ডাঃ জোবায়ের আহমেদ
………………………………..
এই শহরে আমার কেউ থাকেনা।।
এই শহরে আমার মা থাকেনা,সন্তান থাকেনা।
বোন থাকেনা,প্রিয়তমা থাকেনা।
এই শহরে সূর্য গলে, বারুদ কথা বলে।
এই শহরে মানুষ পুড়ে আগুনে।
এই শহরে মানুষ নাগরিক অভিশাপে বাঁচে।
এই শহরে আজ ভালবাসা ও বন্ধুত্ব থাকেনা।
থাকে অভিনয় ও প্রতারণা।
এই শহরে আজ বিশ্বাস থাকেনা।
এখানে বসে বিশ্বাসঘাতকদের মিলনমেলা।
এই শহরে মায়া ও মায়াবিনীরা থাকেনা
শুধুই লোক ঠকানোর খেলা।
এই শহরের নদী ও নারীরা নিরাপদে থাকেনা।
একটা ভয়ংকর হাত তাদের শরীরে আঁচড় কাটায় ব্যস্ত।
এই শহরে সবুজ থাকেনা,নির্মল বায়ু থাকেনা।
বাতাসে সীসার গন্ধ।বর্ণহীন সব।
এই শহরে মানুষের জীবন আগায় না।
উত্তপ্ত আগ্নেয়গিরির লাভায় সিক্ত হয় রাস্তায় প্রতিদিন।
এই শহরে স্বপ্নরা বাঁচেনা।তরুণেরা স্বপ্ন দেখে না।
স্বপ্নরা অকালে ভেঙ্গে পড়ে।
এই শহরে মানুষ ঘরে নিরাপদে ফিরে না।
লাশের স্তুপের সামনে স্বজনের আহাজারি চলে।
এখানে হাসি নেই,আনন্দ নেই।প্রেম নেই।
জীবনের উচ্ছ্বাস নেই।
এই শহরে শিশু ও কিশোররা খেলা করেনা।
মাদকের ভর্য়াত ছোবল চারপাশে।
এই শহরে সুন্দর থাকেনা।
কুৎসিত কদাকার দানবের ছড়াছড়ি এখানে।
এই শহরে মায়েরা যত্নে থাকেনা।
বৃদ্ধাশ্রমে একাকী নিঃসঙ্গ নারীর জীবনের হাপিত্যেশ চলে এখানে।
এই শহরের আকাশে সাদা বক উড়ে না,মেঘেরা ভেসে বেড়ায় না।
প্রজাপতি ডানা মেলে না,দোয়েল শিস বাজায় না।
এই শহরে গোলাপ ঝরে যায়।
এখানে ফুলেরা হাসেনা,কবিরা কবিতা লিখে না।
এই শহরে মানুষ মাথা উঁচু করে থাকেনা।
ভয় ও ত্রাসের রাজত্ব চলে এখানে।
এই শহর আমার নয়।
এই শহরে আমি বাঁচিনা।
ডাঃ জোবায়ের আহমেদ কবি, সাহিত্যিক ও চিকিৎসক।