Ads

কেন বই পড়া উচিত 

।। জুয়েল মল্লিক ।।

বইকে কল্পনা করা হয় মানব সভ্যতার এক বিস্ময়কর সংযোজন হিসেবে ৷ কারণ একমাত্র বই-ই পারে একজন বদ্ধমূল চেতনাসম্পন্ন মানুষের সাথে একজন নিবিড় ও মগ্ন পাঠকের মাঝে পার্থক্য তৈরি করতে ৷ একজন জ্ঞানী ও বিচক্ষণ মানুষ বই কে চিন্তা করেন অতীত ও বর্তমানের মধ্যে মেলবন্ধন হিসেবে ৷

পাশ্চাত্য সমাজ ব্যবস্থায় একটা এভারেজ মানের বইও মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়ে যায় ৷ অথচ আমাদের দেশে একজন প্রকাশক অথবা একজন লেখক ৫০০ কপি বই ছাপাতে গেলেও দশবার ভাবেন ৷ শুধু কি তাই ? পাঠক হিসেবে বই কেনার মতো মানুষের সমাজে সংখ্যাও আমাদের সমাজে হাতে গোনা ৷ স্মার্টফোনে ইন্টারনেট ডাটা ক্রয়ের ক্ষেত্রে আমাদের কৃপণতা না থাকলেও বই কেনার ক্ষেত্রে কার্পণ্য যেন নৈমিত্তিক ইস্যু ৷ আমাদের অন্য সকল কাজের জন্য আর্থিক বরাদ্দ থাকলেও বই কেনার জন্য কোন আলাদা বরাদ্দ থাকে না ৷

প্রযুক্তির উৎর্ষতার এই যুগে শুধু আমাদের দেশে নয় বরং সমগ্র পৃথিবীব্যাপী বইয়ের সাথে ইলেকট্রনিক ডিভাইস যেমন- স্মার্টফোন, কম্পিউটার, টেলিভিশন এর মধ্যে সংঘাত শুরু হয়েছে ৷ বইকে হঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে এই প্রযুক্তিভিত্তিক ডিভাইসগুলো ৷ কিন্তু তারপরও বই টিকে আছে তার মতো করেই ৷ পৃথিবীতে সমস্ত মননশীল মানুষের চিন্তার খোরাক জুগিয়ে যাচ্ছে বই ৷ আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তির এই যুগে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন এর অবাধ ব্যবহার বেড়েছে সত্য কিন্তু বইয়ের আবেদন শেষ হয়ে যায়নি ৷ সত্যি বলতে বইয়ের আবেদন শেষ হয়ে যাওয়ার নয়, কারণ আমাদের মানব শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য যেমন নিয়মিত খাবার গ্রহণ জরুরি তেমনি মানুষের চিন্তার খোরাক হলো বই ৷ যাপিত জীবনের বহমান সময়ের যথাযথ সদ্ব্যবহার করতে বই পড়ার চেয়ে সুন্দরতম উপায় নেই ৷ বইয়ের সঙ্গে একবার যার মিতালি হয়ে যায় সে মূলতঃ একজন শ্রেষ্ঠতম বন্ধুর সাক্ষাৎ পায় ৷ অন্যের সাথে নিজের পার্থক্য তৈরি করার জন্য, নিজেকে জানার জন্য, সমাজকে বোঝার জন্য এবং সভ্যতায় অবদান রাখার জন্য বই পড়ার বিকল্প নেই ৷

আরও পড়ুন- স্মার্ট ফোনের যুগে শিশুর বই পড়ার অভ্যাস গড়বেন যেভাবে

বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ বই সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন,

“আমি নিজে বইয়ের কোন অনির্বাণ পাঠক নই কিন্তু বইকে আমি মানব জাতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি ৷ গত কয়েক হাজার বছরের মানুষের জ্ঞান, অনুভব, স্বপ্ন আর অভিজ্ঞতার ভান্ডারকে বই তার পৃষ্ঠায় ধারণ করে আছে- তা সে বই পাথরের ফলকেই লেখা হোক, বা গাছের পাতাতেই লেখা হোক, কাগজের পৃষ্ঠাতেই হোক বা কম্পিউটার এর পর্দাতেই হোক ৷ পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ মানুষদের আত্মার আলো এর ভেতরে জ্বলছে ৷ যে জাতি এই আলোকে যতবেশি আত্মস্থ করেছে সে জাতি তত এগিয়ে যাচ্ছে ৷ আজ একথা তো প্রমাণিত যে, পৃথিবীতে যে জাতির পাঠক যতবেশি, সে জাতি তত উপরে ৷ কাজেই আমাদেরও যদি উপরে উঠতে হয়, তবে আমাদের বই পড়ার সংস্কৃতিকে আরও গভীর, ব্যাপক ও সর্বত্রগামী করা দরকার ৷ “

একমাত্র জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্বের কারণেই মানুষকে “আশরাফুল মাখলুকাত” হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে ৷ আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ (সঃ) জ্ঞানার্জনের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্বারোপ করতে গিয়ে বলেছেন, “বিদ্যা অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য ফরজ ৷”পড়ার গুরুত্বের বিষয়টি আরও স্পষ্টতর হয়ে ওঠে পবিত্র কুরআন মাজীদে নাযিলকৃত সুরা আলাকের প্রথম পাঁচ আয়াত দ্বারা ৷ যেখানে ইরশাদ করা হয়েছে –

“পাঠ কর তোমার প্রতিপালকের নামে, যিনি সৃষ্টি করেছেন৷ যিনি সৃষ্টি করেছেন মানুষকে জমাটবদ্ধ রক্তপিন্ড থেকে ৷ পাঠ কর তোমার প্রতিপালক মহামান্বিত ৷ যিনি কলমের সাহায্যে শিক্ষা দিয়েছেন যা সে জানতো না ৷”- সুরা আলাকঃ আয়াত ১-৫ ৷

বই পড়া, জ্ঞান সংক্রান্ত ভূমিকা ও প্রভাব সম্পর্কে নবী করীম (সঃ) বলেছেন, মানুষ যখন মারা যায়, তখন তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু তিনটি আমলের সওয়ার অব্যাহত থাকে ৷ (১) সাদকায়ে জারিয়া (২) এমন এলেম বা বিদ্যা যা থেকে লাভবান হওয়া যায় এবং (৩) নেক সন্তান ; সুসন্তান যে তার জন্য দোয়া করে ৷ (মুসলিম শরীফ) ৷ এছাড়া হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে, ” রাতে এক ঘন্টা জ্ঞানচর্চা সারারাতের নফল ইবাদতের চেয়েও উত্তম ৷ ”

আরও পড়ুন- যে ১০ টি কারণে প্রতিদিন বই পড়া উচিত

বই পড়া মানুষের চিত্ত- বিনোদনের সর্বশ্রেষ্ঠ উপকরণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় ৷ কারণ বই পড়ে আনন্দ পাওয়ার মতো দামি বিনোদনের সন্ধান একবার যে পায়, তার কাছে স্মার্টফোন, মোবাইল, টিভি বা কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রাপ্ত বিনোদনগুলো তখন সস্তা হয়ে যায় ৷ তাদের কাছে বই পড়ার বিষয়টি হয়ে যায় নেশার মতো৷ যদিও আজকের প্রজন্মে বই পড়ার ব্যাপারে ব্যাপক অনীহা এবং উন্নাসিকতার বিষয়টি লক্ষ্যনীয় ৷ যার ফলশ্রুতিতে প্রজন্মের চেতনায় দেশপ্রেম, মানবপ্রেম, সমাজের প্রতি দ্বায়িত্ববোধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আপোষহীনভাবে প্রতিবাদ করার বিষয়গুলো হারিয়ে যাচ্ছে ৷ বই ছাড়া বেহেশতের কথাও কল্পনা করতে পারেননি ওমর খৈয়াম ৷ জ্ঞানের অবলম্বন ছাড়া বই আর কিছুই নয়৷ আর কিছু হতে পারে না৷ পাঠ্য বইয়ের বাইরে অনেক বই পড়তে হবে, তাহলেই তৈরি হবে প্রকৃত ও দেশপ্রেমিক সুনাগরিক, যারা আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মানে তাদের মেধা ও যোগ্যতাকে কাজে লাগাবে ৷

কিন্তু অপ্রিয় সত্য এই, আমাদের শিক্ষিত সম্প্রদায় মোটের উপর বাধ্য না হলে বই স্পর্শ করেন না৷ যার ফলশ্রুতিতে নিজ কর্ম পরিধির বাইরে তাদের কোন গভীর জ্ঞান থাকে না ৷ প্রাত্যহিক জীবনে যতটুকু পড়ালেখা হয় সেটা দায়ের পড়ালেখা, সার্বজনীন পড়ালেখা নয় ৷ কিছু ব্যতিক্রম বাদে বেশিরভাগই সর্বশেষ নিবিড়ভাবে পড়েন চাকুরির পরীক্ষার আগে, চাকরি পাওয়ার প্রয়োজনে ৷ সেটা কোন মননশীল পড়ালেখা নয়, চাকুরির প্রয়োজনে বাধ্য হয়ে পড়া ৷ ফলে পূর্বাপর বিবেচনায় বাবা’র সাথে সন্তানের বা তারও পরের প্রজন্মের জন্যও পড়ালেখায় যে নজীর আমাদের সামনে মূর্ত হয়ে ওঠে সেটা হয় পেটের দায়ে পড়ালেখা ৷

জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বই পড়া প্রসঙ্গে বলেন, ” বই পড়াকে যে যথাযথ সঙ্গী হিসেবে নিতে পারে, তার জীবনে দুঃখ কষ্টের বোঝা অনেক কমে যায় ৷”

এ প্রসঙ্গে কবি আল মাহমুদের উক্তিটাও প্রণিধানযোগ্য, তিনি বলেছেন, “আমি জীবনে আনন্দ পেয়েছি বই পড়ে, কারণ বই পড়া আমাকে অনেক দুঃখ থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে ৷ একটা বই পড়েছি তো সব দুঃখ ভূলে গেছি৷ এরকম বই তখনও ছিলো এখনো আছে৷” বই মানুষের জ্ঞানের চক্ষুকে উন্মীলিত করে ৷ বই জ্ঞানের প্রতীক, আনন্দের প্রতীক ৷ জীবনকে পরিপূর্ণরুপে বোঝার জন্য, অভ্যাসের সংস্কার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বইয়ের প্রয়োজন অনস্বীকার্য ৷ বন্ধুরা ব্যতিরেকে আনন্দ অর্থহীন ৷ দুঃখের দিনে চাই বই ৷বই-ই একমাত্র দুঃখকে অর্থবহ করে তোলে ৷ আমাদের ছোটবেলায় বাবা মা ভালো মন্দ শিখিয়েছেন আর বড়বেলায় ভালোমন্দ শিখি বই পড়ে ।

একটা বই শুধু তথ্যই দেয় না, প্রশ্ন করার খোরাক দেয় এবং নতুন করে চিন্তা করতে শেখায় ৷ একটা বই মস্তিস্কের জন্য ব্যায়াম স্বরূপ, যে বই পড়ে না তার মস্তিস্কের কোন ব্যায়াম হয় না। এই পৃথিবী থেকে যেসমস্ত বরেণ্য মানুষ গত হয়েছেন তাদের সাথে আমাদের পুনরায় মিলিত হবার কোন সুযোগ অবশিষ্ট নেই । অথচ চাইলেই আমরা তাদের চিন্তার সাথে পরিচিত হতে পারি তাদের সৃষ্টিকর্মের মাধ্যমে। বইকে মনে করা হয় অন্তহীন জ্ঞানের আঁধার। মানুষের হাজার বছরের লিখিত-অলিখিত সব ইতিহাস ঘুমিয়ে আছে বইয়ের পাতায় পাতায় ৷পীয়ারসন বলেছেন- “যে বই পড়ে না তাঁর মধ্যে মর্যাদাবোধ জন্মে না”। বই এমন এক সঙ্গী যা মানুষের সঙ্গে কখনো প্রতারণা করে না, বই হলো মানুষের সবচেয়ে বিশ্বস্ত বন্ধু।

গেইম অব থ্রনস সিরিজের একটি চরিত্রের নাম টিরিয়ন ল্যানিষ্ট্যার। তার মুখ নিঃসৃত একটি কথার মাধ্যমে বুঝতে পারা যায় বই পড়ার গুরুত্ব সম্পর্কে । তিনি বই পড়ার গুরুত্ব বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, “একটি তরবারিকে যেমন ধারালো রাখার জন্য শানপাথর দিয়ে শাণ দিতে হয় তেমনি মস্তিস্ককেও শাণ দিতে হয় বই দিয়ে। এজন্যই আমি বই পড়ি।” এখন মনে প্রশ্ন জাগতে পারে বই কিভাবে পড়বো বা বই পড়ার জন্য অনুসৃত প্রক্রিয়াটাই বা কি ?

আরও পড়ুন- আমি ও আমার বই পড়া-১

এ প্রসঙ্গে আহমদ ছফা’র লেখা ‘যদ্যপি আমার গুরু’ বইয়ে উদ্বৃত প্রফেসর আব্দুর রাজ্জাকের সাথে আহমদ ছফার কথোপকথন গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। তিনি বলেন,- “বই পড়ার কাজটি অইল অন্যরকম। আপনে যখন মনে করলেন, কোনো বই পইড়্যা ফেলাইলেন, নিজেরে জিগাইবেন যে বইটা পড়ছেন নিজের ভাষায় বইটা আবার লিখতে পারবেন কি না। আপনের ভাষার জোর লেখকের মতো শক্তিশালী না অইতে পারে, আপনের শব্দভান্ডার সামান্য অইতে পারে, তথাপি যদি মনে মনে আসল জিনিসটা রিপ্রোডিউস করবার না পারেন, ধইরা নিবেন আপনের পড়া অয় নাই—–” আলাপচারিতার অন্য এক জায়গায় অধ্যাপক আবদুর রাজ্জাক একবার আহমদ ছফাকে জিজ্ঞেস করেন তিনি পড়ার সময় নোট রাখছেন কি না। আহমদ ছফা প্রতি উত্তরে না বোধক জবাব দিলে আবদুর রাজ্জাক বলেন,“তাইলে ত কোনো কাম অইব না। ক্ষেত চষবার সময় জমির আইল বাইন্ধ্যা রাখতে অয়।” ক্ষেত চাষ করার সময় প্রথম কাজই হল আইল বান্ধা অর্থাৎ চার পাশের সীমানা একটু উঁচু করে দেয়া। এই আইলই যদি না বাঁধা হয় তাহলে মূল এবং প্রথম কাজটিই হল না। তখন সমস্ত ব্যাপারটা হয়ে দাঁড়াবে তলাবিহীন পাত্রের মত, যাতে কিছু রাখা যায় না।

তাই আমাদের বই পড়াকে ইফেক্টিভ বা কার্যকরী করার জন্য পঠিত বিষয়কে রিপ্রোডিউস বা পুনরুল্লেখ করার ক্ষমতার উপর অধিকতর গুরুত্বারোপ করা জরুরী। তাহলেই দিনশেষে বই পড়ার এই অভ্যেস ও নেশা আমাদের পরিণত করবে একজন শাণিত এবং পরিণত মানুষ হিসেবে। এছাড়া পারিবারিক, সামাজিক এবং কর্মজীবনের মতো যেকোন জায়গায় নিজেকে প্রভাব বিস্তারকারী এবং অপরিহার্য হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও বই পড়ার বিকল্প আছে কি ?

লেখকঃ জুয়েল মল্লিক,  ব্যাংকার ও সমন্বয়ক, পাঠশালা পাঠচক্র, বগুড়া

…………………………………………………………………………………………………………………………

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সামাজিক পারিবারিক নানা বিষয়ে লেখা আর্টিকেল ,আত্মউন্নয়নমূলক অসাধারণ লেখা,গল্প,কবিতা পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi  তে লাইক দিয়ে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন। আর হা মহীয়সীর সম্মানিত প্রিয় লেখক!  আপনি আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; মনে রাখবেন,”জ্ঞানীর কলমের কালি শহীদের রক্তের চেয়েও উত্তম ।” মহীয়সীর লেখক ও পাঠকদের মেলবন্ধনের জন্য রয়েছে  আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম ; আজই আপনিও যুক্ত হয়ে যান এই গ্রুপে ।  আসুন  ইসলামী মূূল্যবোধে বিশ্বাসী প্রজন্ম গঠনের মাধ্যমে সুস্থ,সুন্দর পরিবার ও সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখি । আল্লাহ বলেছেন,“তোমরা সৎ কাজে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে চলো ।” (সূরা বাকারা-১৪৮) ।আসুন আমরা বুদ্ধিবৃত্তিক কাজের মাধ্যমে সমাজে অবদান রাখতে সচেষ্ট হই। আল্লাহ আমাদের সমস্ত নেক আমল কবুল করুন, আমিন ।

ফেসবুকে লেখক জুয়েল মল্লিক

আরও পড়ুন