Ads

সমকামী পুরুষরা কিভাবে সন্তানের বাবা হন ?

।। ডা: আহমেদ জোবায়ের ।।

সমকামী দুই পুরুষ প্রথম সন্তানের জন্ম দিতে চলেছেন। সমকামী দুই নারী সন্তানের মা হতে চলেছেন এমন নিউজ বিভিন্ন সময় দেখে সাধারণ মানুষ টাস্কি খেয়ে যান। ওরেব্বাস কিভাবে সম্ভব? মিডিয়া গুলো এমন ভাবে উপস্থাপন করে ব্যাপার টা যাতে মনে হচ্ছে সন্তান জন্ম দিতে বিপরীত লিঙ্গের কাউকে লাগে না।এসব নিউজ এর উদ্দেশ্য সমকামিতা প্রমোট করা বৈকি আর কিছু না। দুইজন পুরুষ বা দুইজন নারী মিলে কেয়ামত অব্দি কোন কোনভাবেই সন্তান জন্ম দিতে পারবে না।

তবে কিভাবে সন্তানের মা বাবা হন তারা? আসুন শুভংকরের ফাঁকি টা কোথায় আলাপ করি। একজন বাচ্চার জন্মের জন্য লাগবে শুক্রাণু এবং ডিম্বাণু। পুরুষ দিতে পারে শুক্রাণু, নারী দেয় ডিম্বাণু। দুই সমকামি পুরুষ কোনভাবেই একটা ডিম্বাণু দিতে পারবে না। দুই সমকামী নারী কোনভাবেই একটা শুক্রাণু দিতে পারবে না।

ব্যাপার টা হলো সমকামী দুই পুরুষ যখন সন্তানের বাবা হতে যান,তখন তারা একটা টেস্ট টিউব বেবি সেন্টারে যান। সেখানে তারা শুক্রাণু দেন। সেসব সেন্টারে ডিম্বাণু কিনতে পাওয়া যায়। সমকামী বাবাদের শুক্রাণুর সাথে ক্রয়কৃত ডিম্বাণু যা একজন নারী দিয়েছেন দুইটাকে ল্যাবে Fertilization করে ভ্রূণ বানিয়ে ট্রান্সফার করা হয়।

কোথায় ট্রান্সফার করা হয় প্রশ্ন আসা স্বাভাবিক। সেই সমকামী বাবাদের কারো পেটে তো নয়। তাদের তো জরায়ু নেই। সেক্ষেত্রে আসে সারোগেসি পদ্ধতি। সারোগেসি হলো জরায়ু ভাড়া দেওয়া পদ্ধতি।টাকার বিনিময়ে অনেক নারী নিজেদের গর্ভ ভাড়া দেন। এক্ষেত্রে দরিদ্র পরিবারের নারীরাই এটা করে থাকেন। ভারতে প্রচুর নারী সারোগেসি পদ্ধতিতে গর্ভ ভাড়া দেন।

আরও পড়ুন-ট্রান্সজেন্ডার, সমকামিতা এবং …

তো সমকামী দুই পুরুষের ও ক্রয়কৃত ডিম্বাণুর মাঝে Fertilization এর মাধ্যমে যে ত্রুণ তা ট্রান্সফার করা হয় সারোগেট সেই নারীর জরায়ুতে। সেখানেই বাচ্চাটা বেড়ে উঠে। সারোগেসি আবার দুই প্রকার। ট্রাডিশনাল সারোগেসি যেখানে সারোগেট মা মানে যিনি গর্ভ ভাড়া দেন,তার ডিম্বাণু ইউজ করা হয় না। হোস্ট সারোগেসি যেখানে গর্ভ ভাড়া দেওয়া সারোগেট মায়ের ডিম্বাণু নেওয়া হয় এবং গর্ভ ও ভাড়া নেওয়া হয়। তারপর সেই সারোগেট মা বাচ্চা ডেলিভারির পর দুই সমকামী পুরুষকে তাদের বাচ্চা দিয়ে দেন।

এখানে একটা ব্যাপার আছে। হোস্ট সারোগেসি তে যেহেতু সারোগেট মায়ের ডিম্বাণু নেওয়া হয়,সেজন্য সেই মায়ের সাথে বাচ্চার জিনগত বৈশিষ্ট্য মিল পাওয়া যায় কিন্ত ট্রাডিশনাল সারোগেসি তে জিনগত কোন মিল সারোগেট মায়ের সাথে থাকে না।

আমেরিকায় এই পদ্ধতিতে ১৫-৩০ হাজার ডলার খরচ পড়ে। ভারতের অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা চোপড়া ও তার হাজবেন্ড নিক দুইজনই সারোগেসি তে বাচ্চা নিয়েছেন। এক্ষেত্রে একজন শুক্রাণু দিয়েছেন, একজন ডিম্বাণু কিন্ত বাচ্চা বেড়ে উঠেছে প্রিয়াঙ্কা চোপড়ার গর্ভে নয়,গর্ভ ভাড়া দেওয়া সারোগেট মায়ের গর্ভে। বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খানের ছোট ছেলেটাও সারোগেসির মাধ্যমে জন্ম নেওয়া। এই দম্পতির ক্ষেত্রে গৌরী খান তার গর্ভে বাচ্চা ধারণ করেন নি।

সমকামী পুরুষরা টেস্ট টিউব বা IVF এবং সারোগেসি দুইটা মিলিয়ে বাচ্চার বাবা হন। এক্ষেত্রে লিগ্যালি বাচ্চার অভিভাবক তারা যদি ডিম্বাণু অন্য কোন নারী থেকে কেনা হয়। হোস্ট সারোগেসি তে সমকামী পুরুষ বাবা হলেও মা কিন্ত ডিম্বাণু দেওয়া সারোগেট মা ই।

সহজ করে বুঝানোর চেষ্টা করলাম। সারোগেসি তে দেখা যায় এক বাচ্চার দুইজন মা। একজন ডিম্বাণু দেওয়া মা, একজন গর্ভে ধারণ করা মা। তো এবার বলুন দুই সমকামী পুরুষ কিভাবে সন্তান জন্ম দিলো? নারীর ভূমিকা ছাড়া কোন পুরুষের পক্ষে বাচ্চার জন্ম দেওয়া সম্ভব?

আরও পড়ুন-ট্রান্সজেন্ডার লিঙ্গ-পুনর্নির্ধারণ সার্জারি: খোমেনি ও তানতাভির ফতোয়া এবং কেস স্টাডি

মিডিয়া তবে এসব চটকদার শিরোনাম করে কি বুঝতে চায়,কি প্রমোট করতে চায়? বাংলাদেশের ট্রান্সজেন্ডার নারী হোচিমিন পুরুষ থেকে রুপান্তরিত নারী হয়েছে । সে কি কখনো বাচ্চার মা হতে পারবে?

তাকে যদি কোন নরমাল পুরুষই বিয়ে করে,সেই ট্রান্সজেন্ডার হোচিমিন সন্তান পেটে ধারণ করে নারীত্বের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে পারবে? সে যা পারবে তা হলো পায়ুযোদ্ধা হয়ে সমকামিতা প্রমোট করতে। আর HIV/AIDS এবং সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ বেশি ছড়ায় সমকামীরাই।

আমেরিকা সহ দুনিয়ার বিভিন্ন দেশের বেশির ভাগ এইডস রোগী সমকামী। আর বাকি গুলো বাইসেক্সুয়ালরা ছড়ায়, আইভি ড্রাগ এবিউজাররা ছড়ায়,এইসআইভি আক্রান্ত মা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে ছড়ায় এইডস। হোচিমিনরা ট্রান্সজেন্ডার হয়ে দেশকে দিতে পারবে সমকামিতা, বিভিন্ন যৌনরোগ, আর কিছু না।

লেখকঃ  লেখক ও ডাক্তার

মহীয়সীর প্রিয় পাঠক ! সমাজ,পরিবার ও আত্মউন্নয়ন মূলক অসাধারণ লেখা ও আর্টিকেল পড়তে মহীয়সীর ফেসবুক পেজ মহীয়সী / Mohioshi এ লাইক দিয়ে ফেসবুকে মহীয়সীর সাথে সংযুক্ত থাকুন।প্রিয় লেখক! আপনার  পছন্দের লেখা পাঠাতে পারেন আমাদের ই-মেইলে-  [email protected]  ও  [email protected] ; প্রিয় লেখক ও পাঠক আমাদের ফেসবুক গ্রুপ মহীয়সী লেখক ও পাঠক ফোরাম এ যুক্ত হয়ে আমাদের সাথেই থাকুন ।

আরও পড়ুন