নাসরিন জাহান
পথিক হাঁটছে; সেই সিন্ধু পারাবার ! ছাড়ায়ে,
অদূরে দেখা যাচ্ছে কালাপাহাড়! খর্বকায়ে।
পথ শুধু পেতেই রেখেছে, ধূলিময় দেহ
কখনো থাকে তার বুকে রিক্ত ধূসরতা, কখনো বিরহ!
কেউ কুড়ায়ে লযেছে ঝরাপাতা, সৌন্দর্যের অবগাহে
কেউ খোসা ফেলে করেছে হেয় রৌদ্র দাবদাহে।
পথের ধূলির কোন অভিযোগ নেই
হউক সে দিনের তপ্ত বালুকাবেলায় লুটায়ে পড়া পথিক
কিংবা রাতের গুপ্তচরের শুভ্র সেনাপতির প্রতীক !!
পথ দেখাইয়েছে শুধু গন্তব্যের ঠিকানা
মাঝে মাঝে চলার শব্দে করেছে কিছু বায়না
কখন শেষ হবে সেই পথের, সেই পথ চলা!!
জানে না কোন পথিক শুধু নির্বিকারেই কিছু বলা।
যদি হাঁটে তার উপর রাজপুত্র ; ঘোড়ার পায়ের খুঁড়ে
উড়ে যায় তপ্ত বালির কণা রাশি রাশি
যদি হাঁটে তার উপর রাজকন্যা ; দুপাশের জংলী ফুল
শুধরে দিতে চায় তাঁর চলার সমস্ত ভুল ।
যদি হাঁটে পথের কোণে ফকির, সন্ন্যাসী!!
পথ মানে না চিরকাল তারা পৃথিবীর দাসী।
মানুষে মানুষে হানাহানি চলে,
পথের মতো উদার কেহ নহে।
দ্বন্ধের বাড়াবাড়িতে কেনো পথের ধূলি ব্যবহার করে
এক মুঠো বালি কেনো কেউ কারো চোখে ছুড়ে ?
মতভেদ পার্থক্যে পথের ধূলি কিছু শিক্ষা দেয়
অহংকারের থাবানলে কে ই বা আমলে নেয়।
সংযম, বার্ধক্যে যদি পথের ধূলির অস্তিত্বে রয়
ধরণী তবে কেন হবে না সিক্ত মধুময়!!
ঝড়ো হাওয়ায় উড়ে যায় যতটা ধূলির কণা
ভেজা বৃষ্টি আবার করে নেয় ততটা কাদার আস্তানা।
পথের কোন অভিযোগ থাকে না
শুধু পেরিয়ে যায় পথিকের অজানা ঠিকানা
হারাতে তার নেই একটুও মানা।
মানুষের বাসনা হয় না কেনো পথের মতো
বিলিয়ে দিতে পারে না নিজেকে ধূলির মতো।
হিংসা বিদ্বেষ বাদ দিয়ে যদি সবাই অহিংস হতো
রাতের আঁধারেও ভয় নাই, তপ্ত রোদে ও ক্ষয় নাই।
শুধু ঈঙ্গিতে বলে! এদিক যাও! ওদিক যাও!!!!
নাসরিন জাহান – কবি।