়সে সম্পর্কে জড়িয়ে একটা সংসার ভেঙ্গে কচি খুকিকে নিয়ে আরেকটা সংসার গড়া যে কোন সংজ্ঞায়ই ভালো কাজ না। টার্কিতে মুস্তাফা জেজেলি নামক এক গায়ককে খুব ভালো লাগতো। একদিন শুনলাম সে প্রথম বউকে ধোঁকা দিয়ে আরেকটা বিয়ে করেছে। মুস্তাফা জেজেলির গান ভালো লাগলেও ব্যক্তি জেজেলির ভালোলাগাটা স্লান হয়েছে। এটা মনে হয় খুব কমন হিউমেন সেন্স।
মূল অন্যায়টা একটা সংসার ভাঙা, ভাঙা গড়ার খেলায় পরিবারের বাচ্চাদের উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ে তাদের বিধ্বস্ত জীবনের অপূরণীয় ক্ষতি হওয়া। মানুষকে আল্লাহ বানিয়েছেন অনেক কঠিন ত্যাগের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার জন্য, প্রবৃত্তি যা চাইবে তার সাথে যুদ্ধ করে মৌলিকতায় যা ভালো তাই পালন করার জন্য।
তারপরেও হুমায়ূন আহমেদ শাওনকে বিয়ে করেছেন এটা ও সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। হয়তো মান সম্মানের দিকে তাকিয়ে আমরণ পরকীয়া ও করতে পারতো তারা, কিন্তু বিয়ে হালাল, বিয়ে সাহস বা দায়িত্ব নেওয়া ও। সংসার ভাঙা খারাপ কাজ, নিয়ন্ত্রনহিন ব্যক্তি জীবনের নমুনা এটা একদিক দিয়ে ঠিক কিন্তু মন থেকে ভেঙ্গে যাওয়া সংসারের বোঝা বয়ে যেয়ে দিনের পর দিন অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকাটাও ভালো কাজ নয়। হুমায়ূন শাওন বিবাহের এটাই ভালো দিক। তবে সামগ্রিকতার বিচারে হুমায়ূন আহমেদ যা করেছেন তা আদতেই ভালো কিছু ছিলনা। একটা পরিবারের বাবাকে আরও দায়িত্বশীল হতে হয়, আরও আত্মত্যাগী অথবা সংযমী হওয়াটাই বাবাদের কর্তব্য। একটা পরিবারের বাবাকে আরও চিন্তাশীল হতে হয়, তার লালসা তার খায়েশ পরিবারের প্রতিটা মানুষকে কীভাবে প্রভাবিত করে, কোথায় নিয়ে দাঁড় করায় এটা ভাবতে পারলেই বাবারা সংযমী হতে পারে খায়েশের রাশ টেনে ধরতে পারে। রাশ টেনে ধরা খারাপ কিছু না, এই যুদ্ধ কমবেশি সব মানুষকেই করতে হয়, কোন না কোন ক্ষেত্রে।
গুলতেকিন আহমেদ ডিভর্সি কাউকে বিয়ে করেছেন, অন্তত অন্য কারো সংসার ডাকাতি করেননি, পরকীয়া করেননি। প্রেম খারাপ জিনিষ , হ্যা মানি! কিন্ত তারপরেও একটা সমাধানে এসেছেন , সুন্দর সমাধান। এটাকে বয়সের মারপ্যাচে, সমাজের নিয়মের দোহাইয়ে না ফেলে মানবিক ভাবে বিবেচনা করুন। একটা নারীর জন্য ভালোবেসে বিয়ে করা স্বামীকে অন্য কারো পাশে দেখাটা অনেক কষ্টের, অনেক। সব পার হয়ে, সব সহ্য করে গুলতেকিন ৫২ তে জীবনের জন্য একবার হ্যা বলেছেন। এটাই সুন্দর দিক এই বিয়ের

 

 

আরও পড়ুন