তোমার চিঠিগুলো খুব যত্নে
তোরঙ্গে তুলে রেখেছি।
ন্যাপথলিনে মোড়ানো বাক্সটা
প্রায়ই লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি।।
পরীক্ষার খাতা রিভিশন দেয়ার মতো,
চিঠিগুলো বারবার, শতবার, বহুবার পড়বো,,
আনন্দে কাঁদবো,হাসবো,
সেই প্রত্যাশায় কেটে যাবে
সহস্র দিনপঞ্জি।।
তুমি আমায়
অনেক নামে ডাকতে।
আমি আনন্দ মেশানো ভয়ে
কাঁপা কাঁপা হাতে,খাম খুলে
চিঠি পড়ার আগেই
সুখের শিহরণে কেঁপে উঠতাম।।
কি উচ্ছ্বাস, কি হাহাকার!
কি আনন্দবেদনার কাব্যে
ভরপুর ছিলো, আমাদের
পাতায় ছাওয়া দিনগুলো।।
জলের গ্লাস উপচে পড়ার আগেই,
ছুঁয়ে দেয়ার ছলে তুমি
হাতে ধরিয়ে দিতে
লাল নীল খাম।।
আমি ভেসে যেতাম
টইটুম্বুর ডুবসাঁতারে।।
সুখের অবগাহনে
ঘর, মন, জানালার সিনানে
মেলে ধরতাম তোমার চিঠিগুলো।।
ভীষণ ইচ্ছে করতো
নীলাম্বরী শাড়িতে নিজেকে সাজাতে,
নীল যমুনায় ডুবেও মরন যেন, আমার সুখের আশ্রয়।।
এখন ক্যালেন্ডারের পাতা, আমাদের করেছে বিচ্ছিন্ন।
পাতাঝরা দিনের মতো,
প্রতিটি দিনই
হাজার বছর মনে হয়।।
খামখেয়ালী চৈত্রের অসুখে
পুড়ে গ্যাছে আমাদের দিন,মাস,রাত।।
তবুও খুব নিশীথে ঘুম ভেঙে,
আমি সযতনে তুলে রাখা বাক্সটা
লুকিয়ে লুকিয়ে দেখি,
আর বিবর্ণ স্মৃতির আবেগে
বলে উঠি-
পত্র দিও, পত্র দিও….
হাফিজা শারমিন সুমি
গবেষক, প্রাবন্ধি, কবি ও সাহিত্যিক।