Ads

হিজাব এবং আমাদের সামাজিক সৌন্দর্য

।। মুস্তফা আজাদ ।।

হিজাব হলো মুসলিম নারীদের সৌন্দর্য। হিজাববিহীন নারী তো পালকবিহীন পায়রীর মতো। হিজাব নিয়েই কেবল একজন মুসলিম নারী জীবনের উন্মুক্ত আকাশে নান্দনিকতার সাথে উড়তে পারে। হিজাব মানুষের হৃদয়ে যেমন সৌন্দর্য তৈরী করে তেমনি বাইরের দিক থেকেও সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে। এর সাথে বৃদ্ধি পায় সামাজিক মর্যাদা।

আজকাল হিজাব তথা পর্দা নিয়ে একদিকে ছাড়াছাড়ি করা হচ্ছে অন্যদিকে বাড়াবাড়িও করা হচ্ছে। এতে প্রকৃত কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে আমাদের গোটা সমাজব্যবস্থা ও নারী-পুরুষ। একটা বিষয় খেয়াল রাখা জরুরী যে নারী বাইরে বের হবে বলেই পর্দার বিধান অবতীর্ণ হয়েছে। ঘরে থাকলে তো মাহরামদের সাথে পর্দার প্রয়োজন হতো না। নারী-পুরুষ মিলেই সমাজ। সমাজে যাতে অশ্লীলতা ছড়িয়ে না পড়ে এজন্য নারী-পুরুষ উভয়কেই পর্দা করতে বলা হয়েছে। পর্দার উদ্দেশ্য হচ্ছে শালীনতা। শুধু শরীর ঢেকে রাখার নাম পর্দা হলে মাহরাম পুরুষদের সামনে বক্ষ ও অন্য আকর্ষণীয় অংশ খুলে রাখা বৈধ হতো। আজকাল একদিকে একপেশেভাবে নারীর ওপর পর্দার বাড়াবাড়ি চাপিয়ে দিয়ে এর উদ্দেশ্য ব্যাহত করা হচ্ছে। অন্যদিকে অনেক ধার্মিক নারী শুধু পোশাকি পর্দা পরিধান করে প্রকাশ্যে অহেতুক ক্লাশমেট ও কর্মস্থলের পুরুষদের সাথে চলাফেরা করছে। অথচ এখানে অন্তরাল সৃষ্টি করাই পর্দা। একই বনে বাঘ ও হরিণ থাকবে, হরিণ ও বাঘ সকলেই বনে ঘুরে বেড়াবে- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু একইসাথে গলায় গলা মিশিয়ে ঘুরে বেড়ানো বিপজ্জনক। অর্থাৎ নারী-পুরুষ উভয়েই হাসপাতাল, কলেজ, ব্যাংক, শিল্প-কারখানা ও অন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক; কিন্তু এর মাঝে আইনগত ড্রেসকোড মানতে হবে এবং পূর্ণ নৈতিকতা প্রদর্শন করতে হবে।

আড়ো পড়ুন-নারীর সত্যিকারের স্বাধীনতা আসে যেভাবে

আরেকটি বিষয় নজর রাখতে হবে, আজকাল বিভিন্নভাবে হিজাববিরোধী আন্দোলন হচ্ছে।

জন্মনিয়ন্ত্রণ আন্দোলন, ন্যাপকিন বিতরণ আন্দোলন ও বাল্যবিবাহ ঠেকাও আন্দোলন এসবেরই অংশ। এগুলো আমাদের সমাজের ডায়াবেটিস। এসব তৎপরতার মধ্যদিয়ে সমাজের শিকড় কেটে ফেলা হচ্ছে নীরবে। অথচ এগুলোর বিপরীতে কোনো কাজ নেই। এজন্য একযোগে এসবের বিপরীতে কাজ করা জরুরী। মিডিয়া, লেখালেখি, সামাজিক কাজ, সাংগঠনিক কাজ প্রভৃতির মধ্যদিয়ে এ-সকল অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে।

আমরা যে মাসে বিশ্ব হিজাব দিবস পালন করি ঠিক সেই মাসে তথাকথিত “বিশ্ব ভালোবাসা দিবস” পালন করা হয়। অনেক তরুণ-তরুণী এ দিনটিতে নিজেদের সর্ববোচ্চ মূল্যবান বস্তুটি হারিয়ে ফেলে। যে কারণে সারাজীবনের জন্য হৃদয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এই দিবসের বিরুদ্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে, অপরকে সচেতন করতে হবে। তবেই কেবল হিজাবী পরিবেশ সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবে, আর ছড়িয়ে পড়বে হিজাবের সামাজিক সৌন্দর্য।

লেখক : সাহিত্যিক, গবেষক ও কলাম লেখক

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সমাজ,পরিবার ও আত্মউন্নয়ন মূলক অসাধারণ লেখা ও আর্টিকেল পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi এ লাইক দিয়ে ফেসবুকে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন।প্রিয় লেখক! আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; প্রিয় লেখক ও পাঠক আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম এ যুক্ত হয়ে আমাদের সাথেই থাকুন ।

আরও পড়ুন