মনিরা ইসলাম
মাঝে মাঝে মনে হয় বিষয়বস্তু হিসাবে প্যারেন্টিং সেক্টরে উপাদানের অনেক প্রাচুর্য আছে।প্যারেন্টিং যেহেতু সন্তানের জন্য মা বাবার যত্ন / আদর সার্ভিস তাই এই প্রসঙ্গে কি হবে,কেমন হবে,কখন হবে,কোন বয়সে হবে করতে করতে অনেক কিছু বলার আছে। এ তো গেল ইতিবাচক চিন্তা থেকে বলা কথা।মানে গাইড।মানে এভাবে এভাবে করলে ফলাফল ওভাবে হবে মানে একশ তে একশ। কথা হলে ওভাবে না হলে কি হবে। একদম ঠিক।ওভাবে না হলে কি হবে তা এক ভয়াবহ অবস্থা।
কারণ এই না হওয়া থেকে যা হতে পারে তার আর নিশ্চয়তা থাকে না। নেতিবাচকতা নিয়ে শিশু সব সময় খারাপ হবেই এই কথাটাও ঠিক না।তবে নেতিবাচকতা থেকে বেড়ে ওঠা শিশুর সত্য হয়ে ওঠার জীবন যুদ্ধ বেশী হয়।যেমন হয়েছিল
মাতৃত্ব উপন্যাসে ।
প্রবাসী হিসাবে বেশ কিছু প্রবাসী লেখক লেখিকার সাথে কথা হলো,জানা শোনা হলো। আমি যদিও বোমা মারলেও দুকলম বড়দের গল্প লিখতে পারব না তাদের সবার লেখা আমি পছন্দ করি। ইউকে প্রবাসী লেখিকা আমিনা তাবাসসুম (Ameena Tabassum) লিখেছেন ” মাতৃত্ব” ।প্রথম উপন্যাস হিসাবে লেখিকা তার লেখায় যত্ন রেখেছেন। খুব সাদা মাটা অথচ সংঘাতময় জীবনের লিখিত রূপ তার এই উপন্যাস। এই ঘটনার সব কিছু আমরা দৈনন্দিন জীবনে দেখে থাকি।আমরা দেখি সাধারণ তর্ক অথবা মনোমালিন্য এমনকি দম আটকানো কি হয় কি হয় অবস্থা।

“মাতৃত্ব” আমাদের নানা রকম কি হয় কি হয় অবস্থায় পথ হারানো আবার পথ খুঁজে পাবার গল্প। এখানে আছে উঠতি বয়সী ছেলে মেয়েদের সঠিক দিক নির্দেশনা না পাবার ফলে পাকে চক্রে পিষ্ট হওয়া সময়।আছে প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় ভুল সিদ্ধান্ত থেকে সহজ হওয়া জীবনের ছবি। প্রবাসীরা হয়ত প্রবাস কে নিয়ে লিখতে পছন্দ করেন। গল্প লন্ডনের পটভূমিতে লিখিত । তবে এসব ঘটনার ছবি বাংলাদেশে নাই বলা যাবে না।
মূল চরিত্র লুসি একজন টিন এজার। তার সংসারে আছে মা আর ছোট বোন মেগান। জানিয়ে রাখছি মেগান আর লুসির বাবা ভিন্ন। মা বলতে যে চিরন্তন ছবি আমরা জানি লুসির মা তেমন কিছু না। বরং লুসি তার মা আর বোনের প্রতি কেয়ারিং।বইটা হাতে পাবার পর এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করেছি। পড়ার পর সমস্ত বাঙালি মা বাবাকে এই বই পড়াতে না পারার জন্য খুব মন খারাপ হয়েছে।আসলে সারা পৃথিবীতে কত বাবা মা আছেন সবাইকে পড়তে দেয়া কি এতো সোজা।
না, সোজা না।আসলে সে জন্যই মন খারাপ হয়। যদি একটা উপন্যাস তার পাঠক শ্রেণীর কাছে পৌঁছাতে না পারে তাহলে সেটার ভালো জ্ঞানটুকু সবার জানা হবে না।বইটা রকমারি তে পাওয়া যায়। লেখিকার কাছে জেনেছি তার ছাপা পাঁচশ কপি বই এখন শেষের দিকে। বই পড়া শেষ করে পাঠক মাত্রই ভাবতে পারেন বাচ্চাদের বড় করতে হলে অনেক দিক জানতে হয়। বটে। যেহেতু এতদিক জানা কঠিন হয় তাই সবচেয়ে সহজ উপায় হলো ইতিবাচক থাকা। ইতিবাচক থাকলে মিলেমিশে থাকা হবে। ইতিবাচক থাকলেলুসি আর মেগান দুজনের একজন বাবা হতে পারবে।

লেখকঃপ্রবাসী লেখিকা,প্রাক্তন ছাত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রাক্তন শিক্ষক ক্যম্ব্রিজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল বাংলাদেশ
প্রাক্তন শরীরচর্চা প্রশিক্ষক
শিশু প্রতিপালন বিশেষজ্ঞ (প্যাডাগগ)
লেখক মনিরা ইসলামের প্রকাশিত লেখাসমূহ-