Ads

নতুন আস্তানা-বৃদ্ধাশ্রম

গৌতম সোম

কৃত্রিম ভালোবাসার অমৃত স্বাদে
লাবণ্যময় সংসার,
মিথ্যায় ভেঙে পড়া আকাশের শুন্যতায়
সফলতার অঙ্গীকার,
নরম বিছানার আনাচে কানাচে আলিঙ্গনে আবদ্ধ
তারুণ্যের অহংকার,
অনাবিল আনন্দ ছড়িয়ে দিয়ে সর্বত্রi
ভুল গন্তব্যে আজ বসন্তের অনুচর,
প্রতিটি কোষ শিহরিত করে রত্নগর্ভা নিয়ে এল
শ্রেষ্ঠ সন্তানের ছাড়পত্র,
বেহিসাবি আদরের বক্ষ নিঃসৃত স্পন্দনে
বড় হওয়া সঙ্গে নিয়ে শুভ্রললাটের শুভ্রসুখ-তত্ত্ব,
ভালো স্কুল, ভালো কলেজ, শ্রেষ্ঠ ইনস্টিটিউশন-এর
স্বপ্নময় আভিজাত্যপূর্ন আঙিনায়,
পৌঁছে দিল জন্মদাতা বলিষ্ঠ চরিত্র গঠনের তরে
নির্দ্বিধায় হৃদয়ের মায়ায়,
সন্তান বড় হলো সু-প্রতিষ্ঠিত হলো
বড় উপার্জনের রাস্তা উন্মুক্ত হলো,
গৃহেতে শঙ্খধ্বনি বাজলো,
উলুধ্বনি-মন্ত্রধ্বনি উচ্চারিত হলো,
আত্মীয় স্বজনের সমাগম হোলো, নববধূর প্রবেশ ঘটলো l

এরপর ক্রমশঃ জন্মদাতার গুরুত্ব কমতে লাগলো,
ক্রমশঃ জন্মদাতা বাড়ির জঞ্জালে পরিণত হোলো,
শুরু হোলো ধীরগতিতে মানসিক নির্যাতন,
বয়োকনিষ্ঠ নিয়ন্ত্রকের নিপীড়ন,
পরামর্শ চলতে থাকলো নতুন ঠিকানার নতুন আস্তানার , মৃত্যু হোলো জন্মদাতার সন্তান-নাত-নাতনিদের সঙ্গে
থাকবার দীর্ঘসময়ের সুপ্ত বাসনার,
অবশেষে হাজির সেই নতুন গন্তব্যস্থল–বৃদ্ধাশ্রম,
জীবনের সব আশা সব ভরসা
সব নিষ্ঠা পরম্পরা
সন্তানের ইশারায় দিতে হোলো বিসর্জন ll

কিন্তু কেন এমন হবে? প্রশ্ন উঠুক,
তৈরী হোক কঠিন আইন, কড়া পদক্ষেপ,
কেড়ে নেয়া হোক বিদ্বেষী সন্তানের
স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি,
বাজেয়াপ্ত হোক পিতামাতার পয়সায়
অর্জন করা বড় বড় ডিগ্রি,
ধ্বংস করে দেয়া হোক বড় উপার্জনের উৎস,
জমানো পুঁজি,
শেষ হোক দুনিয়ার এই চলমান নিপীড়ন
শতাব্দীর দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসা এই আক্ষেপ ll

14/10/2020

কবিঃ সাহিত্যিক, জলপাইগুড়ি, ভারত

 

আরও পড়ুন