Ads

জেনা-ব্যভিচার যেন সবচেয়ে সহজলভ্য !

।। জামান শামস ।।

জেনা ব্যভিচার যেন সবচেয়ে সহজলভ্য একটি পণ্য অথচ আল্লাহ এর কাছেও যেতে নিষেধ করেছেন । ব্যভিচার একটি মারাত্মক অপরাধ। হত্যার পরই যার অবস্থান।এতে ‘লজ্জাস্থানের হিফাযত’ আমানতের খিয়ানত হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সামাজিক সম্মান বিনষ্ট হয় যদিও অপরাধীর তাতে ‘কুছ পরোয়া নেহি’ । দুনিয়ার সুস্থ পারিবারিক ব্যবস্থা এতটুকুও আর অবশিষ্ট থাকে না। অন্যের মা, বোন, স্ত্রী, কন্যার ইজ্জত সম্পূর্ণরূপে বিনষ্ট হয়, সমাজে তারা ধিকৃত হয়।

ব্যভিচার যে করে সেও জানে এর পরিণতি কখনো ভালো হয় না।তবুও সে জেনা ব্যভিচার ছাড়তে পারে না।এমনকি সাম্প্রতিক কালে কিছু ঘটনা এমনও চাউর হয়েছে যা ভাবতেও কষ্ট লাগে। মসজিদ মাদ্রাসার শিক্ষক,আলেম উলামা, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমাজে দশ জনের কাতারে সম্মানিত তাদের দ্বারাও এ অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।উচ্চবিত্ত নিম্নবিত্ত নির্বিশেষে ছেলে মেয়েদের অবাধ মেলামেশা, প্রেম ভালবাসা,হয় ফ্রেন্ড গার্ল ফ্রেন্ড রিলেশান, পরকীয়া, নারী আসক্তি – এসবে যুক্ত ব্যক্তিরা সরাসরি ব্যভিচারের সাথে সংশ্লিষ্ট। আতংকের বিষয় হলো এদের অনেকে প্রাক বিবাহ যৌন মিলনকে দোষই মনে করে না,সহাস্যে প্রকাশ্যে বলেনও যে অমুকের সাথে তার ফিজিক্যাল রিলেশান বিদ্যমান।

সমাজের সুধীগণ এর অনেক গবেষণামূলক তথ্য দিতে পারবেন কিন্ত পরিস্থিতি এতো মারাত্মক যে মেয়েদের নিরাপত্তা ও সতীত্ব রক্ষা যেন ক্রমশ কঠিন হয়ে পড়ছে। শিক্ষক কর্তৃক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দান,তাতে সাড়া না দিলে পরীক্ষায় অকৃতকার্য দেখানো । এরপর ছাত্রীর অপমানে আত্মহত্যা-এমন বেশ কয়েকটি ঘটনা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে ব্যভিচারের ভয়াবহ চিত্রই দেখিয়ে দেয় ।

সহজলভ্য জেনা ব্যভিচার

ইসলামে নারী পুরুষের সম্পর্কের পবিত্র আর বৈধ পন্থা হল বিয়ে। এর বাইরে অর্থাৎ “বিয়ের আগে নারী পুরুষের সম্পর্ক, বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড, লিভ টুগেদার এসব সম্পূর্ণ হারাম।ইসলাম সেই জীবন ব্যবস্থা যা মানুষকে নৈতিকতা আর মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়! মানুষকে নিজের শরীর আর মনের নিরাপত্তা দান করে! আর তাই ইসলামে নিজের শরীর আর মনের নিরাপত্তা এসেছে পবিত্র বিয়ের মাধ্যমে। আল্লাহ বলেন…

وَ مِنۡ اٰیٰتِهٖۤ اَنۡ خَلَقَ لَکُمۡ مِّنۡ اَنۡفُسِکُمۡ اَزۡوَاجًا لِّتَسۡکُنُوۡۤا اِلَیۡهَا وَ جَعَلَ بَیۡنَکُمۡ مَّوَدَّۃً وَّ رَحۡمَۃً ؕ اِنَّ فِیۡ ذٰلِکَ لَاٰیٰتٍ لِّقَوۡمٍ یَّتَفَکَّرُوۡنَ

“আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে রয়েছে, তিনি তোমাদের (মানব জাতির) মধ্য থেকেই সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জন্য (বিপরীত লিঙ্গের) জুড়ি, যাতে করে তোমরা বৈবাহিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে তাদের কাছে প্রশান্তি লাভ করতে পারো! এ উদ্দেশ্যে তিনি তোমাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছেন হৃদ্যতা- বন্ধুতা আর দয়া- অনুগ্রহ অনুকম্পা। এতে রয়েছে বিপুল নিদর্শন চিন্তাশীল লোকদের জন্য। –[সূরা আর রুমঃ ২১]

সুবাহানাল্লাহ। আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন বিবাহের মাধ্যমেই নারী পুরুষ পাবে প্রশান্ট ।  সৃষ্টি হবে হৃদ্যতা-বন্ধুত্ব, দয়া অনুগ্রহ অনুকম্পা! আর এটা চিন্তাশীলদের জন্য নিদর্শনস্বরূপ! কিন্তু আমরা কেউ চিন্তাশীল নই! আমরা মানুষের হারাম সম্পর্ক দেখে স্বপ্নের বীজ বুনি! হলিউড- বলিউড তারকাদের “রিলেশনশিপ উইথ অমুক” দেখে ভাবি হ্যাঁ “আমারও চাই”! নির্লজ্জ বেহায়ার মতো আবার এটা বন্ধু মহলে বলে বেড়াই, সামাজিক মাধ্যমে জানান দিই।

আরও পড়ুন- পরকীয়া ও ইসলামী দৃষ্টিকোণ

আব্দুল্লাহ ইবন মাসঊদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈক ব্যক্তি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলো: হে আল্লাহর রাসূল! কোনো পাপটি আল্লাহ তা‘আলার নিকট মহাপাপ বলে বিবেচিত? রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আল্লাহ তা‘আলার সাথে কাউকে শরীক করা; অথচ তিনিই তোমাকে সৃষ্টি করেছেন। সে বললো, অতঃপর কী? তিনি বললেন, নিজ সন্তানকে হত্যা করা ভবিষ্যতে তোমার সঙ্গে খাবে বলে। সে বললো, অতঃপর কী? তিনি বললেন, নিজ প্রতিবেশীর স্ত্রীর সঙ্গে ব্যভিচার করা”।

আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে ব্যভিচারের কঠিন নিন্দা করেন। তিনি বলেন,

وَ لَا تَقۡرَبُوا الزِّنٰۤی اِنَّهٗ کَانَ فَاحِشَۃً ؕ وَ سَآءَ سَبِیۡلًا

তোমরা যিনা তথা ব্যভিচারের নিকটবর্তীও হয়ো না। কারণ, তা অশ্লীল ও নিকৃষ্ট আচরণ। [সূরা আল-ইসরা, আয়াত: ৩২]

তবে এ ব্যভিচার মুহরিমা (যে মহিলাকে বিবাহ করা শরী‘আতের দৃষ্টিতে হারাম) এর সাথে হলে তা আরো জঘন্য। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা নিজ বাপ-দাদার স্ত্রীদেরকে বিবাহ করা সম্পর্কে বলেন,

وَ لَا تَنۡکِحُوۡا مَا نَکَحَ اٰبَآؤُکُمۡ مِّنَ النِّسَآءِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّهٗ کَانَ فَاحِشَۃً وَّ مَقۡتًا ؕ وَ سَآءَ سَبِیۡلً

“তোমরা নিজেদের বাপ-দাদার স্ত্রীদেরকে বিবাহ করো না, তবে যা গত হয়ে গেছে তা আল্লাহ তা‘আলা ক্ষমা করে দিবেন। নিশ্চয় তা অশ্লীল, অরুচিকর ও নিকৃষ্টতম পন্থা”। [সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২২]

বারা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমার চাচার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হয়। তার হাতে ছিলো একখানা যুদ্ধের ঝাণ্ডা। আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম: আপনি কোথায় যাচ্ছেন? তিনি বললেন, আমাকে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এমন এক ব্যক্তির নিকট পাঠিয়েছেন, যে নিজ পিতার স্ত্রী তথা তার সৎ মায়ের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে আদেশ করেছেন তার গর্দান কেটে দিতে এবং তার সম্পদ হরণ করতে”। মুহরিমাকে বিবাহ করা যদি এতো বড় অপরাধ হয়ে থাকে তা হলে তাদের সাথে ব্যভিচার করা যে কতো বড়ো অপরাধ হবে তা সহজেই বুঝা যায়।

আরও পড়ুন- পরকীয়ার সূত্রপাত হয় কিভাবে?

আল্লাহ তা‘আলা লজ্জাস্থান হিফাযতকারীকে সফলকাম বলেছেন। এর বিপরীতে অবৈধ যৌন সংযোগকারীকে ব্যর্থ, নিন্দিত ও সীমালঙ্ঘনকারী বলে আখ্যায়িত করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَۙ‏

الَّذِيۡنَ هُمۡ فِىۡ صَلَاتِهِمۡ خَاشِعُوۡنَ ۙ‏

وَالَّذِيۡنَ هُمۡ عَنِ اللَّغۡوِ مُعۡرِضُوۡنَۙ

وَالَّذِيۡنَ هُمۡ لِلزَّكٰوةِ فَاعِلُوۡنَۙ‏

وَالَّذِيۡنَ هُمۡ لِفُرُوۡجِهِمۡ حٰفِظُوۡنَۙ‏

“মুমিনরা অবশ্যই সফলকাম। যারা সালাতে অত্যন্ত মনোযোগী। যারা অযথা ক্রিয়া-কলাপ থেকে বিরত। যারা যাকাত দানে অত্যন্ত সক্রিয়। যারা নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী। [সূরা আল-মুমিনূন, আয়াত: ১-৫]

আল্লাহ তা‘আলা কুরআন মাজীদে ব্যভিচারীকে চরমতম নিন্দা করেছেন। তবে যারা নিন্দিত নয় তাদের মধ্যে যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী অন্যতম।”

আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَٱلَّذِينَ هُمْ لِفُرُوجِهِمْ حَـٰفِظُونَ

إِلَّا عَلَىٰٓ أَزْوَٰجِهِمْ أَوْ مَا مَلَكَتْ أَيْمَـٰنُهُمْ فَإِنَّهُمْ غَيْرُ مَلُومِينَ

فَمَنِ ٱبْتَغَىٰ وَرَآءَ ذَٰلِكَ فَأُو۟لَـٰٓئِكَ هُمُ ٱلْعَادُونَ

“আর যারা নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযতকারী। তবে যারা নিজ স্ত্রী ও অধিকারভুক্ত দাসীদের সঙ্গে যৌনকর্ম সম্পাদন করে তারা অবশ্যই নিন্দিত নয়। এ ছাড়া অন্যান্য পন্থায় যৌনক্রিয়া সম্পাদনকারীরা অবশ্যই সীমালংঘনকারী”। [সূরা আল-মা‘আরিজ, আয়াত: ২৯-৩১]

লজ্জাস্থান হিফাযতের কারণেই মারইয়াম আলাইহাস সালাম মহিলাদের মধ্যে বিশেষ পূর্ণতা লাভ করেছেন এবং পবিত্র কুর‘আন মাজীদে বিশেষভাবে কার কথা আলোচিত হয়েছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

وَمَرْيَمَ ٱبْنَتَ عِمْرَٰنَ ٱلَّتِىٓ أَحْصَنَتْ فَرْجَهَا فَنَفَخْنَا فِيهِ مِن رُّوحِنَا وَصَدَّقَتْ بِكَلِمَٰتِ رَبِّهَا وَكُتُبِهِۦ وَكَانَتْ مِنَ ٱلْقَٰنِتِينَ

“আল্লাহ তা‘আলা আরো দৃষ্টান্ত দিয়েছেন ইমরান তনয়া মারইয়ামের। যে নিজ সতীত্ব রক্ষা করেছে। ফলে আমরা তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকে দিয়েছি এবং সে তার প্রভুর বাণী ও তাঁর কিতাবসমূহ সত্য বলে গ্রহণ করেছে। সে ছিলো অনুগতদের অন্যতম।” [সূরা তাহরীম, আয়াত: ১২]

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম লজ্জাস্থান হিফাযতকারীকে জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

হে কুরাইশ যুবকরা! তোমরা নিজ যৌনাঙ্গ হিফাযত করো। কখনো ব্যভিচার করো না। জেনে রাখো, যে ব্যক্তি নিজ লজ্জাস্থান হিফাযত করতে পেরেছে তার জন্যই তো জান্নাত।

সাহল ইবন সা‘আদ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,যে ব্যক্তি উভয় চোয়ালের মধ্যভাগ তথা জিহ্বা এবং উভয় পায়ের মধ্যভাগ তথা লজ্জাস্থান হিফাযত করার দায়িত্ব গ্রহণ করবে আমি তার জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করবো।

উবাদাহ ইবন সামিত রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”তোমরা নিজ থেকেই ছয়টি কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করলে আমি তোমাদের জন্য জান্নাতের দায়িত্ব গ্রহণ করবো। তোমরা কথা বললে সত্য বলবে। ওয়াদা করলে তা পুরা করবে। কেউ তোমাদের নিকট কোনো কিছু আমানত রাখলে তা যথাযথভাবে আদায় করবে। লজ্জাস্থানকে হিফাযত করবে। চোখকে নিম্নগামী করবে এবং হাতকে অসৎ কর্ম থেকে বিরত রাখবে”।

আরও পড়ুন-পরকীয়া যখন সামাজিক ব্যাধি !

আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,”কোন মহিলা যদি রীতি মতো পাঁচ বেলা সালাত পড়ে, রামাদানের সাওম পালন করে এবং নিজ লজ্জাস্থানকে হিফাযত করে; উপরন্তু তার স্বামীর আনুগত্য করে তা হলে সে জান্নাতের যে কোনো গেট দিয়ে চায় ঢুকতে পারবে”।

লজ্জাস্থান হিফাযত আল্লাহ তা‘আলার ক্ষমা পাওয়ার এক বিশেষ মাধ্যম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

اِنَّ الۡمُسۡلِمِیۡنَ وَ الۡمُسۡلِمٰتِ وَ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ وَ الۡمُؤۡمِنٰتِ وَ الۡقٰنِتِیۡنَ وَ الۡقٰنِتٰتِ وَ الصّٰدِقِیۡنَ وَ الصّٰدِقٰتِ وَ الصّٰبِرِیۡنَ وَ الصّٰبِرٰتِ وَ الۡخٰشِعِیۡنَ وَ الۡخٰشِعٰتِ وَ الۡمُتَصَدِّقِیۡنَ وَ الۡمُتَصَدِّقٰتِ وَ الصَّآئِمِیۡنَ وَ الصّٰٓئِمٰتِ وَ الۡحٰفِظِیۡنَ فُرُوۡجَهُمۡ وَ الۡحٰفِظٰتِ وَ الذّٰکِرِیۡنَ اللّٰهَ کَثِیۡرًا وَّ الذّٰکِرٰتِ ۙ اَعَدَّ اللّٰهُ لَهُمۡ مَّغۡفِرَۃً وَّ اَجۡرًا عَظِیۡمًا

নিশ্চয় মুসলিম পুরুষ ও মহিলা, মুমিন পুরুষ ও মহিলা, অনুগত পুরুষ ও মহিলা, সত্যবাদী পুরুষ ও মহিলা, ধৈর্যশীল পুরুষ ও মহিলা, বিনয়ী পুরুষ ও মহিলা, সাদাকাকারী পুরুষ ও মহিলা, সাওম পালনকারী পুরুষ ও মহিলা, নিজ লজ্জাস্থান হিফাযতকারী পুরুষ ও মহিলা এবং আল্লাহ তা‘আলাকে অধিক স্বরণকারী পুরুষ ও মহিলা এদের জন্যই আল্লাহ তা‘আলা রেখেছেন তাঁর ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান। [সূরা আল-আহযাব, আয়াত: ৩৫]

বিয়ে শাদী করলে জানতাম যে ব্যভিচার থেকে নিরাপদ থাকা যায়।কিন্ত এখন নিজ ঘরে সুন্দরী স্ত্রী রেখেও জেনা ব্যভিচারের দিকে মানুষ হাত বাড়ায়। আমাদের দেশেও এখন এর প্রবণতা ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। বর্তমানে মোবাইল ফোন, ফেসবুকসহ নানা প্রযুক্তি মানুষের হাতের মুঠোয়, তাই আজকাল পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তোলা অনেক সহজ। বিবাহিত জীবন থাকা স্বত্ত্বেও অন্য কোনও নারী বা পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার কারণে শুধু পরিবারটিই ভেঙ্গে যায় না, উপরন্তু সন্তানদের উপরও এর মানসিক চাপ পড়ে । নারী বা পুরুষ তাদের বিবাহিত জীবন নিয়ে কি তবে সন্তুষ্ট নন? সমাজ বিজ্ঞানীরা বলেন, দাম্পত্য জীবনে স্বামী-স্ত্রীর বুঝাপড়া, পরষ্পরের প্রতি পরষ্পরের দায়িত্ব ও সম্মানবোধের ঘাটতি এবং সেই সাথে পার্থিব বিষয়বস্তর প্রতি লালসা,পরিবারের জন্য সময় ব্যয়ে অনাগ্রহ এসব কারণে আজকাল সংসার ভেংগে যাচ্ছে।ব্যভিচারও বাড়ছে,ডিভোর্সও বাড়ছে।কি অদ্ভূত এক চরিত্র আমাদের !! আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহসহ বিশ্ববাসীকে জেনা-ব্যভিচারের মহা অভিশাপ থেকে বেঁচে থাকার ও কুরআন-সুন্নাহর আমল দিয়ে নিজেদের জীবন সাজানোর তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখকঃ লেখক এবং সাবেক এডিশনাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা,গল্প,কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক!  আপনি আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন,“তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) ।আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে লেখক জামান শামস

আরও পড়ুন